মো. আবু তালহা তারীফ
কুদৃষ্টি, খারাপ দৃষ্টি, অশুভ দৃষ্টিকে বলা হয় বদনজর। অবিশ্বাস্য হলেও—মানুষকে উঁচু স্থান থেকে নিচু স্থানে নামিয়ে দেয় বদনজর। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বদনজর সত্য। এটি এমন এক প্রভাব—যা মানুষকে উঁচু স্থান থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২৪৭৩)
বদনজর বিষয়ে সাহাবি আবু সাহাল ইবনে হুনাইফ (রা.)-এর একটি ঘটনা রয়েছে। তিনি একবার গোসল করার জন্য শরীরের জামা খুলে ফেললে তাঁর সুঠাম দেহ দেখতে পান আমের ইবনে রবিআ (রা.)।
আবু সাহালের শরীর দেখে আমের (রা.)-এর মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে, ‘আমি আজ পর্যন্ত এমন সুন্দর দেহ কারও দেখিনি।’ অতঃপর সাহাল ইবনে হুনাইফের ভীষণ জ্বর হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সংবাদ পেয়ে আমের ইবনে রবিআ (রা.)-কে নির্দেশ দেন—তিনি যেন অজু করে সেই পানি থেকে কিছু অংশ পাত্রে রাখেন। পরে তা যেন সাহাল ইবনে হুনাইফের দেহে ঢেলে দেওয়া হয়।
নির্দেশ পেয়ে সেই মোতাবেক কাজ করলে সাহাল ইবনে হুনাইফ (রা.) অসুস্থতা থেকে রক্ষা পান। অতঃপর রাসুল (সা.) আমের ইবনে রবিআকে সতর্ক করে বলেন, ‘তোমাদের কেউ নিজের ভাইকে কেন হত্যা করতে চায়! যখন তোমার দৃষ্টি তার দেহ সুন্দর দেখেছিল, তখন তুমি তার জন্য বরকতের দোয়া করলে না কেন? মনে রেখো, বদনজর লেগে যাওয়া সত্য।’ (মুআত্তা মালেক)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাফেররা যখন উপদেশ বাণী শোনে—তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে, সে তো এক পাগল।’ (সুরা কলম: ৫১)
আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে—এর অর্থ, তারা তোমাকে বদনজর দেবে। অর্থাৎ তারা তোমাকে হিংসার প্রতিফলন ঘটিয়ে রোগী বানিয়ে দেবে, যদি আল্লাহ তোমাকে রক্ষা না করেন।
এই আয়াতটি প্রমাণ করে, বদনজরের কুপ্রভাবের বাস্তবতা রয়েছে।
বদনজর ভালো জিনিসের প্রতি লাগলে ক্ষতি হয়। এ জন্য কারও সৌন্দর্য, সম্পত্তি বা কোনো প্রকার উন্নতি দেখলে তার জন্য উন্নতি ও মঙ্গলের দোয়া করা প্রয়োজন। বলা উচিত, বারাকাল্লাহু ফিহি। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা এতে বরকত দান করুন। অথবা বলা যেতে পারে, মাশা আল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
আর কারও বদনজর থেকে রক্ষা পেতে কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস এবং নিয়মিত আমল করা যেতে পারে। এতে সুফল পাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
কখনো শিশুরাও বদনজরে আক্রান্ত হতে পারে। বদনজর থেকে রক্ষা পেতে রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের কোলে নিয়ে বিভিন্ন দোয়া পড়ে ফুঁ দিতেন বলে উল্লেখ আছে।
নবী করিম (সা.) হজরত হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে নিম্নের দোয়াটি পাঠ করে ফুঁ দিতেন। দোয়াটি হলো—‘উইজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।’ অর্থ: ‘আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই, সব ধরনের শয়তান থেকে, কষ্টদায়ক বস্তু থেকে এবং সব ধরনের বদনজর হতে।’ (সহিহ্ বুখারি)
লেখক: গবেষক, আল ফুরকান রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা।
কুদৃষ্টি, খারাপ দৃষ্টি, অশুভ দৃষ্টিকে বলা হয় বদনজর। অবিশ্বাস্য হলেও—মানুষকে উঁচু স্থান থেকে নিচু স্থানে নামিয়ে দেয় বদনজর। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বদনজর সত্য। এটি এমন এক প্রভাব—যা মানুষকে উঁচু স্থান থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২৪৭৩)
বদনজর বিষয়ে সাহাবি আবু সাহাল ইবনে হুনাইফ (রা.)-এর একটি ঘটনা রয়েছে। তিনি একবার গোসল করার জন্য শরীরের জামা খুলে ফেললে তাঁর সুঠাম দেহ দেখতে পান আমের ইবনে রবিআ (রা.)।
আবু সাহালের শরীর দেখে আমের (রা.)-এর মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে, ‘আমি আজ পর্যন্ত এমন সুন্দর দেহ কারও দেখিনি।’ অতঃপর সাহাল ইবনে হুনাইফের ভীষণ জ্বর হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সংবাদ পেয়ে আমের ইবনে রবিআ (রা.)-কে নির্দেশ দেন—তিনি যেন অজু করে সেই পানি থেকে কিছু অংশ পাত্রে রাখেন। পরে তা যেন সাহাল ইবনে হুনাইফের দেহে ঢেলে দেওয়া হয়।
নির্দেশ পেয়ে সেই মোতাবেক কাজ করলে সাহাল ইবনে হুনাইফ (রা.) অসুস্থতা থেকে রক্ষা পান। অতঃপর রাসুল (সা.) আমের ইবনে রবিআকে সতর্ক করে বলেন, ‘তোমাদের কেউ নিজের ভাইকে কেন হত্যা করতে চায়! যখন তোমার দৃষ্টি তার দেহ সুন্দর দেখেছিল, তখন তুমি তার জন্য বরকতের দোয়া করলে না কেন? মনে রেখো, বদনজর লেগে যাওয়া সত্য।’ (মুআত্তা মালেক)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাফেররা যখন উপদেশ বাণী শোনে—তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে, সে তো এক পাগল।’ (সুরা কলম: ৫১)
আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে—এর অর্থ, তারা তোমাকে বদনজর দেবে। অর্থাৎ তারা তোমাকে হিংসার প্রতিফলন ঘটিয়ে রোগী বানিয়ে দেবে, যদি আল্লাহ তোমাকে রক্ষা না করেন।
এই আয়াতটি প্রমাণ করে, বদনজরের কুপ্রভাবের বাস্তবতা রয়েছে।
বদনজর ভালো জিনিসের প্রতি লাগলে ক্ষতি হয়। এ জন্য কারও সৌন্দর্য, সম্পত্তি বা কোনো প্রকার উন্নতি দেখলে তার জন্য উন্নতি ও মঙ্গলের দোয়া করা প্রয়োজন। বলা উচিত, বারাকাল্লাহু ফিহি। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা এতে বরকত দান করুন। অথবা বলা যেতে পারে, মাশা আল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
আর কারও বদনজর থেকে রক্ষা পেতে কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস এবং নিয়মিত আমল করা যেতে পারে। এতে সুফল পাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
কখনো শিশুরাও বদনজরে আক্রান্ত হতে পারে। বদনজর থেকে রক্ষা পেতে রাসুলুল্লাহ (সা.) ছোটদের কোলে নিয়ে বিভিন্ন দোয়া পড়ে ফুঁ দিতেন বলে উল্লেখ আছে।
নবী করিম (সা.) হজরত হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে নিম্নের দোয়াটি পাঠ করে ফুঁ দিতেন। দোয়াটি হলো—‘উইজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।’ অর্থ: ‘আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই, সব ধরনের শয়তান থেকে, কষ্টদায়ক বস্তু থেকে এবং সব ধরনের বদনজর হতে।’ (সহিহ্ বুখারি)
লেখক: গবেষক, আল ফুরকান রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা।
শিক্ষা আলো। শিক্ষা মানবজীবনের ভিত্তি। মানুষ অজ্ঞতা থেকে জ্ঞানের আলোয় পৌঁছায় শিক্ষার মাধ্যমে। নৈতিকতা, শিষ্টাচার এবং চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটায় শিক্ষা। একজন শিক্ষিত মানুষ কেবল নিজের উন্নতি নয়, সমাজ ও দেশের কল্যাণেও অবদান রাখে।
২৩ মিনিট আগেমানব সমাজে শান্তি ও ভারসাম্য বজায় রাখতে ইসলাম দুটি মূল দায়িত্ব নির্ধারণ করেছে—১. হক্কুল্লাহ (আল্লাহর অধিকার), ২. হক্কুল ইবাদ (বান্দার অধিকার)। অনেকেই ভাবেন, আল্লাহর হক আদায় করলেই পরকালীন সফলতা মিলবে। অথচ ইসলামি শিক্ষায় বারবার উচ্চারিত হয়েছে—বান্দার হক নষ্টকারী প্রকৃত মুমিন নয়, বরং সে মিথ্যাবাদী...
১৬ ঘণ্টা আগে১০ মহররম কেন্দ্র করে যেসব কার্যকলাপ হয় ইসলামি শরিয়তে এর প্রায় সবগুলোই নিষেধ। বিশেষ করে আশুরার মাতম কোনো কোনোভাবেই শরিয়ত সম্মত নয়। শিয়াদের নিকটও এ কথা স্বীকৃত যে, মাতমের এই পদ্ধতি শিয়া ধর্মে বিদআত। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রাণাধিক দৌহিত্র হজরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদতের পর থেকে তিন শত বছর...
১৯ ঘণ্টা আগেমসজিদ ইবাদতের পবিত্র স্থান। মসজিদ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম স্থান, আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান হলো মসজিদসমূহ, আর সবচেয়ে অপছন্দের স্থান হলো বাজারসমূহ।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১৪১৪)
১ দিন আগে