Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে মুক্তমনা হওয়া জরুরি

আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে মুক্তমনা হওয়া জরুরি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকভাবে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশের (ইউল্যাব) আন্তর্জাতিক বিষয়ক অফিস পরিচালক জেনিফার হোসেন। এ বিষয়ে তাঁর অবদান ও অভিজ্ঞতাসহ নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মতিউর তানিফ

প্রশ্ন: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকভাবে এগিয়ে নিতে আপনি কাজ করছেন। এ বিষয়ে আপনার অবদান ও অভিজ্ঞতা জানতে চাই। 
উত্তর: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক অফিসের পরিচালক হিসেবে আমি প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিকীকরণের নীতিগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ঠিক করা এবং নতুন নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে পারস্পরিক শিক্ষা-গবেষণা বিনিময়কে সহজতর করা। ইউল্যাবে যোগদানের আগেও আমি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিকীকরণের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছি। এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বাড়ানো এবং বিশ্বে একাডেমিক সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। উদ্যোগগুলোর মধ্যে কানাডায় পড়াশোনা এবং আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। আমার এসব অভিজ্ঞতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বাড়ানো এবং শিক্ষায় ভূমিকা রেখেছে। 

প্রশ্ন: বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এসবের অধিকাংশই বাস্তবায়ন হয়নি। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী, আপনি কী করেছেন? 
উত্তর: সমঝোতা স্মারককে গতিশীল এবং ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের বিষয়ে সব সময় প্রতিষ্ঠানকে বদ্ধপরিকর হতে হবে। তা না হলে এগুলো খাতা-কলমেই বন্দী থাকবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো কার্যকরে দ্রুত এবং বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এ ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ উচিত-শিক্ষার্থী ও লেকচার বিনিময় করা। এটি আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। সর্বোপরি এ ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে এবং শক্তিশালী করতে হাইব্রিড পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অংশীদার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিতভাবে শিক্ষক-গবেষক এসে সভা-সেমিনারের মাধ্যমে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করাও জরুরি। এ বিষয়গুলো উভয় প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় থাকতে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে থাকে। 

প্রশ্ন: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং এবং মর্যাদার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকীকরণ ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোন কোন বিষয়কে বেশি অগ্রাধিকার দেবে? 
উত্তর: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিসর বাড়ানো শুধু তার র্যাঙ্কিংকে উন্নতি করে না; পাশাপাশি এর একাডেমিক মান বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করে। সুতরাং এটা জরুরি। 

প্রশ্ন: যেসব শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি? 
উত্তর: আমি সব সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুযোগ খুঁজে বের করার জন্য উৎসাহিত করে থাকি। এর মাধ্যমে শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি, ইন্টার্নশিপ বা অন্তর্ভুক্তিমূলক বিষয় থাকে। প্রকৃত অর্থে বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও আন্তর্জাতিকভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে মুক্তমনা হওয়া জরুরি। 

প্রশ্ন: উচ্চশিক্ষায় সফল আন্তর্জাতিকীকরণ নীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ কোনটি? 
উত্তর: আন্তর্জাতিকীকরণ নীতির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, পাঠ্যক্রমের উন্নয়ন, গবেষণা সহযোগিতা এবং শিক্ষার্থীদের তৎপরতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য এবং এর সমগ্র ক্ষেত্রও জড়িত। এ ক্ষেত্রে মূল উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে—আন্তঃসাংস্কৃতিক দক্ষতা বাড়ানো, আন্তর্জাতিক ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য ভালো পরিষেবা এবং এসব কর্মকাণ্ডের স্থায়িত্ব এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা। 

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিকীকরণ প্রচেষ্টা এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ভূমিকা কতটুকু? 
উত্তর: আন্তর্জাতিকীকরণ প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ক্ষেত্রে বড় উদাহরণ, ইউল্যাব উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানের ভার্চুয়ালি মতবিনিময় ও সহযোগিতামূলক অনলাইন আন্তর্জাতিক শিক্ষায় আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে যুক্ত হতে উৎসাহিত করে থাকে। এটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক সহযোগীদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে সহযোগিতা করে। 

প্রশ্ন: উচ্চশিক্ষাকে আন্তর্জাতিকীকরণের ক্ষেত্রটিতে ক্যারিয়ার গড়তে কোন বিষয়টি আপনাকে অনুপ্রাণিত করেছে? 
উত্তর: শিক্ষা এবং এটিকে আন্তর্জাতিকীকরণের বিষয়ে তীব্র আগ্রহই আমাকে এই পেশায় নিয়ে এসেছে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক প্রভাবের পরিবর্তনশীল ক্ষমতার বিষয়ে আমার দৃঢ় বিশ্বাসও ভূমিকা রেখেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকায় আমি জানি, সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর জন্য কতটা কঠিন। এ বিষয়টি অন্যদেরও একই ধরনের অভিজ্ঞতা বাড়ানো এবং তাদের ক্ষেত্র বিস্তৃত করার জন্য সহযোগিতা করতে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা আন্তর্জাতিকীকরণের ক্ষেত্রে আপনার অবদান-অর্জন সম্পর্কে জানতে চাই। 
উত্তর: বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের কাজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। এর মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছি। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বিনিময় এবং যৌথ গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইন্টার্ন শিক্ষার্থী এবং গবেষণা সহযোগী আনতে পেরেছি। এতে আমাদের বিশেষ করে ইউল্যাব বৈশ্বিক ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। ইউল্যাবে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে শিক্ষক এবং গবেষক নিয়ে আসার দীর্ঘ সংস্কৃতি রয়েছে; যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ উন্নত করতে সহযোগিতা করছে। দুবাইয়ে বাংলাদেশ শিক্ষা ফোরামের সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণেও আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। 

আপনাকে ধন্যবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত