ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
আরবি ‘ওয়াজ’ শব্দের অর্থ ‘সদুপদেশ’। ইসলামের পরিভাষায় ওয়াজ হলো, জান্নাতের সুসংবাদ ও জাহান্নামের ব্যাপারে সতর্ক করার মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর পথে এমনভাবে ডাকা, যাতে তাদের অন্তর বিগলিত হয়। (তাফসিরুশ-শারাভি)
ওয়াজ মুমিনের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনে চলার পথে অনুপ্রেরণা জোগায়। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য এসেছে উপদেশ (ওয়াজ) ও তোমাদের অন্তরে যা রয়েছে তার আরোগ্য এবং মুমিনের জন্য হেদায়াত ও রহমত।’ (সুরা ইউনুস: ৫৭)
তবে প্রশ্ন হলো, ওয়াজ করে পারিশ্রমিক নেওয়া যাবে কি না? ওয়াজের জন্য চুক্তি করে টাকা নেওয়া বৈধ হবে? অগ্রিম টাকা নেওয়া কি শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ? নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো—
ওয়াজ করে পারিশ্রমিক নেওয়া
আলেমগণ জাতির ধর্মীয় সেবাদানে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। এ জন্য তাঁদের বেতন-ভাতা বা হাদিয়ার ব্যবস্থা করা জাতির প্রত্যেক সদস্যেরই দায়িত্ব। কিন্তু বিশেষ কোনো ওয়াজের জন্য বিশেষ পরিমাণ হাদিয়া বা পারিশ্রমিক দর-কষাকষির মাধ্যমে নির্ধারণ করা এবং গ্রহণ করা জায়েজ নয়। তবে যাঁরা শিক্ষাদান ও দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে অন্য কোনোভাবে উপার্জন করার সুযোগ পান না, তাঁরা বেতন-ভাতা গ্রহণ করতে পারবেন। সেটি জায়েজ। এ ছাড়া ওয়াজ করে মাসভিত্তিক বেতন নেওয়াও জায়েজ। (আত-তাবলিগ: ১৪ / ১১)
কেউ যদি ইমামতির মতো ওয়াজ-নসিহতকেও একটা চাকরি বানিয়ে নেন বা পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন, ওই ব্যক্তির জন্য বিনিময় গ্রহণ করা জায়েজ। আর যদি নিয়মিত চাকরিভিত্তিক ওয়াজ নয়, বরং কখনো কখনো ওয়াজ করেন এবং সেটির জন্য দর-কষাকষি করে বিনিময় ঠিক করেন, তাহলে সেটা নাজায়েজ। যেমন—কেউ নির্দিষ্ট ইমাম নন; কিন্তু উপস্থিত ক্ষেত্রে তাঁকে একটা নামাজের ইমামতি করতে বলা হলো আর তিনি বিনিময় চেয়ে বসলেন, সেটা নাজায়েজ। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, কিতাবুল ইজারাহ: ৩৮৯)
খুশি হয়ে হাদিয়া দিলে তা নেওয়া কি বৈধ
কেউ যদি একনিষ্ঠভাবে ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে আল্লাহর জন্যই ওয়াজ করেন, আর লোকেরা বিভিন্নভাবে তাঁকে কিছু দান করে করে উপহার/হাদিয়া দেয়; কিন্তু এসবের প্রতি ওই ধর্মীয় বক্তার অন্তরে স্পষ্ট লোভ-লালসা নেই, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। সেটা জায়েজ। মনের ভেতর হালকা খেয়াল থাকলেও কোনো অসুবিধা নেই।
তবে ওয়াজ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে কি না, তা প্রমাণে একটি পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষাটি হলো, খেয়াল করা হবে যে ওই বক্তা ওয়াজ করার জন্য কোন এলাকাকে প্রাধান্য দেন। তিনি কি সেসব এলাকাকে প্রাধান্য দেন, যেখানে হাদিয়া তুলনামূলক বেশি মেলে, নাকি সেসব স্থানকে প্রাধান্য দেন, যেখানে ধর্মপ্রচারের প্রয়োজন বেশি? প্রথমোক্ত অবস্থায় মোটেও টাকার বিনিময়ে ওয়াজ করা জায়েজ হবে না, আর দ্বিতীয় অবস্থায় জায়েজ হবে। (আত-তাবলিগ: ২ / ৭৫)
ধর্মীয় বক্তা বেড়ে যাওয়াকে কেয়ামতের আলামত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মহানবী (সা.)। তাই ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের বক্তা বাছাইয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। আমলদার মুত্তাকি বক্তাদের প্রাধান্য দিতে হবে। প্রকৃত জ্ঞানীদের দাওয়াত দিতে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা বর্তমানে এমন এক যুগে আছ, যখন আলেমের সংখ্যা বেশি এবং বক্তাদের সংখ্যা কম। এ যুগে যে ব্যক্তি তার জানা বিষয়ের এক-দশমাংশ ত্যাগ করবে, সে ধ্বংস হবে। এরপর এমন একটা যুগ আসবে যখন বক্তার সংখ্যা বেশি হবে এবং আলেমের সংখ্যা কমে যাবে। তখন যে ব্যক্তি তার জানা বিষয়ের এক-দশমাংশ আঁকড়ে ধরবে, সে নাজাত পাবে।’ (তিরমিজি: ২২৬৭)
আরবি ‘ওয়াজ’ শব্দের অর্থ ‘সদুপদেশ’। ইসলামের পরিভাষায় ওয়াজ হলো, জান্নাতের সুসংবাদ ও জাহান্নামের ব্যাপারে সতর্ক করার মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর পথে এমনভাবে ডাকা, যাতে তাদের অন্তর বিগলিত হয়। (তাফসিরুশ-শারাভি)
ওয়াজ মুমিনের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনে চলার পথে অনুপ্রেরণা জোগায়। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য এসেছে উপদেশ (ওয়াজ) ও তোমাদের অন্তরে যা রয়েছে তার আরোগ্য এবং মুমিনের জন্য হেদায়াত ও রহমত।’ (সুরা ইউনুস: ৫৭)
তবে প্রশ্ন হলো, ওয়াজ করে পারিশ্রমিক নেওয়া যাবে কি না? ওয়াজের জন্য চুক্তি করে টাকা নেওয়া বৈধ হবে? অগ্রিম টাকা নেওয়া কি শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ? নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো—
ওয়াজ করে পারিশ্রমিক নেওয়া
আলেমগণ জাতির ধর্মীয় সেবাদানে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। এ জন্য তাঁদের বেতন-ভাতা বা হাদিয়ার ব্যবস্থা করা জাতির প্রত্যেক সদস্যেরই দায়িত্ব। কিন্তু বিশেষ কোনো ওয়াজের জন্য বিশেষ পরিমাণ হাদিয়া বা পারিশ্রমিক দর-কষাকষির মাধ্যমে নির্ধারণ করা এবং গ্রহণ করা জায়েজ নয়। তবে যাঁরা শিক্ষাদান ও দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে অন্য কোনোভাবে উপার্জন করার সুযোগ পান না, তাঁরা বেতন-ভাতা গ্রহণ করতে পারবেন। সেটি জায়েজ। এ ছাড়া ওয়াজ করে মাসভিত্তিক বেতন নেওয়াও জায়েজ। (আত-তাবলিগ: ১৪ / ১১)
কেউ যদি ইমামতির মতো ওয়াজ-নসিহতকেও একটা চাকরি বানিয়ে নেন বা পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন, ওই ব্যক্তির জন্য বিনিময় গ্রহণ করা জায়েজ। আর যদি নিয়মিত চাকরিভিত্তিক ওয়াজ নয়, বরং কখনো কখনো ওয়াজ করেন এবং সেটির জন্য দর-কষাকষি করে বিনিময় ঠিক করেন, তাহলে সেটা নাজায়েজ। যেমন—কেউ নির্দিষ্ট ইমাম নন; কিন্তু উপস্থিত ক্ষেত্রে তাঁকে একটা নামাজের ইমামতি করতে বলা হলো আর তিনি বিনিময় চেয়ে বসলেন, সেটা নাজায়েজ। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, কিতাবুল ইজারাহ: ৩৮৯)
খুশি হয়ে হাদিয়া দিলে তা নেওয়া কি বৈধ
কেউ যদি একনিষ্ঠভাবে ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে আল্লাহর জন্যই ওয়াজ করেন, আর লোকেরা বিভিন্নভাবে তাঁকে কিছু দান করে করে উপহার/হাদিয়া দেয়; কিন্তু এসবের প্রতি ওই ধর্মীয় বক্তার অন্তরে স্পষ্ট লোভ-লালসা নেই, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। সেটা জায়েজ। মনের ভেতর হালকা খেয়াল থাকলেও কোনো অসুবিধা নেই।
তবে ওয়াজ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে কি না, তা প্রমাণে একটি পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষাটি হলো, খেয়াল করা হবে যে ওই বক্তা ওয়াজ করার জন্য কোন এলাকাকে প্রাধান্য দেন। তিনি কি সেসব এলাকাকে প্রাধান্য দেন, যেখানে হাদিয়া তুলনামূলক বেশি মেলে, নাকি সেসব স্থানকে প্রাধান্য দেন, যেখানে ধর্মপ্রচারের প্রয়োজন বেশি? প্রথমোক্ত অবস্থায় মোটেও টাকার বিনিময়ে ওয়াজ করা জায়েজ হবে না, আর দ্বিতীয় অবস্থায় জায়েজ হবে। (আত-তাবলিগ: ২ / ৭৫)
ধর্মীয় বক্তা বেড়ে যাওয়াকে কেয়ামতের আলামত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন মহানবী (সা.)। তাই ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের বক্তা বাছাইয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। আমলদার মুত্তাকি বক্তাদের প্রাধান্য দিতে হবে। প্রকৃত জ্ঞানীদের দাওয়াত দিতে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা বর্তমানে এমন এক যুগে আছ, যখন আলেমের সংখ্যা বেশি এবং বক্তাদের সংখ্যা কম। এ যুগে যে ব্যক্তি তার জানা বিষয়ের এক-দশমাংশ ত্যাগ করবে, সে ধ্বংস হবে। এরপর এমন একটা যুগ আসবে যখন বক্তার সংখ্যা বেশি হবে এবং আলেমের সংখ্যা কমে যাবে। তখন যে ব্যক্তি তার জানা বিষয়ের এক-দশমাংশ আঁকড়ে ধরবে, সে নাজাত পাবে।’ (তিরমিজি: ২২৬৭)
পবিত্র কোরআনের ৬২ তম সুরা, সুরা জুমুআ। এটি মাদানি সুরা, যা জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্যকে কেন্দ্র করে নাজিল হয়েছে। এই সুরার মূল বার্তা হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের মাধ্যমে ইমানদারদের পরিশুদ্ধ জীবন লাভ এবং ইহুদিদের ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।
১১ ঘণ্টা আগেজনসম্পদকে আমানত হিসেবে দেখা, এর প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং এর অপব্যবহার থেকে বিরত থাকা ইমানের অপরিহার্য অংশ। এটি একজন মুমিনের সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্যের পরিচায়ক। এই সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নৈতিক ও ইমানি কর্তব্য।
১৩ ঘণ্টা আগেআমি প্রবাসে আছি সাত বছর হলো। এখনো বিয়ে করিনি। বিয়ের পর আর প্রবাসে আসার ইচ্ছে নেই। তাই মা-বাবাকে বলেছি, পাত্রী দেখার জন্য। যদি সবকিছু ঠিক থাকে মোবাইলের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করে দেশে চলে আসব। প্রবাসে বসে মোবাইলে বিয়ে করা কি আমার জন্য জায়েজ হবে? এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা জানতে চাই।
১৩ ঘণ্টা আগেজীবিকা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম ব্যবসা-বাণিজ্য। ইসলামে ব্যবসা এক মর্যাদাপূর্ণ পেশা। তবে এই পেশার মর্যাদা নির্ভর করে সততা ও নিষ্ঠার ওপর। আজকের দুনিয়ায় যখন লাভ ও প্রতিযোগিতার মোহে সততাকে বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে, তখন ইসলামে একজন সৎ ব্যবসায়ীর জন্য রয়েছে এক অনন্য সুসংবাদ। কিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিনে, যখন সূর্যের
১৩ ঘণ্টা আগে