দিতি আহমেদ
‘বন্ধুত্ব ও ভালবাসায় অনেক তফাৎ আছে, কিন্তু ঝট্ করিয়া সে তফাৎ ধরা যায় না। বন্ধুত্ব আটপৌরে, ভালবাসা পোশাকী। বন্ধুত্বের আটপৌরে কাপড়ের দুই-এক জায়গায় ছেঁড়া থাকিলেও চলে, ঈষৎ ময়লা হইলেও হানি নাই, হাঁটুর নীচে না পৌঁছিলেও পরিতে বারণ নাই। গায়ে দিয়া আরাম পাইলেই হইল।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বন্ধুত্ব ও ভালোবাসাকে এভাবেই দেখেছেন। বন্ধুত্বের এই যে ধারণা, তা তিনি নিজের জীবনাচারেই দেখিয়েছেন। সাধারণত, নারী–পুরুষের বন্ধুত্ব নিয়ে নানা গুঞ্জন হওয়াটাই এই দেশে দস্তুর। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এই গুঞ্জনের কোনো তোয়াক্কা করেননি আজ থেকে শত বছর আগে বসেও। পরিবার বা পরিবারের বাইরে বহু নারীর প্রবেশাধিকার ছিল কবির জীবনে। বন্ধুত্ব ছিল। সে বন্ধুত্বকে তিনি স্থান দিয়েছিলেন অনেক ওপরে। এর মধ্যে কোনো কোনো বন্ধুত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্তর গুঞ্জন। কিন্তু কবিকে তো আর এসবে কান পাতলে হয় না। বরং কবি সেই ‘সঙ্গীবিহীন অন্ধকারে’ একা বসে গাইতে থাকা পাখিটির গানেই কান পেতেছেন বারবার। বন্ধুত্ব পেতেছেন। কারও সঙ্গে এই মিতালি হয়েছে পত্রযোগে, কারও সঙ্গে সাক্ষাতে। এ ক্ষেত্রে বয়সের ব্যবধানও কোনো বাধা হতে পারেনি। বিশ্বকবির বন্ধু তালিকায় থাকা নারীদের মধ্যে রয়েছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
আন্না তড়খড়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন মুম্বাইতে ছিলেন। মুম্বাইতে থাকার সময় প্রথম আন্না তড়খড় নামের এক মারাঠি মেয়ের প্রেমে পড়েন। আন্না ছিলেন বিদুষী, বুদ্ধিমতী ও রূপলাবণ্যে ভরপুর তরুণী। ডা. আতদারাম পাণ্ডুরংয়ের মেয়ে আন্না তড়খড়ের সঙ্গে কবির যোগাযোগ হয়েছিল পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে। এই বন্ধুত্ব খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও বেশ তাৎপর্যময় ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনে। কবি তখন সবেমাত্র কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে। আন্না কবির কাছ থেকে ভালোবেসে একটি ডাক নাম চেয়েছিলেন। কবি সে নাম দিয়েছিলেন ‘নলিনী’। নামটি যেন শুধু আন্নার জন্যই তুলে এনেছিলেন কবি। রবীন্দ্রনাথের ‘নলিনী’ নামটি খুবই প্রিয় ছিল। কবির প্রথম জীবনে রচিত বহু কাব্য, কবিতায়, নাটকে এই নাম এসেছে বহুভাবে। বহু বছর পরও অতুলপ্রসাদ সেন ও দিলীপকুমার রায়ের সঙ্গে একান্ত আলাপে নলিনীর কথা স্মরণ করেন কবি। বিচ্ছেদের অনেক দিন পরও কবির সঙ্গে তাঁর পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল।
কাদম্বরী দেবী
কাদম্বরী দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের বৌঠান। কাদম্বরী ও রবি ছিলেন সমবয়সী। কিশোর বয়সে রবীর সঙ্গে বৌঠানের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কাদম্বরী দেবীকে বলা হয় রবীন্দ্রনাথের স্থপতি। কবির অনেক সাহিত্য ও কবিতা সৃষ্টি হয়েছে এই নারীকে ঘিরে। কিশোরী বৌদির সঙ্গে বালক রবির সম্পর্ক ছিল শৌখিন ও খুনসুটির। দুজনের মধ্যে বোঝাপড়ার কারণেই এই সুসম্পর্ক দাঁড়িয়েছিল। ‘চারুলতা’ আর ‘নষ্টনীড়ে’ সেই ছাপই স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়।
ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো
আর্জেন্টিনার প্লাতা নদী তীরের ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে বেশ নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথের। ওকাম্পোকে স্বরচিত কবিতা পড়ে শোনাতেন স্বয়ং কবি। নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথের ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের অনুবাদ পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন ওকাম্পো। রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব ভ্রমণের একপর্যায়ে আর্জেন্টিনা পৌঁছান। সেখানে পৌঁছেই বিপুল সংবর্ধনা পান তিনি। প্রিয় কবিকে কাছে পেয়ে ওকাম্পো উদ্বেলিত হয়েছিল। ক্রমেই কবির কাছে তিনি ভালো লাগার যে আবেদন প্রকাশ করেন, তাতে দুজনের মধ্যে বেশ গোছানো একটি সম্পর্ক তৈরি হয়।
হেমন্তবালা
হেমন্তবালা ছিলেন রবীন্দ্ররচনার গুণমুগ্ধ পাঠক। দুজনের মধ্যে আলাপ হতো পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে। হেমন্তবালার সঙ্গে কবির একাধিক পত্র বিনিময় হয়েছিল। নানা অজুহাতে, পারিবারিক বাধা সত্ত্বেও এমনকি রাতের বেলায়ও ল্যান্সডাউন রোডের বাড়ি থেকে জোড়াসাঁকোর বাড়িতে হঠাৎ গিয়ে হাজির হতেন হেমন্তবালা।
ইন্দিরা
স্ত্রী মৃণালিনীর সমবয়সী ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরাকেও একটু ভিন্নভাবেই রবীন্দ্রনাথের জীবনে পাওয়া যায়। ইন্দিরা বয়সে ছোট হলেও কবির সঙ্গে ছিল তাঁর আত্মিক সম্পর্ক। ইন্দিরাকে লেখা চিঠিগুলোই তার প্রমাণ। সংগীতচর্চায় আগ্রহ ও সাহিত্য অনুরাগের কারণে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ইন্দিরার। ইন্দিরা কবিকে ‘রবিকা’ সম্বোধন করতেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ইন্দিরার পত্র বিনিময় নিয়েও ছড়িয়েছে অনেক কথা। রবীন্দ্রনাথ ইন্দিরার চিঠির লম্বা লম্বা উত্তর লিখতেন। অবস্থাটা এমন যে, অন্য সব কাজ ফেলেও ইন্দিরাকে আগে চিঠি লেখা চাই তাঁর।
‘বন্ধুত্ব ও ভালবাসায় অনেক তফাৎ আছে, কিন্তু ঝট্ করিয়া সে তফাৎ ধরা যায় না। বন্ধুত্ব আটপৌরে, ভালবাসা পোশাকী। বন্ধুত্বের আটপৌরে কাপড়ের দুই-এক জায়গায় ছেঁড়া থাকিলেও চলে, ঈষৎ ময়লা হইলেও হানি নাই, হাঁটুর নীচে না পৌঁছিলেও পরিতে বারণ নাই। গায়ে দিয়া আরাম পাইলেই হইল।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বন্ধুত্ব ও ভালোবাসাকে এভাবেই দেখেছেন। বন্ধুত্বের এই যে ধারণা, তা তিনি নিজের জীবনাচারেই দেখিয়েছেন। সাধারণত, নারী–পুরুষের বন্ধুত্ব নিয়ে নানা গুঞ্জন হওয়াটাই এই দেশে দস্তুর। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এই গুঞ্জনের কোনো তোয়াক্কা করেননি আজ থেকে শত বছর আগে বসেও। পরিবার বা পরিবারের বাইরে বহু নারীর প্রবেশাধিকার ছিল কবির জীবনে। বন্ধুত্ব ছিল। সে বন্ধুত্বকে তিনি স্থান দিয়েছিলেন অনেক ওপরে। এর মধ্যে কোনো কোনো বন্ধুত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্তর গুঞ্জন। কিন্তু কবিকে তো আর এসবে কান পাতলে হয় না। বরং কবি সেই ‘সঙ্গীবিহীন অন্ধকারে’ একা বসে গাইতে থাকা পাখিটির গানেই কান পেতেছেন বারবার। বন্ধুত্ব পেতেছেন। কারও সঙ্গে এই মিতালি হয়েছে পত্রযোগে, কারও সঙ্গে সাক্ষাতে। এ ক্ষেত্রে বয়সের ব্যবধানও কোনো বাধা হতে পারেনি। বিশ্বকবির বন্ধু তালিকায় থাকা নারীদের মধ্যে রয়েছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
আন্না তড়খড়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন মুম্বাইতে ছিলেন। মুম্বাইতে থাকার সময় প্রথম আন্না তড়খড় নামের এক মারাঠি মেয়ের প্রেমে পড়েন। আন্না ছিলেন বিদুষী, বুদ্ধিমতী ও রূপলাবণ্যে ভরপুর তরুণী। ডা. আতদারাম পাণ্ডুরংয়ের মেয়ে আন্না তড়খড়ের সঙ্গে কবির যোগাযোগ হয়েছিল পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে। এই বন্ধুত্ব খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও বেশ তাৎপর্যময় ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনে। কবি তখন সবেমাত্র কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে। আন্না কবির কাছ থেকে ভালোবেসে একটি ডাক নাম চেয়েছিলেন। কবি সে নাম দিয়েছিলেন ‘নলিনী’। নামটি যেন শুধু আন্নার জন্যই তুলে এনেছিলেন কবি। রবীন্দ্রনাথের ‘নলিনী’ নামটি খুবই প্রিয় ছিল। কবির প্রথম জীবনে রচিত বহু কাব্য, কবিতায়, নাটকে এই নাম এসেছে বহুভাবে। বহু বছর পরও অতুলপ্রসাদ সেন ও দিলীপকুমার রায়ের সঙ্গে একান্ত আলাপে নলিনীর কথা স্মরণ করেন কবি। বিচ্ছেদের অনেক দিন পরও কবির সঙ্গে তাঁর পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল।
কাদম্বরী দেবী
কাদম্বরী দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের বৌঠান। কাদম্বরী ও রবি ছিলেন সমবয়সী। কিশোর বয়সে রবীর সঙ্গে বৌঠানের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কাদম্বরী দেবীকে বলা হয় রবীন্দ্রনাথের স্থপতি। কবির অনেক সাহিত্য ও কবিতা সৃষ্টি হয়েছে এই নারীকে ঘিরে। কিশোরী বৌদির সঙ্গে বালক রবির সম্পর্ক ছিল শৌখিন ও খুনসুটির। দুজনের মধ্যে বোঝাপড়ার কারণেই এই সুসম্পর্ক দাঁড়িয়েছিল। ‘চারুলতা’ আর ‘নষ্টনীড়ে’ সেই ছাপই স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়।
ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো
আর্জেন্টিনার প্লাতা নদী তীরের ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে বেশ নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে রবীন্দ্রনাথের। ওকাম্পোকে স্বরচিত কবিতা পড়ে শোনাতেন স্বয়ং কবি। নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথের ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের অনুবাদ পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন ওকাম্পো। রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব ভ্রমণের একপর্যায়ে আর্জেন্টিনা পৌঁছান। সেখানে পৌঁছেই বিপুল সংবর্ধনা পান তিনি। প্রিয় কবিকে কাছে পেয়ে ওকাম্পো উদ্বেলিত হয়েছিল। ক্রমেই কবির কাছে তিনি ভালো লাগার যে আবেদন প্রকাশ করেন, তাতে দুজনের মধ্যে বেশ গোছানো একটি সম্পর্ক তৈরি হয়।
হেমন্তবালা
হেমন্তবালা ছিলেন রবীন্দ্ররচনার গুণমুগ্ধ পাঠক। দুজনের মধ্যে আলাপ হতো পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে। হেমন্তবালার সঙ্গে কবির একাধিক পত্র বিনিময় হয়েছিল। নানা অজুহাতে, পারিবারিক বাধা সত্ত্বেও এমনকি রাতের বেলায়ও ল্যান্সডাউন রোডের বাড়ি থেকে জোড়াসাঁকোর বাড়িতে হঠাৎ গিয়ে হাজির হতেন হেমন্তবালা।
ইন্দিরা
স্ত্রী মৃণালিনীর সমবয়সী ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরাকেও একটু ভিন্নভাবেই রবীন্দ্রনাথের জীবনে পাওয়া যায়। ইন্দিরা বয়সে ছোট হলেও কবির সঙ্গে ছিল তাঁর আত্মিক সম্পর্ক। ইন্দিরাকে লেখা চিঠিগুলোই তার প্রমাণ। সংগীতচর্চায় আগ্রহ ও সাহিত্য অনুরাগের কারণে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ইন্দিরার। ইন্দিরা কবিকে ‘রবিকা’ সম্বোধন করতেন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ইন্দিরার পত্র বিনিময় নিয়েও ছড়িয়েছে অনেক কথা। রবীন্দ্রনাথ ইন্দিরার চিঠির লম্বা লম্বা উত্তর লিখতেন। অবস্থাটা এমন যে, অন্য সব কাজ ফেলেও ইন্দিরাকে আগে চিঠি লেখা চাই তাঁর।
চায়ের কথা শুনলেই মন কেমন প্রশান্তিতে ছেয়ে যায়, তাই না? তবে চায়ের আছে অনেক ধরন— গ্রিন টি, লাল চা, দুধ চা, লেবু চা, মশলা চা আরও কত কি! এর মধ্যে আবার অনেকে পছন্দ করেন ধোঁয়া ওঠা গরম চা, অনেকে গরম চা ঠান্ডা করে খেতে পছন্দ করেন আবার কেউ ভালোবাসেন বরফ দেওয়া চা। এমন হরেক রকমের পছন্দের কথা বলতে গিয়ে এবার
৮ ঘণ্টা আগেঅনেকেই আছেন যাদের বারবার ক্ষুধা পায়। সারা দিনই কিছু না কিছু খেতে ইচ্ছা হয়। প্রাথমিকভাবে এতে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এমন অবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়ার সহজ সমাধান হতে পারে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। প্রোটিন শরীরকে দীর্ঘ সময় পরিপূর্ণ রাখে, ক্ষুধা কমায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ...
৮ ঘণ্টা আগেসৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেই পরিবর্তনের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ নিদর্শন হচ্ছে কিং আবদুল্লাহ ফাইন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট (কেএএফডি)—একটি উচ্চাভিলাষী মেগা প্রকল্প, যা ব্যবসা, প্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব নগরায়ণ ও আধুনিক জীবনযাত্রার এক অনন্য মিশ্রণ।
১ দিন আগেঘড়ি কেবল সময় দেখার যন্ত্র নয়। বহু আগেই ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ঘড়ির ভিন্ন রূপে ফিরে আসা নিয়ে ‘ওয়াচেস অ্যান্ড ওয়ান্ডার্স’ নামের বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে জেনেভায়। যেখানে নামীদামি সব ব্র্যান্ড নিজেদের ঘড়ির পসরা সাজিয়ে বসেছে।
২ দিন আগে