Ajker Patrika

এডুকেশনাল টেকনোলজিতে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার

মো. আশিকুর রহমান
Thumbnail image

শিক্ষাগত প্রযুক্তিকে উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা, আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য আধুনিক ও সময়োপযোগী শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে এডুকেশন টেকনোলজি বিভাগের। 

যাত্রা শুরু
বিভাগটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগ দেওয়ার পর বৈশ্বিক চাহিদা বিবেচনায় বিভাগটির বর্তমান নামকরণ করা হয়, যা সারা বিশ্বেই বহুল প্রচলিত। শিক্ষাগত প্রযুক্তিতে সময়ের চাহিদা মিটিয়ে শীর্ষস্থানীয় অবস্থান অর্জন করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে অংশীদারত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়াস থেকেই বিভাগটির যাত্রা শুরু। 

যা পড়ানো হয়
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দক্ষদের নিয়ে কারিকুলাম ডেভেলপ করা হয়েছে, যাতে দেশ ও দেশের বাইরে আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই কারিকুলামে বর্তমান বিশ্বে জব মার্কেটে কোন বিষয়গুলো বেশি প্রয়োজন, সেদিকে নজর দিয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা সাইবার সিকিউরিটি, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, ক্লাউড যেমন জানবেন, তেমনি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসও তাঁরা জানবেন। এ ছাড়া চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, ইমার্জিং টেকনোলজি, বিজনেসের স্ট্র্যাটেজি জানবেন। তাঁদের জন্য যেমন ফাউন্ডেশন অব এডুকেশন কোর্স আছে, টিচিং মেথডোলজি, ইন্সট্রাকশনাল টেকনোলজি, এডুকেশনাল সাইকোলজি, হাউ টু ডেভেলপ অ্যা কারিকুলাম, কারিকুলাম ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল কনটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের মতো কোর্সও রয়েছে। 

শেখানো হয় হাতে-কলমে
বর্তমান সময়ে জব মার্কেট বা ইন্ডাস্ট্রি যে ধরনের স্কিল চায়, আমার শিক্ষার্থীরা সেই স্কিলে পারদর্শী হয়েই পড়াশোনা শেষ করছেন। একদম হাতে-কলমে শিখছেন। ৩৬টি থিওরি কোর্সের সঙ্গে ২১টি ল্যাব কোর্স আছে, তাঁরা একদম হাতে-কলমে শিখতে পারছেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা থার্ড ইয়ার থেকে ক্যাপস্ট্রম প্রজেক্ট নামে পুরো বছর দুটো কোর্স করবেন, যেখানে কমিউনিটির যে প্রবলেম, বিশেষ করে এডুকেশন ও আইসিটি সেক্টরে, সেগুলো সমাধানে তাঁরা কাজ করবেন। এ ধরনের প্রবলেম সলভিং ক্যাপাসিটি জব মার্কেটের পাশাপাশি উদ্যোক্তা হতেও সহযোগিতা করবে। রিসার্চের কোর্সের পাশাপাশি একাডেমিক অ্যান্ড প্রোফেশনাল রাইটিং নামের একটা কোর্স রয়েছে।

বাধ্যতামূলক সফট স্কিল কোর্স
বর্তমান সময়ে ইন্ডাস্ট্রির একটা বড় অভিযোগ থাকে, তাদের প্রোফেশনালিজম নেই, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ নেই। এ জায়গাটা ডেভেলপমেন্ট করানোর জন্য সফট স্কিল আমাদের কারিকুলামে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে তাদের মধ্যে কমিউনিকেশন, ইথিকস, ভ্যালুজ, টাইম, রেসপনসিবিলিটির মতো জায়গাগুলো যেন গ্রো আপ হয়। 

মো. আশরাফুজ্জামানচাকরির সুযোগ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হচ্ছে এডুকেশন সেক্টর। এই সেক্টরে সবচেয়ে বেশি ম্যানপাওয়ার জড়িত, সবচেয়ে বেশি স্টেকহোল্ডার জড়িত। আমাদের যেহেতু জনসংখ্যা বেশি আর এই বিশালসংখ্যক জনসংখ্যাকে জনসম্পদে, স্মার্ট সিটিজেনে পরিণত করতে হলে পুরো এডুকেশন সিস্টেমকে ডিজিটাইজ করতে হবে। এর জন্য এডুকেশন থেকে অ্যাডমিনিস্ট্রেট সব জায়গায়ই দক্ষ জনবল দরকার। আমরা দেখতে পাই, কিছু প্রতিষ্ঠান এডুকেশনে ডিগ্রি দিচ্ছে, কিছু প্রতিষ্ঠান আইসিটিতে ডিগ্রি দিচ্ছে। দুটো পেশার লোক যখন একসঙ্গে হচ্ছে, তাদের কম্বিনেশনে কিছু সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু আমাদের এই সাবজেক্টটি এডুকেশন ও টেকনোলজির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে, সেহেতু আমাদের শিক্ষার্থীরা দুটোতেই সমান পারদর্শী হওয়ায় তাঁরা এগিয়ে থাকবেন। আইসিটি, সফট স্কিলে দক্ষ হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি সব চাকরিতেই তাঁদের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ রয়েছে। বিসিএসের অধীনে শিক্ষা ক্যাডারে বিভিন্ন কলেজে, টিটিসিতে যেমন সুযোগ রয়েছে, ব্যাংকিং সেক্টরর আইটি সেকশনে বা এনজিও বা আইএনজিও যাঁরা এডুকেশন নিয়ে কাজ করছেন, সেখানেও তাঁদের নিজেদের প্রমাণের সুযোগ রয়েছে। 

মো. আশরাফুজ্জামান,চেয়ারম্যান, এডুকেশনাল টেকনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি

অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত