মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি, যা মুসলমানদের জীবনে এক অনন্য রুহানি অভিজ্ঞতা। এটি শুধু শরীরের পরিশ্রম নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি ও গুনাহ মোচনের সুবর্ণ সুযোগ। হজ যেন শুধুই একটি ভ্রমণ না হয়, বরং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক বাস্তব মাধ্যম হয়ে ওঠে; সে জন্য প্রয়োজন পূর্ণ প্রস্তুতি। নিচে হজের সফরের আগে যেসব প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত, তা ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।
বিশুদ্ধ নিয়ত
হজের উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হওয়া উচিত। লোকদেখানো, সামাজিক মর্যাদা অর্জন বা ছবি তোলার মানসিকতা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। নিজের অন্তরে বারবার প্রশ্ন করতে হবে, আমি কেন হজে যাচ্ছি? হাদিসে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (সহিহ বুখারি: ১)
হজের বিধিবিধান
হজের ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, মাকরুহ, মুবাহ বিষয়গুলো ভালোভাবে জানা জরুরি। ইহরাম বাঁধা, তাওয়াফ, সায়ি, মিনায় অবস্থান, আরাফার দিন—প্রতিটি আমলের সঠিক নিয়ম শিখে নেওয়া উচিত। বই, ভিডিও, প্রশিক্ষণ সেমিনার ও অভিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ হতে পারে সহায়ক।
আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি
হালাল উপার্জন থেকে হজের ব্যয় সংগ্রহ করতে হবে। অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজ প্যাকেজ বুকিং, সময়মতো পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট, টিকা, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা জরুরি। সব কাগজের কপি নিজের ও পরিবারের কাছে রাখতে হবে।
আত্মিক ও নৈতিক পরিশুদ্ধি
পাপ থেকে খাঁটি তওবা করতে হবে। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির ও ইস্তিগফারে অভ্যস্ত হতে হবে। হক্কুল ইবাদ, অর্থাৎ বান্দার হক আদায় করতে হবে এবং যাঁদের প্রতি অন্যায় হয়েছে, তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কও গুছিয়ে নিতে হবে।
প্রয়োজনীয় জিনিস প্রস্তুত রাখা
ইহরামের কাপড়, হালকা ও আরামদায়ক পোশাক, ছাতা, সানগ্লাস, স্যান্ডেল, হালকা ব্যাগ, ওষুধ ও হাইজিনের সামগ্রী সঙ্গে রাখতে হবে। জায়নামাজ, কোরআন শরিফ, দোয়ার বই ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের ফটোকপি গলায় ঝোলানোর উপযোগী করে নিতে হবে।
মানসিক প্রস্তুতি ও ধৈর্যের চর্চা
হজ একটি কষ্টসাধ্য ইবাদত। ভিড়, গরম, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা ও বিশৃঙ্খলা সহ্য করা লাগতে পারে এ সময়। তাই ধৈর্য, সহনশীলতা, নম্রতা ও মানবিক গুণাবলি আগে থেকে চর্চা করা উচিত। হজের সময় ধৈর্য ধারণ করাও ইবাদত, যার জন্য রয়েছে আলাদা সওয়াব।
পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি
হজের সময় পরিবারের দেখভাল, আর্থিক দিক ও দায়িত্ব কার কাছে থাকবে; তা আগেই নির্ধারণ করে যেতে হবে। কারও দেনা বা ঋণ থাকলে, তা পরিশোধ করে যাওয়া উচিত। প্রয়োজনে পরিবারের জন্য কিছু লিখিত দিকনির্দেশনাও রেখে যেতে পারেন।
হজ-পরবর্তী জীবনের ভাবনা
হজের পর জীবন যেন নতুন মোড় নেয়, এমন নিয়ত ও পরিকল্পনা নিয়ে রওনা দিতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে অভ্যস্ততা, গুনাহ থেকে দূরে থাকা, ইসলামের দাওয়াতি চেতনায় ফিরে আসা এবং সমাজে ভালো কাজের মাধ্যমে ইসলামি আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
হজ একটি পরিপূর্ণ ইবাদত, যা শুধু মক্কা-মদিনায় গিয়ে আদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং পূর্বপ্রস্তুতির মাধ্যমে তা সার্থক ও কবুল হয়। যদি প্রস্তুতি হয় নিয়তের বিশুদ্ধতা, ইলম অর্জন, আত্মশুদ্ধি ও সঠিক ব্যবস্থাপনার সমন্বয়ে; তাহলে ইনশা আল্লাহ হজ হবে কবুল, সুন্দর ও ফলপ্রসূ।
হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি, যা মুসলমানদের জীবনে এক অনন্য রুহানি অভিজ্ঞতা। এটি শুধু শরীরের পরিশ্রম নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি ও গুনাহ মোচনের সুবর্ণ সুযোগ। হজ যেন শুধুই একটি ভ্রমণ না হয়, বরং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক বাস্তব মাধ্যম হয়ে ওঠে; সে জন্য প্রয়োজন পূর্ণ প্রস্তুতি। নিচে হজের সফরের আগে যেসব প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত, তা ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।
বিশুদ্ধ নিয়ত
হজের উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হওয়া উচিত। লোকদেখানো, সামাজিক মর্যাদা অর্জন বা ছবি তোলার মানসিকতা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। নিজের অন্তরে বারবার প্রশ্ন করতে হবে, আমি কেন হজে যাচ্ছি? হাদিসে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (সহিহ বুখারি: ১)
হজের বিধিবিধান
হজের ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, মাকরুহ, মুবাহ বিষয়গুলো ভালোভাবে জানা জরুরি। ইহরাম বাঁধা, তাওয়াফ, সায়ি, মিনায় অবস্থান, আরাফার দিন—প্রতিটি আমলের সঠিক নিয়ম শিখে নেওয়া উচিত। বই, ভিডিও, প্রশিক্ষণ সেমিনার ও অভিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ হতে পারে সহায়ক।
আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি
হালাল উপার্জন থেকে হজের ব্যয় সংগ্রহ করতে হবে। অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজ প্যাকেজ বুকিং, সময়মতো পাসপোর্ট, ভিসা, টিকিট, টিকা, স্বাস্থ্য সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা জরুরি। সব কাগজের কপি নিজের ও পরিবারের কাছে রাখতে হবে।
আত্মিক ও নৈতিক পরিশুদ্ধি
পাপ থেকে খাঁটি তওবা করতে হবে। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির ও ইস্তিগফারে অভ্যস্ত হতে হবে। হক্কুল ইবাদ, অর্থাৎ বান্দার হক আদায় করতে হবে এবং যাঁদের প্রতি অন্যায় হয়েছে, তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কও গুছিয়ে নিতে হবে।
প্রয়োজনীয় জিনিস প্রস্তুত রাখা
ইহরামের কাপড়, হালকা ও আরামদায়ক পোশাক, ছাতা, সানগ্লাস, স্যান্ডেল, হালকা ব্যাগ, ওষুধ ও হাইজিনের সামগ্রী সঙ্গে রাখতে হবে। জায়নামাজ, কোরআন শরিফ, দোয়ার বই ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের ফটোকপি গলায় ঝোলানোর উপযোগী করে নিতে হবে।
মানসিক প্রস্তুতি ও ধৈর্যের চর্চা
হজ একটি কষ্টসাধ্য ইবাদত। ভিড়, গরম, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা ও বিশৃঙ্খলা সহ্য করা লাগতে পারে এ সময়। তাই ধৈর্য, সহনশীলতা, নম্রতা ও মানবিক গুণাবলি আগে থেকে চর্চা করা উচিত। হজের সময় ধৈর্য ধারণ করাও ইবাদত, যার জন্য রয়েছে আলাদা সওয়াব।
পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি
হজের সময় পরিবারের দেখভাল, আর্থিক দিক ও দায়িত্ব কার কাছে থাকবে; তা আগেই নির্ধারণ করে যেতে হবে। কারও দেনা বা ঋণ থাকলে, তা পরিশোধ করে যাওয়া উচিত। প্রয়োজনে পরিবারের জন্য কিছু লিখিত দিকনির্দেশনাও রেখে যেতে পারেন।
হজ-পরবর্তী জীবনের ভাবনা
হজের পর জীবন যেন নতুন মোড় নেয়, এমন নিয়ত ও পরিকল্পনা নিয়ে রওনা দিতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে অভ্যস্ততা, গুনাহ থেকে দূরে থাকা, ইসলামের দাওয়াতি চেতনায় ফিরে আসা এবং সমাজে ভালো কাজের মাধ্যমে ইসলামি আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
হজ একটি পরিপূর্ণ ইবাদত, যা শুধু মক্কা-মদিনায় গিয়ে আদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং পূর্বপ্রস্তুতির মাধ্যমে তা সার্থক ও কবুল হয়। যদি প্রস্তুতি হয় নিয়তের বিশুদ্ধতা, ইলম অর্জন, আত্মশুদ্ধি ও সঠিক ব্যবস্থাপনার সমন্বয়ে; তাহলে ইনশা আল্লাহ হজ হবে কবুল, সুন্দর ও ফলপ্রসূ।
হজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এই ইবাদত মানুষকে আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধ শেখায়। নানা জাতি, ভাষা ও বর্ণের মুসলমান একত্র হয় এ সময়। ত্যাগ, সততা, একতা ও সমতার জানান দেয় হজ পালনের প্রতিটি বিধানে। প্রতিবছর জিলহজ মাসে মক্কার পবিত্র স্থানসমূহে নির্দিষ্ট নিয়মে পালিত হয় হজ। চলতি সপ্তাহেই শুরু...
১ দিন আগেমিনারের সঙ্গে ইসলামি স্থাপত্যের এক নিবিড় সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। এর অবয়ব যেন মনে করিয়ে দেয় ইসলামি শাসন ও মুসলিম শাসকদের নানা কীর্তিগাথা। ইসলামের ইতিহাসে মূলত আজানের শব্দ দূরে পৌঁছানোর জন্য মিনারের ব্যবহার শুরু হয়। একসময় মিনারগুলো থেকে ভেসে আসত ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাউম’-এর মায়াবি ধ্বনি।
১ দিন আগেনামাজ ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ বিধান। নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করে নেওয়া আবশ্যক। আকাশপথে সফরের সময় ফরজ নামাজ সম্ভব হলে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে রুকু-সিজদাসহ আদায় করবেন। দাঁড়ানো সম্ভব না হলে বসে স্বাভাবিকভাবে কিবলামুখী হয়ে রুকু-সিজদা করে আদায় করবেন। এভাবে নামাজ আদায় করতে পারলে পরবর্তী সময়ে তা পুনরায় আদা
১ দিন আগেদান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ আমল। এই আমল মানুষকে আত্মিক পরিশুদ্ধি ও সামাজিক ভারসাম্যের দিকে নিয়ে যায়। দান গরিব-দুঃখীর কষ্ট লাঘব করে, সমাজে সহমর্মিতা গড়ে তোলে, ধনীর সম্পদে বরকত আনে এবং বিপদ-আপদ দূর করে। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অতিসত্বর দানের দিকে ধাবিত...
২ দিন আগে