রজত কান্তি রায়, ঢাকা
গল্পটা আফগানিস্তানের। শখানেক বছর আগে আফগানিস্তানে আমানউল্লাহ খানকে হটিয়ে দিয়ে হাবিব উল্লাহ খান ওরফে বাচ্চা খান কাবুলের সিংহাসন দখল করে নেন। রাজপ্রাসাদ দখল করে তিনি নিজ গ্রাম থেকে স্ত্রীকে রাজধানীতে আনতে পাঠালেন মহামূল্যবান রোলস রয়েস গাড়ি। গ্রামের বাড়িতে বাচ্চা খানের স্ত্রী তখন তাঁর সন্তানদের যত্ন নিচ্ছিলেন। তিনি রোলস রয়েসের চালকের দিকে তাকিয়ে শীতল কণ্ঠে নাকি বলেছিলেন, ‘তোমার মনিবকে গিয়ে বোলো, নিজে এসে আমাকে খচ্চরে বসিয়ে যেন নিয়ে যায়।’ সৈয়দ মুজতবা আলী আমাদের জানিয়েছেন, দিগ্বিজয় করে রাজপুত্র সিদ্ধার্থ যখন কপিলাবস্তু ফিরে এসেছিলেন, তখন তাঁর স্ত্রী যশোধারাও নাকি অভিমান করেছিলেন!
শিল্পী যত সহজেই গেয়ে ফেলুন না কেন, ‘সুইটি, তুমি আর কেঁদো না/ অভিমান কোরো না…’, বিষয়টা তত সহজ নয়। অভিমানের জায়গায় বাচ্চা খানের স্ত্রী হোন আর রাজপুত্র সিদ্ধার্থ ওরফে গৌতমের স্ত্রীই হোন, কিংবা আমার মতো তুচ্ছাতিতুচ্ছ ছা-পোষা মানুষের স্ত্রীই হোন, গল্পটা একই।
অভিধানে অভিমান
অভিব্যক্তি হিসেবে ‘অভিমান’কে যে নারীদের প্রতি ঠেলে দিলাম এর বড় কারণ, শব্দটির সঙ্গে নারীদের যোগাযোগ বেশি। পুরুষদের যে নেই, তা নয়। কোনো কোনো পুরুষের আবার সেটা নারীদের চেয়েও বেশি আছে। কিন্তু গড়পড়তা পুরুষের কাছে অভিমান একটা ‘মেয়েলি’ ব্যাপার। অথচ অভিধান বলছে, ‘অভিমান’ শব্দটি পুরুষবাচক। এর অর্থ, অহংকার, গর্ব, আত্মসম্মান, মিথ্যা গর্ব (ইত্যাদি)। আবার ‘অভিমানী’ শব্দটি স্ত্রীবাচক। অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, আমরা চলতি অর্থে যেভাবে অভিমান শব্দটি ব্যবহার করি, সেটি অভিমানী শব্দের পরিপূরক (বঙ্গীয় শব্দকোষ)।
অভিমানের জীবনে বাস্তবতা
করোনা-পরবর্তী সময়টা যখন সাধারণ মানুষের জন্য বেশ খানিকটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন কে কোথায় অভিমান করে বসে থাকছেন, তা দেখার সময় কারও নেই। এটি বাস্তবতা। স্থবির জীবন আর টালমাটাল জীবিকা সামাল দেওয়ার পর মানুষ বসে যে একদণ্ড ভাববে, কার ওপর অভিমান করছি, কেন করছি, তার ফুরসত মিলছে না একেবারে। মনের কোণে বাষ্প জমা হওয়া কিন্তু থেমে নেই। খেয়াল করেছেন কি একবারও? একটু খেয়াল করুন, আপনার প্রিয় মানুষটির, আপনার পরিবারের সদস্যদের কিংবা আপনার সন্তানদের মনে কতটুকু বাষ্প জমা হয়েছে। সম্ভব হলে সে বাষ্প দূর করার চেষ্টা করুন।
গবেষকদের মতে, ৫০ লাখ শ্রমঘণ্টা প্রতিদিন নষ্ট হয় এ শহরে। এই বিশাল অপচয়ের মধ্যে আপনার সময়টাও রয়েছে। রাজধানী শহরে জীবনযাত্রার মান যা-ই হোক না কেন, ব্যয় লাগাম ছাড়া। এমনও শোনা যায়, ঢাকা শহর বিশ্বের ব্যয়বহুল শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। কাজেই এ শহরে থাকলে ইঁদুর-দৌড়ে শামিল না হলে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। নাগরিক বিনোদনের অভাব, এক-ঘেয়ে জীবন, না চাইলেও সময়ের অপচয়–এমন হাজারো নেতিবাচকতার মধ্য দিয়ে জীবন চালাতে হয় এখানে। ফলে দিন শেষে ভর করে বিষণ্নতা। মানসিক চাপ অস্থির করে তোলে সবাইকে। তার ওপর চলছে করোনা আর ডেঙ্গুর প্রকোপ। কখন কী হয়, এ ভাবনা তাড়া করে ফেরে অহর্নিশ। তারপর গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো আছে জীবিকার টান। সেখানেও ‘কখন যায় কখন যায়’ একটা অবস্থা। এ অবস্থা তরুণ-তরুণী বা যুবক-যুবতীদের ইঁদুর-দৌড়ে শুধু নয়, রীতিমতো ঘোড়দৌড়ে নামিয়ে দিয়েছে। তার ওপর আছে সবকিছুতে সেরা হওয়ার পারিবারিক ও সামাজিক উসকানি।
স্বস্তি নাকি রেসের ঘোড়া
প্রশ্ন একটাই। স্বস্তির জীবন চান নাকি দৌড়-ক্লান্ত হতাশ জীবন চান? রেসের ঘোড়া হতে চাইলে কিছু বলার নেই। তবে স্বস্তির জীবন চাইলে সেরা হওয়ার দৌড়ে লাগাম টানুন। সব জিতে যাওয়ার বাসনায় লাগাম টানুন। নইলে জিতে যাবে সেনাপতি। হেরে যাবেন আপনি। অভিমান করে দূরে চলে যাবে কাছের মানুষেরা। গল্পটি নিশ্চয়ই জানেন। তারপরও স্মরণ করিয়ে দিই।
ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের প্রেম ছিল জোসেফিন নামের এক তরুণীর সঙ্গে। ভালোই চলছিল সবকিছু। কিন্তু নেপোলিয়ন ধীরে ধীরে যুদ্ধবাজ হয়ে উঠলেন। যুদ্ধে জেতা ছাড়া নিজের জন্য, প্রেম বা প্রেমিকার জন্য তাঁর হাতে সময় ছিল না। তারপরও নেপোলিয়ন প্রেমিকার কাছে চিঠি লিখতেন তাঁর বিজয়ের গল্প জানানোর জন্য। প্রথম প্রথম নেপোলিয়নের চিঠি পড়লেও ক্রমেই জোসেফিন বিরক্ত হতে থাকলেন। ধীরে ধীরে চিঠি না পড়ে ফেলে দিতে শুরু করলেন। যুদ্ধবাজ বিজয়ী বীর নেপোলিয়নের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও রুচি দুটোই উঠে গেছে তত দিনে। পৃথিবীর অমোঘ সূত্র, প্রকৃতিতে কোথাও শূন্য রাখে না। হৃদয়ে তো নয়ই। সে সূত্রেই জোসেফিনের মনে জায়গা করে নিলেন নেপোলিয়নেরই এক সেনাপতি। বিজয়ী বীর নেপোলিয়ন হেরে গেলেন মনের যুদ্ধে, প্রেমের যুদ্ধে।
গল্পটা আফগানিস্তানের। শখানেক বছর আগে আফগানিস্তানে আমানউল্লাহ খানকে হটিয়ে দিয়ে হাবিব উল্লাহ খান ওরফে বাচ্চা খান কাবুলের সিংহাসন দখল করে নেন। রাজপ্রাসাদ দখল করে তিনি নিজ গ্রাম থেকে স্ত্রীকে রাজধানীতে আনতে পাঠালেন মহামূল্যবান রোলস রয়েস গাড়ি। গ্রামের বাড়িতে বাচ্চা খানের স্ত্রী তখন তাঁর সন্তানদের যত্ন নিচ্ছিলেন। তিনি রোলস রয়েসের চালকের দিকে তাকিয়ে শীতল কণ্ঠে নাকি বলেছিলেন, ‘তোমার মনিবকে গিয়ে বোলো, নিজে এসে আমাকে খচ্চরে বসিয়ে যেন নিয়ে যায়।’ সৈয়দ মুজতবা আলী আমাদের জানিয়েছেন, দিগ্বিজয় করে রাজপুত্র সিদ্ধার্থ যখন কপিলাবস্তু ফিরে এসেছিলেন, তখন তাঁর স্ত্রী যশোধারাও নাকি অভিমান করেছিলেন!
শিল্পী যত সহজেই গেয়ে ফেলুন না কেন, ‘সুইটি, তুমি আর কেঁদো না/ অভিমান কোরো না…’, বিষয়টা তত সহজ নয়। অভিমানের জায়গায় বাচ্চা খানের স্ত্রী হোন আর রাজপুত্র সিদ্ধার্থ ওরফে গৌতমের স্ত্রীই হোন, কিংবা আমার মতো তুচ্ছাতিতুচ্ছ ছা-পোষা মানুষের স্ত্রীই হোন, গল্পটা একই।
অভিধানে অভিমান
অভিব্যক্তি হিসেবে ‘অভিমান’কে যে নারীদের প্রতি ঠেলে দিলাম এর বড় কারণ, শব্দটির সঙ্গে নারীদের যোগাযোগ বেশি। পুরুষদের যে নেই, তা নয়। কোনো কোনো পুরুষের আবার সেটা নারীদের চেয়েও বেশি আছে। কিন্তু গড়পড়তা পুরুষের কাছে অভিমান একটা ‘মেয়েলি’ ব্যাপার। অথচ অভিধান বলছে, ‘অভিমান’ শব্দটি পুরুষবাচক। এর অর্থ, অহংকার, গর্ব, আত্মসম্মান, মিথ্যা গর্ব (ইত্যাদি)। আবার ‘অভিমানী’ শব্দটি স্ত্রীবাচক। অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, আমরা চলতি অর্থে যেভাবে অভিমান শব্দটি ব্যবহার করি, সেটি অভিমানী শব্দের পরিপূরক (বঙ্গীয় শব্দকোষ)।
অভিমানের জীবনে বাস্তবতা
করোনা-পরবর্তী সময়টা যখন সাধারণ মানুষের জন্য বেশ খানিকটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন কে কোথায় অভিমান করে বসে থাকছেন, তা দেখার সময় কারও নেই। এটি বাস্তবতা। স্থবির জীবন আর টালমাটাল জীবিকা সামাল দেওয়ার পর মানুষ বসে যে একদণ্ড ভাববে, কার ওপর অভিমান করছি, কেন করছি, তার ফুরসত মিলছে না একেবারে। মনের কোণে বাষ্প জমা হওয়া কিন্তু থেমে নেই। খেয়াল করেছেন কি একবারও? একটু খেয়াল করুন, আপনার প্রিয় মানুষটির, আপনার পরিবারের সদস্যদের কিংবা আপনার সন্তানদের মনে কতটুকু বাষ্প জমা হয়েছে। সম্ভব হলে সে বাষ্প দূর করার চেষ্টা করুন।
গবেষকদের মতে, ৫০ লাখ শ্রমঘণ্টা প্রতিদিন নষ্ট হয় এ শহরে। এই বিশাল অপচয়ের মধ্যে আপনার সময়টাও রয়েছে। রাজধানী শহরে জীবনযাত্রার মান যা-ই হোক না কেন, ব্যয় লাগাম ছাড়া। এমনও শোনা যায়, ঢাকা শহর বিশ্বের ব্যয়বহুল শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। কাজেই এ শহরে থাকলে ইঁদুর-দৌড়ে শামিল না হলে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। নাগরিক বিনোদনের অভাব, এক-ঘেয়ে জীবন, না চাইলেও সময়ের অপচয়–এমন হাজারো নেতিবাচকতার মধ্য দিয়ে জীবন চালাতে হয় এখানে। ফলে দিন শেষে ভর করে বিষণ্নতা। মানসিক চাপ অস্থির করে তোলে সবাইকে। তার ওপর চলছে করোনা আর ডেঙ্গুর প্রকোপ। কখন কী হয়, এ ভাবনা তাড়া করে ফেরে অহর্নিশ। তারপর গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো আছে জীবিকার টান। সেখানেও ‘কখন যায় কখন যায়’ একটা অবস্থা। এ অবস্থা তরুণ-তরুণী বা যুবক-যুবতীদের ইঁদুর-দৌড়ে শুধু নয়, রীতিমতো ঘোড়দৌড়ে নামিয়ে দিয়েছে। তার ওপর আছে সবকিছুতে সেরা হওয়ার পারিবারিক ও সামাজিক উসকানি।
স্বস্তি নাকি রেসের ঘোড়া
প্রশ্ন একটাই। স্বস্তির জীবন চান নাকি দৌড়-ক্লান্ত হতাশ জীবন চান? রেসের ঘোড়া হতে চাইলে কিছু বলার নেই। তবে স্বস্তির জীবন চাইলে সেরা হওয়ার দৌড়ে লাগাম টানুন। সব জিতে যাওয়ার বাসনায় লাগাম টানুন। নইলে জিতে যাবে সেনাপতি। হেরে যাবেন আপনি। অভিমান করে দূরে চলে যাবে কাছের মানুষেরা। গল্পটি নিশ্চয়ই জানেন। তারপরও স্মরণ করিয়ে দিই।
ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়নের প্রেম ছিল জোসেফিন নামের এক তরুণীর সঙ্গে। ভালোই চলছিল সবকিছু। কিন্তু নেপোলিয়ন ধীরে ধীরে যুদ্ধবাজ হয়ে উঠলেন। যুদ্ধে জেতা ছাড়া নিজের জন্য, প্রেম বা প্রেমিকার জন্য তাঁর হাতে সময় ছিল না। তারপরও নেপোলিয়ন প্রেমিকার কাছে চিঠি লিখতেন তাঁর বিজয়ের গল্প জানানোর জন্য। প্রথম প্রথম নেপোলিয়নের চিঠি পড়লেও ক্রমেই জোসেফিন বিরক্ত হতে থাকলেন। ধীরে ধীরে চিঠি না পড়ে ফেলে দিতে শুরু করলেন। যুদ্ধবাজ বিজয়ী বীর নেপোলিয়নের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও রুচি দুটোই উঠে গেছে তত দিনে। পৃথিবীর অমোঘ সূত্র, প্রকৃতিতে কোথাও শূন্য রাখে না। হৃদয়ে তো নয়ই। সে সূত্রেই জোসেফিনের মনে জায়গা করে নিলেন নেপোলিয়নেরই এক সেনাপতি। বিজয়ী বীর নেপোলিয়ন হেরে গেলেন মনের যুদ্ধে, প্রেমের যুদ্ধে।
নারীদের দুটি সন্তান থাকলে তা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ভালো হতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমন চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে।
১ দিন আগেশাহিদ কাপুর ও কারিনা কাপুর খানের পুনর্মিলন ইন্টারনেট দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে। আইফা অ্যাওয়ার্ডসের মঞ্চে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপ দেখে ভক্তরা অভিভূত, কেউ কেউ তো ভাবতেই শুরু করেছেন— যদি তারা আলাদা না হতেন? প্রাক্তনদের সঙ্গে দেখা হওয়া স্বাভাবিক বিষয়, বিশেষত যদি তারা জীবনের কোনো পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা র
২ দিন আগেসম্প্রতি বিয়ে করেছেন প্রাজক্তা। নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে তাঁর বিয়ের ছবি। এই তারকার বিয়ের কোনো ছবিতেই প্রিয় বন্ধু রোহিত সারাফ নেই কেন, তা নিয়ে নেটিজেনরা ভাবছেন। পাশাপাশি এই সুযোগে প্রাজক্তার ইনস্টা প্রোফাইলও স্ক্রল করছেন অনেকে।
২ দিন আগেপাহাড়ের শীর্ষে দাঁড়িয়ে বা সাপ ও মাকড়সার মতো প্রাণীর কাছাকাছি থাকলে ভয় পায় অনেকেই। তবে কিছু মানুষের জন্য, এই ভয়গুলোর প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া বা আতঙ্ক আসলে বিপদের তুলনায় অনেক বেশি হয়ে যায়। এমন ক্ষেত্রে, এই ব্যক্তিদের ফোবিয়া বা অহেতুক ভয় দেখা যেতে পারে।
২ দিন আগে