Ajker Patrika

জেনারেশন জির সৌন্দর্যচিন্তা

রজত কান্তি রায়, ঢাকা
জেনারেশন জির সৌন্দর্যচিন্তা

এখন সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু জেনারেশন জি। এ এক টগবগে প্রজন্ম। এদের নিয়ে কিছু নেতিবাচক আলোচনা থাকলেও ইতিবাচকতার শেষ নেই; বিশেষ করে তাদের স্বাধীনচেতা মনোভাব আমাদের চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। সবকিছুর মতো সৌন্দর্য বিষয়ে চিন্তার ক্ষেত্রেও এ প্রজন্মের রয়েছে নির্দিষ্ট ভাবনা।

ভিক্রিয়েটিভস এজেন্সি নামের একটি বিখ্যাত ওয়েবসাইট সৌন্দর্যচিন্তার ক্ষেত্রে জেনারেশন জির বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছে। এ প্রজন্ম, সৌন্দর্য জগতের বুদ্ধিমান ক্রেতা: এরা বিজ্ঞাপনকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে না।

মূল্যবোধচালিত ভোক্তা: সৌন্দর্যপণ্য কেনার সময় এদের কাছে সেই ব্র্যান্ডগুলো গুরুত্ব পায়, যেগুলোর মূল্যবোধে স্থায়িত্ব ও বৈচিত্র্য আছে। 

প্রগাঢ় সৌন্দর্যবোধের অধিকারী: এ প্রজন্মের কাছে সৌন্দর্য কেবল চেহারায় ধরা দেয় না। সৌন্দর্যকে মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত করে: আর্থিক সংকট, মহামারি, যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক সামাজিক তুলনা ইত্যাদি কারণে সৌন্দর্যকে তারা মানসিক স্বাস্থ্যের অংশ মনে করে।ফাইল ছবি আত্মপ্রকাশের মাধ্যম হিসেবে সৌন্দর্যকে গ্রহণ করে: পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন রঙের প্রসাধনী ব্যবহার করে নিজেকে প্রকাশ করে। 

ক্রয়ক্ষমতাকে অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসেবে প্রাধান্য দেয়: বেড়ে ওঠার সময় পৃথিবীব্যাপী মহামারি এবং অভূতপূর্ব মুদ্রাস্ফীতি দেখেছে বলে তারা উল্লেখযোগ্যভাবে মিতব্যয়ী। 

আর এসব কারণে পণ্য কেনায় বিশ্বস্ততার ক্ষেত্রে জেনারেশন জির চরিত্র ‘কমপ্লিকেটেড’। মূলত জেনারেশন জি সোশ্যাল মিডিয়া বুমের অংশ। এরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয় হয়ে ওঠা দেখেছে চোখের সামনে। ফলে এসব প্ল্যাটফর্মের আলোচনা ও পরামর্শের এক বিশেষ মূল্য আছে তাদের জীবনে।ছবি: পেক্সেলসএরা স্পষ্টবাদী এবং সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম একটি প্রজন্ম। কারণ, এরা আর্থিকভাবে স্বাধীন। এ প্রজন্মের কাছে নিজের স্বাধীনতার গুরুত্ব অনেকখানি। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এরা তথ্যপ্রবাহের মধ্যে থাকে বলে আগের অনেক প্রজন্মের তুলনায় নতুন বিষয় গ্রহণ করার দিকে এগিয়ে আছে। এ জন্য আমরা দেখেছি, এ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা চুলের রঙে নতুনত্ব নিয়ে এসেছে। তারা চাইলেই চুলে গোলাপি বা সাদা কিংবা খানিক সবুজ রং করে ফেলতে পারে। অথবা ঠোঁট রাঙাতে ব্যবহার করতে পারে গাঢ় কালো বা নীল রঙের লিপস্টিক। চাইলেই তারা নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় লিপস্টিকের রং ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিরীক্ষা করতে পারে বিভিন্ন রঙের ন্যুড বা প্রাকৃতিক রঙের লিপস্টিক নিয়ে। যেটা হয়তো তার আগের প্রজন্মের মানুষ কল্পনাও করতে পারে না।

সম্ভবত এ প্রজন্মের সৌন্দর্যবোধের ধারণায় বিপ্লব ঘটে গেছে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের ক্ষেত্রে। সে জন্য এখন ভেষজ উপাদানে তৈরি শ্যাম্পু থেকে ত্বক বা চুলের যত্নে ব্যবহৃত পণ্যের বাজার বেশ রমরমা। এ ছাড়া ঘরোয়া উপাদানে সুলভে ত্বক বা চুলচর্চাকেও বেশ গুরুত্ব দেন এ প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা। এমন নয় যে এগুলো আগে ব্যবহার করা হতো না। কিন্তু এখন পরিমাণে বেশি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এরা কাজে লাগিয়েছে ইউটিউব বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্টকে। এখানে এ প্রজন্ম এক দারুণ ইকোসিস্টেম তৈরি করেছে। সেটাকে বুদ্ধিদীপ্ত হিসেবে চিহ্নিত করা যায় সহজে। কনটেন্টকে এরা জীবনযাপনের অংশ করে নিয়েছে।ছবি: পেক্সেলসজেনারেশন জির সৌন্দর্যচেতনার যে অংশকে আলাদাভাবে উল্লেখ করতেই হবে, সেটি হলো সৌন্দর্যচেতনার ক্ষেত্রে এ প্রজন্ম মানসিক সুস্থতার ওপর বেশ জোর দেয়। তারা মনে করে, শুধু পণ্যের ব্যবহার নয়, মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সৌন্দর্যচর্চারই অংশ। তাই এ প্রজন্মের মানুষদের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতার চিন্তা বেশ প্রবল। সেটা দেখা যায় পাড়া-মহল্লায় তৈরি হওয়া জিমগুলোর দিকে তাকালে। তাদের জন্য তৈরি হয়েছে ফিটনেস ওয়্যার। সেগুলো এখন একই সঙ্গে ফ্যাশন ও সৌন্দর্যচেতনার প্রতীক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শ্বশুরকে জামাতার ফোন: ‘আপনার মেয়েকে মাইরা ফেলছি, লাশ নিয়ে যান’

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ দুদক: আইনজীবী

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে গেলেন ইমামতি করতে

ঢাবির সিন্ডিকেটে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের চূড়ান্ত অনুমোদন

ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি বাতিল করল পাকিস্তান, এর প্রভাব কী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত