Ajker Patrika

মেসওয়াক করার গুরুত্ব ও ফজিলত

ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
মেসওয়াক করার গুরুত্ব ও ফজিলত

মেসওয়াক করা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত এবং আগের যুগের নবী-রাসুলদের স্বাভাবিক নিয়ম। মেসওয়াক করার ফজিলত অনেক এবং এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই মানবসভ্যতার ইতিহাসে দেখা গেছে, সর্বকালের সভ্যসমাজ বলে যারা বিবেচিত, তারা সবাই মেসওয়াক করত।

কারণ দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করার অন্যতম উপায় হলো মেসওয়াক করা। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, দিনে দুইবার ব্রাশ তথা মেসওয়াক করতে হয়। সকালে নাশতা করার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে।

সাধারণত মানুষ সকালে নাশতা শেষে প্রাত্যহিক কাজে বের হয় এবং মানুষের সঙ্গে মিশে থাকে। তাই তখন মুখের দুর্গন্ধের কারণে যেন কেউ কষ্ট না পায়। একইভাবে, সারা দিনের খাওয়াদাওয়া শেষ করে যখন মানুষ রাতে ঘুমাতে যায়, তখন যদি ব্রাশ না করে, তাতে দাঁতের ফাঁকে জমানো খাবার দাঁতকে নষ্ট করে দেয় এবং মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। তাই ঘুমানোর আগে ব্রাশ করতে হয়।

কিন্তু ইসলাম প্রতিটি নামাজের আগে মেসওয়াক করতে উৎসাহিত করেছে। কারণ নামাজ পড়ার সময় পাশের মুসল্লিরা যেন মুখের দুর্গন্ধে কষ্ট না পায়। এ বিষয়টিকে ইসলাম গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছে এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে অজু করার আগে মেসওয়াক করার প্রতি উৎসাহিত করেছে। তাই তো, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যদি আমার উম্মতের ওপর কষ্টসাধ্য না হতো, তবে আমি তাদের প্রতিটি নামাজের সময় মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।’ (মুসলিম)

মেসওয়াক করার কারণে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। ফলে আল্লাহর ফেরেশতাগণ বান্দার সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা ওই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট থাকেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মেসওয়াক মুখের পবিত্রতা লাভের উপায় এবং আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।’ (নাসায়ি)

ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান, অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মহানবী (সা.)-এর মুজিজা ও এক অতিথিপরায়ণ নারী

আবরার নাঈম 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মক্কার ১৩০ কিলোমিটার দূরে কাদিদের নিকটবর্তী মুশাল্লাল নামের স্থান। সেখানেই উম্মে মাবাদ খুজইয়ার বাড়ি। উম্মে মাবাদ হলেন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন, অতিথিপরায়ণ এক বিদুষী নারী—যিনি নিজ বাড়ির আঙিনায় বসে থাকতেন মুসাফিরদের মেহমানদারি করার জন্য।

হিজরতের উদ্দেশ্যে নবী (সা.) মক্কা থেকে বেরিয়ে তিন দিন পর্যন্ত সওর গুহায় আত্মগোপনে ছিলেন। শত্রুর ভয় কেটে গেলে নবী (সা.) তাঁর সঙ্গী আবু বকর (রা.)-কে নিয়ে মদিনার পথে রওনা হন। পথিমধ্যে অল্প সময় উম্মে মাবাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। নবী (সা.) উম্মে মাবাদের নিকট মেহমানদারি তলব করেন। উম্মে মাবাদ বলেন, ‘আল্লাহর কসম, আপনাকে দেওয়ার মতো কিছু থাকলে এতটুকু কার্পণ্য করতাম না।’

পালের বকরিগুলোও ছিল দুধশূন্য। এ সময় তাঁবুর এক কোণে নবী (সা.) জীর্ণশীর্ণ এক বকরি দেখে বললেন, ‘এটা কেমন?’ উম্মে মাবাদ বললেন, ‘শারীরিক দুর্বলতায় এটি পালের পেছনে পড়ে গেছে।’

নবী (সা.) বললেন, ‘এটি কি দুধ দেয়?’ উম্মে মাবাদ বললেন, ‘এটা তার পক্ষে অসম্ভব।’

নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি আমাকে এটার দুধ দোহনের অনুমতি দেবে?’ তিনি বললেন, ‘আমার পিতামাতা আপনার ওপর কোরবান হোক! আপনি এটার মধ্যে দুধ দেখলে নির্বিঘ্নে দোহন করুন।’

নবী (সা.) বকরিটিকে কাছে এনে ওলানে তাঁর হাত বুলিয়ে দিলেন এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন।

শুরু হলো নবীজি (সা.)-এর মুজিজা। বকরিটি সঙ্গে সঙ্গে পা ছড়িয়ে দিল। দুধে ওলান ভরে গেল। নবী (সা.) বড় দেখে পাত্র চাইলেন। পাত্র আনা হলো। নবী (সা.) দুধ দোহালেন। প্রথমে উম্মে মাবাদ পান করে তৃপ্ত হলেন। পরে একে একে সবাই। সবশেষে নবীজি (সা.) নিজেও পান করে পরিতৃপ্ত হলেন। এরপর আবারও সেই পাত্রভর্তি দুধ দোহন করে বাড়িতে রেখে যাত্রা শুরু করলেন।

খানিক বাদে আবু মাবাদ বাড়িতে এসে পাত্রভর্তি দুধ দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘বকরির পাল তো ছিল দূরে। ঘরেও নেই দুধেল বকরি! তবে দুধ পেলে কোথায়?’

তখন উম্মে মাবাদ বললেন, ‘এ তো সেই বরকতের হাতের ছোঁয়া, যিনি অল্প সময়ের জন্য আমার মেহমান হয়েছিলেন।’

উম্মে মাবাদ খুব সুনিপুণভাবে স্বামীর কাছে নবীজির বর্ণনা দিলেন। আবু মাবাদ বললেন, ‘আল্লাহর কসম! তিনি তো সেই কুরাইশি ব্যক্তি—যাঁর কথা ইতিপূর্বে বহুত শুনেছি। শত্রুরা তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। খুব শখ ছিল তাঁর সঙ্গ দেওয়া। কখনো এ সুযোগ এলে তা হাতছাড়া করব না।’ (আর রাহিকুল মাখতুম: ২৮৯-২৯০, মুসতাদরাকে হাকেম: ৪৩২৬)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাসি-কৌতুক যখন গুনাহের পর্যায়ে চলে যায়

ফয়জুল্লাহ রিয়াদ
পবিত্র কোরআন। ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কোরআন। ছবি: সংগৃহীত

হাসি মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি। এটি মনকে প্রফুল্ল রাখে, ক্লান্তি দূর করে এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে মধুর করে তোলে। জীবনের অন্যান্য বিষয়ের মতো হাসি-কৌতুকেও পরিমিতি বোধের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। কেননা অতিরিক্ত হাসি যেমন হৃদয়কে কঠোর করে, তেমনি অশালীন রসিকতা মানুষের চরিত্র ও মর্যাদাকে কলুষিত করে তোলে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন অত্যন্ত হাস্যোজ্জ্বল ও মিশুক স্বভাবের মানুষ। সাহাবায়ে-কেরামের সঙ্গে তিনি কখনো হালকা রসিকতা করতেন; কিন্তু কখনোই তাঁর মুখ থেকে অসত্য বা আঘাতমূলক কোনো কথা বের হতো না। হাদিস শরিফে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি তো মজা করেও সত্য ছাড়া কিছু বলি না।’ (জামে তিরমিজি: ১৯৯০)। এই হাদিসে শিক্ষণীয় বিষয় হলো—মজার মধ্যেও সত্যতা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সমাজে অনেকেই হাস্যরসের নামে মিথ্যা, গালি কিংবা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেন, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।

হাসি-কৌতুক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে হৃদয়ের কোমলতা নষ্ট হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘অতিরিক্ত হাসি হৃদয়কে মেরে ফেলে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪১৯৩)। অনবরত হাসাহাসি ও কৌতুক অনুচিত কাজ। ইসলাম মানুষকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেনি; বরং আনন্দকে করেছে সংযমের মাধ্যমে সুন্দর ও অর্থবহ। কারও দোষ, আকৃতি, জাতি, ভাষা বা আর্থিক অবস্থা নিয়ে উপহাস করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অন্য সম্প্রদায়কে উপহাস না করে। হতে পারে তারা তাদের চেয়ে উত্তম।’ (সুরা হুজুরাত: ১১)

বর্তমান সময়ে বিনোদনের নামে টিভি-অনুষ্ঠান, ইউটিউব-ভিডিও কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন কৌতুক ছড়িয়ে পড়ছে। প্র্যাংকের নামে অন্যের সম্মান নষ্ট করতেও মানুষের দ্বিধাবোধ হচ্ছে না। অথচ একজন মুমিনের হাসি-কৌতুক হওয়া উচিত বিনয়ী, শালীন ও কল্যাণমুখী, যা কাউকে আঘাত না করে; বরং ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বাড়ায়।

অতএব একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য হাসি-কৌতুকে পরিমিতি বোধ বজায় রাখা জরুরি।

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৯ অক্টোবর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত। প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বাংলা, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৪: ৪৫ মিনিট
ফজর০৪: ৪৬ মিনিট০৬: ০১ মিনিট
জোহর১১: ৪৩ মিনিট০৩: ৪৪ মিনিট
আসর০৩: ৪৫ মিনিট০৫: ২০ মিনিট
মাগরিব০৫: ২২ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
এশা০৬: ৩৮ মিনিট০৪: ৪৫ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—

চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট

সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—

খুলনা: ০৩ মিনিট

রাজশাহী: ০৭ মিনিট

রংপুর: ০৮ মিনিট

বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্তানকে নামাজি বানাবেন যেভাবে

সাকী মাহবুব
পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
পরিবার। ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আর নামাজ হলো এই ব্যবস্থার প্রাণ। নামাজ শুধু একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি মানুষের আত্মার প্রশান্তি, নৈতিকতার ভিত্তি এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। তাই সন্তানের চরিত্র গঠনের প্রথম পাঠই হওয়া উচিত নামাজের শিক্ষা।

প্রশ্ন হলো, কীভাবে মা-বাবা সন্তানকে নামাজপ্রিয় ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন?

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত: ৪৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।’ (জামে তিরমিজি)। আরেকটি হাদিসে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের ৭ বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে তা না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ)

অতএব ছোটবেলা থেকে সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তোলার নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে।

সন্তান কখনো এক দিনে নামাজি হয় না। এটি একটি ধৈর্য, ভালোবাসা ও উদাহরণের দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রার প্রথম ধাপ হলো, নিজে নামাজি হওয়া। শিশুরা অনুকরণপ্রিয়; তারা যা দেখে, তা-ই শেখে। মা-বাবার নিয়মিত নামাজ তাদের চোখে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। একটি পরিবারে নামাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে কিছু কার্যকর উপায় হলো, ঘরে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা।

আজানের সময় আজান দেওয়া এবং সবাইকে একত্রে নামাজে আহ্বান করা। ছোটদের জন্য আলাদা জায়নামাজ, টুপি ও ওড়না দেওয়া, যাতে তারা উৎসাহ পায়। নামাজ শেষে সবাই মিলে দোয়া করা, এতে শিশুর মনে নামাজের প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়। শিশুর কাছে নামাজ যেন ভয় বা শাস্তি নয়, বরং আনন্দের একটি অভ্যাস হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।

নামাজ পড়লে ছোট পুরস্কার দিন। নবী ও সাহাবাদের নামাজের কাহিনি গল্প আকারে বলুন। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ইতিবাচক প্রেরণা ভয় বা শাস্তির চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তাই ‘নামাজ না পড়লে আল্লাহ রাগ করবেন’ বলার পরিবর্তে বলা উচিত—‘নামাজ পড়লে আল্লাহ খুশি হন, তোমার জন্য জান্নাত প্রস্তুত রাখেন।’ এইভাবে ভালোবাসা ও পুরস্কারের ভাষায় সন্তানকে নামাজের প্রতি অনুরাগী করে তুলুন।

সন্তান যে পরিবেশে বড় হয়, তা তার চরিত্রে গভীর প্রভাব ফেলে। তাই নামাজি বন্ধু ও সঙ্গ তৈরি করুন। মসজিদভিত্তিক শিশু কার্যক্রম বা ইসলামিক সংগঠনে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। স্কুল ও সমাজে নামাজবান্ধব পরিবেশের জন্য উদ্যোগ নিন। সন্তানকে নামাজি বানানো মানে শুধু তাকে নামাজ শেখানো নয়; বরং তার হৃদয়ে আল্লাহভীতি, নৈতিকতা ও আত্মিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, ভালোবাসা ও সঠিক দিকনির্দেশনা।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে মা-বাবাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দাও এবং নিজেও এতে স্থির থাকো।’ (সুরা তোহা: ১৩২)

সুতরাং মা-বাবা যদি নিজের ঘরে নামাজের আলো জ্বালান, তবে সেই আলো একদিন পুরো সমাজকে আলোকিত করবে নামাজি প্রজন্মের মাধ্যমে। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের সন্তানদের নামাজি হিসেবে কবুল করে নিন।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোপনে সহপাঠীদের অপ্রীতিকর ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠাতেন বাকৃবি ছাত্রী

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে দিল্লিতে ‘ক্লাউড সিডিং’, প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ ভারত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

আপনার রাশিফল: অতি আত্মবিশ্বাসের লাগাম টানুন, ভুল ধরলে রোমান্স বরবাদ

রং মিশিয়ে মুগ ডাল নামে বিক্রি, সতর্ক করল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত