ইজাজুল হক, ঢাকা
ইসলামের দৃষ্টিতে জুমার দিনের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এই দিনে ইতিহাসের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। তাই আল্লাহ তাআলা দিনটিকে সপ্তাহের সেরা দিনের মর্যাদা দিয়েছেন এবং জুমার নামাজের মতো মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত মুসলমানদের জন্য আবশ্যক করেছেন। এ নামাজ মসজিদে সমবেত হয়ে আদায় করতে হয়, ফলে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন শক্তিশালী হয়; গড়ে উঠে অটুট সমাজব্যবস্থা।
পৃথিবীর ইতিহাসে এই দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়। যেমন, আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-কে এই দিনে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এই দিনেই তাঁকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল। আবার এই দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়। (মুসলিম, হাদিস: ৮৫৪; আবু দাউদ, হাদিস: ১০৪৬)
তা ছাড়া এই দিনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। যেমন হাদিসে এসেছে, এই দিনে হজরত ইসরাফিল (আ.) শিঙায় ফুঁ দেবেন। এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং এই দিনেই সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে। (আবু দাউদ, হাদিস: ১০৪৭) অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘জান্নাতে একটি বাজার থাকবে। প্রত্যেক জুমার দিনে জান্নাতি লোকেরা সেখানে একত্র হবে। তারপর উত্তর দিকের বাতাস বইবে এবং সেখানকার ধুলাবালি তাদের মুখে ও পোশাকপরিচ্ছদে গিয়ে লাগবে। এতে তাদের রূপ-লাবণ্য আরও বেড়ে যাবে।...’ (মুসলিম, হাদিস: ২৮৩৩)
আল্লাহর ফেরেশতাসহ নানা সৃষ্টি এবং প্রকৃতির বিচিত্র উপাদানের কাছেও এই দিনকে আল্লাহ বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। এক হাদিসে আছে, ‘প্রত্যেক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা, আকাশ, পৃথিবী, বাতাস, পর্বত ও সমুদ্র এই দিনটিকে ভয় ও সমীহ করে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১০৮৪)
এসব কারণে দিনটিকে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের সপ্তাহের মর্যাদাপূর্ণ দিন হিসেবে ধার্য করেছেন। পূর্ববর্তী জাতিরা এ দিনের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল; আল্লাহ অনুগ্রহ করে মহানবী (সা.)-কে এই দিনের সন্ধান দিয়েছেন। ফলে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আল্লাহ মুসলমানদের জন্য এ দিনের বিশেষ ইবাদত জুমা ফরজ করেছেন। জুমার সময় নিজেকে দুনিয়ার সব কাজ থেকে মুক্ত করে তাঁর দরবারে হাজির হতে বলেছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘হে মোমিনেরা, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
তবে সারা দিন ইবাদতে মগ্ন থাকতে হবে, পার্থিব কোনো কাজ করা যাবে না—বিষয়টি এমন নয়। বরং নামাজের পর আয়-রোজগারে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। তবে যা-ই করা হোক, সর্বদা যেন আল্লাহর স্মরণ করা হয় এবং তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলা হয়, তার প্রতি জোর দিয়েছেন তিনি। এরশাদ হচ্ছে, ‘এরপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)।
জুমার নামাজ আদায়কারীর জন্য রয়েছে পরকালীন সাফল্য ও গুনাহ থেকে মুক্তি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করে, এরপর জুমা পড়তে উপস্থিত হয় এবং মনোযোগ দিয়ে নীরবে খুতবা শোনে, সে ব্যক্তির এই জুমা ও (আগামী) জুমার মধ্যকার এবং অতিরিক্ত আরও তিন দিনের সগিরা গুনাহগুলো ক্ষমা করা হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭)
জুমার দিনে দোয়া কবুলের কথাও হাদিসে এসেছে। বিশেষত আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সময়ে নীরবে-নিভৃতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা, কৃত গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং ইহকালীন-পরকালীন সাফল্য কামনা করা উচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হলো-জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।’ (বুখারি, হাদিস: ৯৩৫)
এই দিনে ইন্তেকাল করা ব্যক্তিও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হবেন বলে হাদিসে এসেছে। কবরের কঠিন পরীক্ষায় সে উতরে যেতে পারবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি মারা যায়, আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফেতনা থেকে রক্ষা করবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১০৭৮)
আমাদের দেশে সাপ্তাহিক ছুটির দিন জুমাবার। এই দিনে সাধারণত তেমন কোনো কাজ থাকে না। তাই এই অসাধারণ দিনটিকে হেলায় নষ্ট না করে ইবাদত ও দোয়ায় মগ্ন হওয়া, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নেওয়া, এতিম-অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দেওয়া—সর্বোপরি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের যথাসাধ্য চেষ্টা করা প্রতিটি মোমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ইসলামের দৃষ্টিতে জুমার দিনের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এই দিনে ইতিহাসের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। তাই আল্লাহ তাআলা দিনটিকে সপ্তাহের সেরা দিনের মর্যাদা দিয়েছেন এবং জুমার নামাজের মতো মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত মুসলমানদের জন্য আবশ্যক করেছেন। এ নামাজ মসজিদে সমবেত হয়ে আদায় করতে হয়, ফলে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন শক্তিশালী হয়; গড়ে উঠে অটুট সমাজব্যবস্থা।
পৃথিবীর ইতিহাসে এই দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়। যেমন, আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-কে এই দিনে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এই দিনেই তাঁকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল। আবার এই দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়। (মুসলিম, হাদিস: ৮৫৪; আবু দাউদ, হাদিস: ১০৪৬)
তা ছাড়া এই দিনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। যেমন হাদিসে এসেছে, এই দিনে হজরত ইসরাফিল (আ.) শিঙায় ফুঁ দেবেন। এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং এই দিনেই সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে। (আবু দাউদ, হাদিস: ১০৪৭) অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘জান্নাতে একটি বাজার থাকবে। প্রত্যেক জুমার দিনে জান্নাতি লোকেরা সেখানে একত্র হবে। তারপর উত্তর দিকের বাতাস বইবে এবং সেখানকার ধুলাবালি তাদের মুখে ও পোশাকপরিচ্ছদে গিয়ে লাগবে। এতে তাদের রূপ-লাবণ্য আরও বেড়ে যাবে।...’ (মুসলিম, হাদিস: ২৮৩৩)
আল্লাহর ফেরেশতাসহ নানা সৃষ্টি এবং প্রকৃতির বিচিত্র উপাদানের কাছেও এই দিনকে আল্লাহ বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। এক হাদিসে আছে, ‘প্রত্যেক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা, আকাশ, পৃথিবী, বাতাস, পর্বত ও সমুদ্র এই দিনটিকে ভয় ও সমীহ করে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১০৮৪)
এসব কারণে দিনটিকে আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের সপ্তাহের মর্যাদাপূর্ণ দিন হিসেবে ধার্য করেছেন। পূর্ববর্তী জাতিরা এ দিনের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল; আল্লাহ অনুগ্রহ করে মহানবী (সা.)-কে এই দিনের সন্ধান দিয়েছেন। ফলে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আল্লাহ মুসলমানদের জন্য এ দিনের বিশেষ ইবাদত জুমা ফরজ করেছেন। জুমার সময় নিজেকে দুনিয়ার সব কাজ থেকে মুক্ত করে তাঁর দরবারে হাজির হতে বলেছেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘হে মোমিনেরা, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
তবে সারা দিন ইবাদতে মগ্ন থাকতে হবে, পার্থিব কোনো কাজ করা যাবে না—বিষয়টি এমন নয়। বরং নামাজের পর আয়-রোজগারে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। তবে যা-ই করা হোক, সর্বদা যেন আল্লাহর স্মরণ করা হয় এবং তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলা হয়, তার প্রতি জোর দিয়েছেন তিনি। এরশাদ হচ্ছে, ‘এরপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো, আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)।
জুমার নামাজ আদায়কারীর জন্য রয়েছে পরকালীন সাফল্য ও গুনাহ থেকে মুক্তি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে অজু করে, এরপর জুমা পড়তে উপস্থিত হয় এবং মনোযোগ দিয়ে নীরবে খুতবা শোনে, সে ব্যক্তির এই জুমা ও (আগামী) জুমার মধ্যকার এবং অতিরিক্ত আরও তিন দিনের সগিরা গুনাহগুলো ক্ষমা করা হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭)
জুমার দিনে দোয়া কবুলের কথাও হাদিসে এসেছে। বিশেষত আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সময়ে নীরবে-নিভৃতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা, কৃত গুনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং ইহকালীন-পরকালীন সাফল্য কামনা করা উচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হলো-জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।’ (বুখারি, হাদিস: ৯৩৫)
এই দিনে ইন্তেকাল করা ব্যক্তিও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হবেন বলে হাদিসে এসেছে। কবরের কঠিন পরীক্ষায় সে উতরে যেতে পারবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি মারা যায়, আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফেতনা থেকে রক্ষা করবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১০৭৮)
আমাদের দেশে সাপ্তাহিক ছুটির দিন জুমাবার। এই দিনে সাধারণত তেমন কোনো কাজ থাকে না। তাই এই অসাধারণ দিনটিকে হেলায় নষ্ট না করে ইবাদত ও দোয়ায় মগ্ন হওয়া, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নেওয়া, এতিম-অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দেওয়া—সর্বোপরি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের যথাসাধ্য চেষ্টা করা প্রতিটি মোমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কথা বলা একটি মহান নিয়ামত, কিন্তু সেই নিয়ামতকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা আমাদের দায়িত্ব। অতিরিক্ত কথা বলা শুধু ব্যক্তিগতভাবে নয়, সামাজিকভাবেও নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের উচিত, কথার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা, সত্য কথা বলা এবং অন্যের প্রতি সদয় হওয়া। কম কথা বলা এবং নিজের কাজ ও কথার...
৬ ঘণ্টা আগেমাশাআল্লাহ বলা শুধু একটি সুন্দর অভ্যাস নয়, এর পেছনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস এবং শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার আশাবাদ। বদ নজর বা খারাপ দৃষ্টির ক্ষতি থেকে আমাদের এবং আমাদের প্রিয়জনদের রক্ষা করার জন্য এই শব্দটি খুবই কার্যকর। শয়তান আমাদের ভালোর প্রতি হিংসা করতে পারে, তাই...
৮ ঘণ্টা আগেবদনজর বা খারাপ দৃষ্টি এমন একটি অভিশাপ যা মানুষের জীবনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এটি কারও সৌন্দর্য, ধন-সম্পদ, বা জীবনের যেকোনো ভালো কিছু দেখে বা জেনে হিংসা থেকে উদ্ভূত হয়। ইসলামে বদনজরের অস্তিত্ব এবং এর প্রভাব সম্পর্কে স্পষ্ট আলোকপাত করা হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেনামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ এবং মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধু একটি আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়; বরং মুমিনের আত্মিক প্রশান্তি, চারিত্রিক পরিশুদ্ধি ও জীবনের ভারসাম্য রক্ষার একটি মহান উপায়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
১৮ ঘণ্টা আগে