Ajker Patrika

সবাইকে ইএফডি দিলে ভ্যাটের আওতা বাড়বে

ফারুক মেহেদী
সবাইকে ইএফডি দিলে ভ্যাটের আওতা বাড়বে

কেন দেশের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট দেয় না? কীভাবে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনা যায়? কেন ভ্যাট খাতে মামলা বাড়ছে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন এনবিআরের ভ্যাট নীতি শাখার সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান পাটোয়ারী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী

আজকের পত্রিকা: দেশে ভ্যাট নিবন্ধন অনেক কম। এর কারণ কী?
আবদুল মান্নান পাটোয়ারী: প্রথম যখন খুচরা পর্যায়ে ভ্যাট দেওয়া শুরু হলো তখন দোকান মালিক সমিতি ও এফবিসিসিআই প্যাকেজ ভ্যাট দেওয়ার পক্ষে কথা বলে। তখন থেকেই সত্যিকার অর্থে ভ্যাট নিবন্ধনটা ঠিকমতো হয়নি। এরপর অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানেরও নিবন্ধন না হওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। নতুন ভ্যাট আইনে আবার বার্ষিক একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের ওপর ভ্যাট ছাড় দেওয়া আছে। তারা ভ্যাটের আওতামুক্ত। সেই হিসাবে টার্নওভার কার কত, এটা যদি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা স্বীকার না করে তা বের করা কঠিন।

আজকের পত্রিকা: বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার উপায় কী?
আবদুল মান্নান পাটোয়ারী: আসলে প্রতিটি দোকানে গিয়ে খুঁজে বের করা সত্যি কঠিন কাজ। এ কারণে দোকানগুলো মূলত নিবন্ধনে আসেনি। আবার বড়, মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা নিয়েও বিভ্রান্তি ছিল। ক্যাটাগরি নির্ধারণ করার জটিলতারও সুযোগ নিয়েছে অনেকে। সরকার ইলেকট্রনিক ফিশক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) দিচ্ছে। এটা সব পর্যায়ে দেওয়া সম্ভব হলে, ভ্যাটের আওতা বাড়বে ও ফাঁকি কমবে।

আজকের পত্রিকা: ভ্যাট নিবন্ধন বাড়াতে জরিপ কতটা জরুরি?
আবদুল মান্নান পাটোয়ারী: কে কে নিবন্ধন করেছে, কে করেনি এটা সব সময় জরিপের মাধ্যমেই বের করা হয়। এখন সংশ্লিষ্ট সার্কেল এবং কমিশনারেটগুলো উদ্যোগ নিয়ে খুঁজে বের করবে যে কারা নিবন্ধন করেনি বা ভ্যাট দেয় না। তারা জরিপে যাদের নিবন্ধন পাবে না, তাদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসবে। জরিপটা জরুরি। এটা না করলে বোঝা যাবে না যে, কারা নিবন্ধনের আওতায় নেই।

আজকের পত্রিকা: ব্যাংক বা বড় বড় প্রতিষ্ঠানে বিপুল অঙ্কের ভ্যাট ফাঁকি ধরা পড়ে, এটা কেন?
আবদুল মান্নান পাটোয়ারী: ব্যাংকিং সার্ভিসের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি আছে। অনেক ব্যাংক মনে করে কিছু কিছু সেবায় তাদের হয়তো ভ্যাট দিতে হবে না। অথচ ভ্যাট কর্তৃপক্ষ তাদের ভ্যাট দাবি করে। যখন তদন্ত বা অডিট করা হয়, তখন বিষয়টি ধরা পড়ে। ভ্যাটের আইন জানার পরও এ বিভ্রান্তিগুলো আছে। রপ্তানি খাতসহ কিছু কিছু সেবা আবার ভ্যাটমুক্ত সুবিধা পায়। তখনই ব্যাংকাররা যখন ভ্যাট কাটে, তখন ভুলটা করে।

আজকের পত্রিকা: মামলায় বিপুল অঙ্কের ভ্যাট আটকে রয়েছে। কেন ভ্যাটদাতারা মামলায় যায়?
আবদুল মান্নান পাটোয়ারী: বিপুল অঙ্কের ভ্যাট একসঙ্গে দিতে গেলে তাদের ব্যবসায় চাপ পড়ে। তখন সময় নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে যে, মামলা হলে নানান প্রক্রিয়ায় সময় পাওয়া যাবে। সময়ক্ষেপণ করা আর–কী। এভাবে সময়ক্ষেপণ করলে পরে তাকে সুদসহ পুরো ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। আবার উল্টোটাও আছে। অনেক সময় ভ্যাট গ্রহীতারা যে ভ্যাট দাবি করে এর সঙ্গে ভ্যাটদাতারা আপত্তি করে। তখনো ওরা মামলা করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত