আবদুল আযীয কাসেমি
প্রশ্ন: ব্যবসায়িক পণ্যে কি জাকাত দিতে হয়? এ ক্ষেত্রে কোনো শর্ত আছে কি? কীভাবে ব্যবসায়িক পণ্যের জাকাত হিসাব করা হবে? শরিয়তের আলোকে জানতে চাই। শামীম হোসাইন, হবিগঞ্জ
উত্তর: প্রধানত জাকাত ওয়াজিব হয় স্বর্ণ, রুপা ও গবাদিপশুর ক্ষেত্রে। এগুলোর প্রতিটির নিসাব শরিয়তে নির্ধারিত। এর পাশাপাশি ব্যবসায়িক পণ্যেও সুনির্দিষ্ট শর্তের ভিত্তিতে জাকাত দিতে হয়। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যা উপার্জন করো এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা উৎপন্ন করি, এর উৎকৃষ্ট অংশ থেকে কিছু পরিমাণ আল্লাহর পথে ব্যয় করো।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭) মুফাসসিরগণ বলেন, এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, মানুষ যা-ই উপার্জন করুক না কেন, তাতে জাকাত দেওয়া আবশ্যক।
একইভাবে আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি (নবী) তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন।’ (সুরা তাওবা: ১০৩) এ আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে বোঝা যায়, মানুষের সব রকম সম্পদের জন্যই জাকাত দিতে হবে। তবে উম্মাহর ঐকমত্যের আলোকে আলিমগণ বলেছেন, কেবল ব্যবসায়িক সম্পদেই জাকাত ওয়াজিব হবে। এর কারণ হলো, অন্যান্য সম্পদ সাধারণত বর্ধনশীল নয়। জাকাত ওয়াজিব হতে হলে নগদ টাকা বা স্বর্ণ-রুপা হতে হয় কিংবা বর্ধনশীল সম্পদ হতে হয়। সামুরা ইবনে জুন্দুব (রা.) বলেন, ‘নবীজি আমাদের ব্যবসায়িক পণ্যের জাকাত হিসাব করে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ: ১৩৩৫)
ব্যবসায়িক পণ্যে জাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। যথা:
এক. নির্ধারিত পণ্যটি কেনার সময় কিংবা মালিক হওয়ার সময় ব্যবসায়ের ইচ্ছা থাকা। অর্থাৎ ব্যবসায়ের নিয়ত থাকতে হবে। শুধু কেনার কারণেই জাকাত ওয়াজিব হয়ে যাবে না।
দুই. ব্যবসায়িক পণ্যের মূল্যমান স্বর্ণ কিংবা রুপা যেকোনো একটির নিসাবের সমপরিমাণ হওয়া। তবে এ ক্ষেত্রে গরিবের উপকারিতা বিবেচ্য হবে। যে নিসাব গরিবের জন্য উপকারী হবে, সেটাই হিসাব করতে হবে। এখনকার সময় অনুযায়ী রুপার নিসাব হিসাব করতে হবে। অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য পরিমাণ হলেই নিসাব পূর্ণ হয়ে যাবে।
তিন. একটি চান্দ্রবছর অতিবাহিত হতে হবে। অর্থাৎ যেদিন থেকে নিসাব পূর্ণ হবে, সেদিন থেকে হিসাব করে চান্দ্রমাস হিসাবে ঠিক এক বছর পর পণ্যগুলোর বর্তমান বাজারদর হিসাবে সমুদয় পণ্যের মূল্যের আড়াই শতাংশ বা চল্লিশ ভাগের এক ভাগ জাকাত হিসাবে আদায় করতে হবে।
যেমন মনে করুন, কারও দোকানে দুই লাখ টাকার ব্যবসায়িক পণ্য আছে। রুপার হিসাবে এটা নিসাব পরিমাণ সম্পদ। চান্দ্রমাস হিসাবে এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর যদি সেই পণ্যগুলোর মূল্য বাজারদর অনুযায়ী দুই লাখ টাকাই বহাল থাকে, তবে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জাকাত দিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মেশিনারি জিনিস, যেমন প্রেসের দোকানে ছাপার মেশিন ইত্যাদি; দোকানের সাজসজ্জার জিনিসপত্র, যেমন এসি, ফ্যান ইত্যাদির জাকাত দিতে হবে না।
জমি ও বাড়িঘর জাকাতযোগ্য সম্পদ নয়। তবে যদি সেগুলো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ক্রয় করা হয়, তখন সেখানেও জাকাত দিতে হবে। বাড়ি ভাড়া দেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে বাড়িভাড়া যদি নিসাব পরিমাণ হয়, অথবা অন্য সম্পদের সঙ্গে মিলিয়ে নিসাব পরিমাণ হয়, তবেই জাকাত দিতে হবে। (আল মুহিতুল বুরহানি, ৩/১৬৪, ফতোয়ায়ে শামি ৫/৫৫২)
উত্তর দিয়েছেন, আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
প্রশ্ন: ব্যবসায়িক পণ্যে কি জাকাত দিতে হয়? এ ক্ষেত্রে কোনো শর্ত আছে কি? কীভাবে ব্যবসায়িক পণ্যের জাকাত হিসাব করা হবে? শরিয়তের আলোকে জানতে চাই। শামীম হোসাইন, হবিগঞ্জ
উত্তর: প্রধানত জাকাত ওয়াজিব হয় স্বর্ণ, রুপা ও গবাদিপশুর ক্ষেত্রে। এগুলোর প্রতিটির নিসাব শরিয়তে নির্ধারিত। এর পাশাপাশি ব্যবসায়িক পণ্যেও সুনির্দিষ্ট শর্তের ভিত্তিতে জাকাত দিতে হয়। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যা উপার্জন করো এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা উৎপন্ন করি, এর উৎকৃষ্ট অংশ থেকে কিছু পরিমাণ আল্লাহর পথে ব্যয় করো।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭) মুফাসসিরগণ বলেন, এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, মানুষ যা-ই উপার্জন করুক না কেন, তাতে জাকাত দেওয়া আবশ্যক।
একইভাবে আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি (নবী) তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন।’ (সুরা তাওবা: ১০৩) এ আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে বোঝা যায়, মানুষের সব রকম সম্পদের জন্যই জাকাত দিতে হবে। তবে উম্মাহর ঐকমত্যের আলোকে আলিমগণ বলেছেন, কেবল ব্যবসায়িক সম্পদেই জাকাত ওয়াজিব হবে। এর কারণ হলো, অন্যান্য সম্পদ সাধারণত বর্ধনশীল নয়। জাকাত ওয়াজিব হতে হলে নগদ টাকা বা স্বর্ণ-রুপা হতে হয় কিংবা বর্ধনশীল সম্পদ হতে হয়। সামুরা ইবনে জুন্দুব (রা.) বলেন, ‘নবীজি আমাদের ব্যবসায়িক পণ্যের জাকাত হিসাব করে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (আবু দাউদ: ১৩৩৫)
ব্যবসায়িক পণ্যে জাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। যথা:
এক. নির্ধারিত পণ্যটি কেনার সময় কিংবা মালিক হওয়ার সময় ব্যবসায়ের ইচ্ছা থাকা। অর্থাৎ ব্যবসায়ের নিয়ত থাকতে হবে। শুধু কেনার কারণেই জাকাত ওয়াজিব হয়ে যাবে না।
দুই. ব্যবসায়িক পণ্যের মূল্যমান স্বর্ণ কিংবা রুপা যেকোনো একটির নিসাবের সমপরিমাণ হওয়া। তবে এ ক্ষেত্রে গরিবের উপকারিতা বিবেচ্য হবে। যে নিসাব গরিবের জন্য উপকারী হবে, সেটাই হিসাব করতে হবে। এখনকার সময় অনুযায়ী রুপার নিসাব হিসাব করতে হবে। অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য পরিমাণ হলেই নিসাব পূর্ণ হয়ে যাবে।
তিন. একটি চান্দ্রবছর অতিবাহিত হতে হবে। অর্থাৎ যেদিন থেকে নিসাব পূর্ণ হবে, সেদিন থেকে হিসাব করে চান্দ্রমাস হিসাবে ঠিক এক বছর পর পণ্যগুলোর বর্তমান বাজারদর হিসাবে সমুদয় পণ্যের মূল্যের আড়াই শতাংশ বা চল্লিশ ভাগের এক ভাগ জাকাত হিসাবে আদায় করতে হবে।
যেমন মনে করুন, কারও দোকানে দুই লাখ টাকার ব্যবসায়িক পণ্য আছে। রুপার হিসাবে এটা নিসাব পরিমাণ সম্পদ। চান্দ্রমাস হিসাবে এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর যদি সেই পণ্যগুলোর মূল্য বাজারদর অনুযায়ী দুই লাখ টাকাই বহাল থাকে, তবে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জাকাত দিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মেশিনারি জিনিস, যেমন প্রেসের দোকানে ছাপার মেশিন ইত্যাদি; দোকানের সাজসজ্জার জিনিসপত্র, যেমন এসি, ফ্যান ইত্যাদির জাকাত দিতে হবে না।
জমি ও বাড়িঘর জাকাতযোগ্য সম্পদ নয়। তবে যদি সেগুলো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ক্রয় করা হয়, তখন সেখানেও জাকাত দিতে হবে। বাড়ি ভাড়া দেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে বাড়িভাড়া যদি নিসাব পরিমাণ হয়, অথবা অন্য সম্পদের সঙ্গে মিলিয়ে নিসাব পরিমাণ হয়, তবেই জাকাত দিতে হবে। (আল মুহিতুল বুরহানি, ৩/১৬৪, ফতোয়ায়ে শামি ৫/৫৫২)
উত্তর দিয়েছেন, আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
নবী আদম (আ.) থেকে নিয়ে মহানবী (সা.) পর্যন্ত সব নবীর যুগেই কোরবানির বিধান ছিল। (সুরা হজ: ৩৪)। তবে ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত হয়ে আছে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর কোরবানির ঘটনা। কেননা তা ছিল কঠিন ত্যাগের অধ্যায়।
৬ ঘণ্টা আগেহাবিল ও কাবিল নামে হজরত আদমের দু’টি সন্তান ছিল। এই দুই ভাইয়ের মধ্যে একবার এক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এই দ্বন্দ্ব নিরসনে আল্লাহর নামে তাদের কোরবানি করার আদেশ দেন আদম (আ.)। সেটিই ছিল পৃথিবীর প্রথম কোরবানি।
৯ ঘণ্টা আগেঈদের দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল ঈদের নামাজ আদায় করা। তাই প্রস্তুতি গ্রহণ করে আগে আগে ঈদগাহে চলে যাওয়া উচিত। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে ঈদের জামাত ছুটে গেলে অথবা অংশ বিশেষ না পেলে করণীয় হলো—
১১ ঘণ্টা আগেখুশির বার্তা নিয়ে হাজির হয় ঈদ। ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করে। তবে বছরে মাত্র দুইবার এই নামাজ পড়ার ফলে অনেকেরই এর নিয়মকানুন মনে থাকে না। ঈদের নামাজ সংক্রান্ত যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে, তা হলো—
১ দিন আগে