Ajker Patrika

অতি চিন্তা ভালো নয়

নাঈমা ইসলাম অন্তরা
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৩৮
অতি চিন্তা ভালো নয়

ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। কথাটা আমরা প্রত্যেকেই সেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। অর্থাৎ যা-ই করুন না কেন, সেটা বেশ চিন্তাভাবনা করে করতে হবে। কিন্তু অতিরিক্ত ভাবা বা একই বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করে চলা বোধ হয় ততটা ভালো ব্যাপারও নয়। জানাচ্ছেন নাঈমা ইসলাম অন্তরা

আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা ছোট ছোট বিষয় নিয়ে সারাক্ষণ ভাবতে থাকেন এবং ভেবে ভেবে তিল থেকে তাল তৈরি করে ফেলেন। ফলস্বরূপ অ্যাংজাইটি, দুশ্চিন্তা, শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন সমস্যা ধীরে ধীরে শরীরে বাসা বাঁধে। চিন্তায় জর্জরিত মানুষটি যে কখন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তা নিজেও বুঝতে পারেন না। 

অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে 
অতিরিক্ত চিন্তা যেমন আছে, তা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ও আছে। এগুলো মেনে চললে অতিরিক্ত চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যেতে পারে। 

সচেতন হোন
অনেকে হয়তো বুঝতে পারেন না যে তাঁরা অতিরিক্ত চিন্তা করেন। তাঁদের কাছে হয়তো এটাই খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়, এভাবে তাঁরা ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করছেন কি না, সেটা নিয়ে সচেতন হোন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। 

বাস্তববাদী হোন
চিন্তা করা মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা। শুধু জানা থাকতে হবে কখন, কোথায়, কতটুকু চিন্তা করা উচিত। এটাই একজন বাস্তববাদী মানুষ আর কল্পনার জগতে বাস করা মানুষের মধ্যে প্রধান পার্থক্য।

সহানুভূতিশীল হোন
অনেকেই এটা ভেবে দুশ্চিন্তা করেন যে তাঁর জীবনে সমস্যার চেয়ে বড় জটিল সমস্যা বোধ হয় আর কারও জীবনে নেই।

তাঁদের জন্য বলা, কখনো কখনো অন্য মানুষের সমস্যার কথাও মন দিয়ে শুনুন এবং নতুন মানুষের সঙ্গে মিশুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন আপনার সমস্যাটা কত ছোট। তবে অন্য কারও সমস্যার কথা শুনে আবার সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে বসে যাবেন না যেন!

নিজেকে দায়ী করবেন না 
পৃথিবীর সব দায়িত্ব আপনার ঘাড়ে নয় বা অন্য কারও জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য আপনি দায়ী নন, এই সত্য মানতে শিখুন। 

পছন্দের কাজ করুন
যে কাজগুলো করতে আপনি পছন্দ করেন, সেই কাজগুলো আবার শুরু করুন। ছবি আঁকা, বই পড়া, রান্না করা, ভ্রমণ ইত্যাদি যা আপনার পছন্দ। নিজেকে একটু মোটিভেট করে আবার পছন্দের কাজগুলো করতে শুরু করুন। দেখবেন, ওভার থিংকিং বা অতিরিক্ত চিন্তা করার জন্য যে সময়টা প্রয়োজন, সেটা আর পাচ্ছেন না। 

কৃতজ্ঞ থাকুন
অযাচিত চিন্তা থেকে বাঁচার জন্য সব সময় সবকিছুর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। কৃতজ্ঞ থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এবং মানুষকেও তাঁদের সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ দিন। আপনি যা পেয়েছেন তা নিয়ে যদি সন্তুষ্ট থাকেন, তবে দুশ্চিন্তাগুলো এমনিতেই মন থেকে চলে যাবে।

নিজের ওপর আস্থা রাখুন
নিজের ওপর অল্পতেই আস্থা হারাবেন না। তাতে চিন্তা আরও বাড়বে; বরং নিজেকে তৈরি করুন ধৈর্য নিয়ে। 

রুটিন মেনে চলুন
জীবনে একটা রুটিন মেনে চলুন। সময়ের কাজ সময়ে করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন, না পারলে সকালে বা বিকেলে হাঁটতে যান। বাড়ির আশপাশে যদি পার্ক থাকে তাহলে সেখানে হাঁটুন; না থাকলে ছাদে হাঁটুন। 

ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়
আমাদের কাজ হলো পরিকল্পনামতো বর্তমানকে গুছিয়ে নেওয়া। একে পুরোপুরিভাবে কাজে লাগানো আর ভবিষ্যতের যেকোনো ফলাফলের জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখা। এটাই দুশ্চিন্তা না তৈরি করে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ।

পারফেক্ট হবে না
সব কাজ যদি হুবহু যা ভেবেছেন সেভাবে পেতে হয়, তবে আপনি কখনো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন না। ছাড় দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে না পারলে কিছুদিনের মাথায় আপনি মনের শান্তি হারিয়ে ফেলবেন। তাই পারফেকশনিস্ট হতে যাবেন না। 

ঘুম
যত চাপই থাকুক, চেষ্টা করতে হবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঘুম যাতে নিশ্চিত করা যায়। তাহলেই আর চিন্তাগুলো মাথার ভেতর প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুরপাক খাবে না।

লেখক: সাইকো-সোশ্যাল কাউন্সিলর। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত