Ajker Patrika

চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছেন ট্রাম্প, বাদ যাবে না ইউরোপও

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

চীনের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি বহু আগে থেকেই দিয়েছিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণায় অনেকবার হুঁশিয়ারি বার্তা শোনা গেছে তাঁর। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েও ট্রাম্প বলেছিলেন, শপথের দিনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এবার অভিষিক্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বললেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনে তৈরি পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা বিবেচনা করছেন তিনি। পাশাপাশি শুল্ক আরোপের তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাম। আজ বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে এক প্রেস কনফারেন্সে ট্রাম্প বলেন, ‘এই পদক্ষেপ চীনের ফেন্টানিল বাণিজ্যের ওপর, যা প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার মৃত্যুর কারণ। তারা (চীন) মেক্সিকো ও কানাডায় ফেন্টানিল পাঠাচ্ছে। এ জন্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের ওপর শুল্ক আরোপ নিয়ে ভাবছে প্রশাসন।’

এ সময় ট্রাম্প জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপরও শুল্ক আরোপ করবেন তিনি।

এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘চীন আমাদের সঙ্গে অন্যায় করছে, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের প্রতি খুবই খারাপ আচরণ করে। তারা আমাদের খুবই খারাপভাবে আচরণ করে। তাই তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে। এটাই একমাত্র উপায়, যার মাধ্যমে ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করবেন। আর মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী ও মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। আর তাদের দেশে মাদক প্রবেশ করাচ্ছে চীন।

সোমবার শপথ নেওয়ার পরপরই ট্রাম্প বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিগুলোর পর্যালোচনা এবং মার্কিন বাণিজ্য অংশীদারদের অন্যায্য চর্চাগুলো চিহ্নিত করতে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

সে সময় ট্রাম্প বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রতিবেশী মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ভাবছেন, যা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে। এর উদ্দেশ্য হলো এই দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিল প্রবাহ বন্ধ করা। তখন এ প্রসঙ্গে চীনের নাম উল্লেখ করেননি।

ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ শুল্ক। তাঁর বিশ্বাস, শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো, চাকরি রক্ষা করা এবং কর রাজস্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব। ট্রাম্পের এসব শুল্ক আরোপ পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য অংশীদার দেশ কানাডা, চীন ও মেক্সিকো।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডাভোস) এক সভায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রোটেকশনিজমের (সংরক্ষণবাদী নীতি) প্রতিবাদ করেছেন চীনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ডিং জুজিয়াং বাণিজ্য বিরোধের ক্ষেত্রে ‘উভয়ের জন্য লাভজনক’ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন, তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও প্রতিবাদ জানানোর কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘যদি (মার্কিন) প্রেসিডেন্ট শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে কানাডা এর জবাব দেবে এবং সবকিছুই আলোচনার টেবিলে রয়েছে।’

অটোয়া এরই মধ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন ডলার হতে পারে।

তবে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ আমেরিকার নাগরিকদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যেতে পারে। বিদেশি পাল্টা পদক্ষেপের কারণে ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়তে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত