Ajker Patrika

আনারসের পাতা থেকে সুতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২১, ১৮: ৪২
Thumbnail image

তুলা, রেশম, পাট, ফ্লেক্স কিংবা হেম্প বা গাঁজার গাছ থেকে সুতা বের করে পোশাক বানানোর কৌশল বহু আগে রপ্ত করেছে মানুষ। আনারসপাতার তন্তু দিয়েও পোশক বানাত কোনো কোনো প্রাচীন গোষ্ঠীর মানুষ। সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে এখন আবার ফিরে আসছে আনারসপাতার সুতা থেকে বানানো পোশাক। এই তন্তুকে বলা হয়, পাইনা বা পিনা।

এই সুতা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাপড় তৈরি হচ্ছে ফিলিপাইনে। টেক্সটাইল কাপড় তৈরির জন্য সিল্ক ও পলিয়েস্টারের সঙ্গে মেশানো হয় পাইনা তন্তু।

হিসপানিকদের আমল থেকেই পাইনা দিয়ে কাপড় তৈরি হচ্ছে। এই কাপড় গ্রিস ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। উনিশ শতকে এই কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায়। তবে সুতি কাপড়ের আরাম পেয়ে পাইনা কাপড়ের কথা ভুলতে শুরু করে মানুষ। ১৯৮০ সালের দিকেও এই তন্তুর কাপড় খুব দুর্লভ ছিল। কিন্তু দুই দশকের পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনেছে ফিলিপিনোরা। ধীরে ধীরে আবারও জনপ্রিয় হচ্ছে পাইনা কাপড়ের পোশাক। ফিলিপাইন থেকে পৌঁছে যাচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপের বড় বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ডে।

উৎপাদন-প্রক্রিয়া
প্রথমে পাতা থেকে তন্তুগুলো বের করা হয়। বেশির ভাগ তন্তু হয় লম্বা ও শক্ত। এই তন্তু বের করা হয় হাত দিয়ে। পাতা ঘষে ঘষে পাতার সবুজ অংশ তুলে তন্তু বের করা হয়। ১ কিলোগ্রাম পাতা থেকে ৬০ সেন্টিমিটার লম্বা সুতা পাওয়া যায়। তন্তু বের করার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৩০ জন মানুষের সাহায্য লাগে। একজন দক্ষ কর্মী ভাঙা প্লেট ও নারিকেলের খোল দিয়ে ঘষে ঘষে ৫০০ পাতা থেকে তন্তু বের করতে পারেন। তন্তু বের করে পানিতে ধোয়া হয়। এরপর সেগুলো শুকানো হয়।

তন্তুতে মোম ঘষা হয় মসৃণ করতে। তন্তু জোড়া দিয়ে দিয়ে সুতা তৈরি করা হয়। এরপর সুতার বুননে তৈরি হয় কাপড়।

কাপড়ের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে এমব্রয়ডারি করা হয়। ফিলিপাইনের স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় কালাডা।

পাইনার কাপড় খুব হালকা কিন্তু শক্ত। সিল্কের মতো মসৃণ বলে ফিলিপাইনের ঐতিহ্যবাহী পোশাক বারোং তাগালোগ (ফিলিপিনো টপস), রারোত সায়া ও অন্যান্য ফরমাল পোশাক তৈরিতে পাইনা কাপড় ব্যবহৃত হয়। ব্যাগ ও টেবিল ম্যাট তৈরিতেও পাইনা কাপড় কাজে লাগানো হয়।

সূত্র: টেক্সটাইল টুডে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত