Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে তীব্র হচ্ছে অক্সিজেন সংকট

যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে তীব্র হচ্ছে অক্সিজেন সংকট

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে। সেখানকার হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সংকট ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। মূলত টিকা নেননি এমন লোকই করোনার নতুন ধরনে আক্রান্ত হচ্ছেন। ভয়াবহ এই নতুন ধরনে আক্রান্ত হওয়াদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার অনেক বেশি। গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোকে। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা, সাউথ ক্যারোলাইনা, টেক্সাস ও লুইজিয়ানার হাসপাতালগুলো। কোনো কোনোটির অক্সিজেন মজুত এরই মধ্যে শেষের পথে বলে জানিয়েছেন অঙ্গরাজ্যগুলোর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। 

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়ছে। করোনার যে নতুন ধরন এসেছে, তা আগের চেয়ে বেশি সংক্রামক ও ভয়াবহ হওয়ায় গুরুতর রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এ অবস্থায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও তাদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। যে গতিতে এই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে অক্সিজেন সরবরাহ ও রোগী ব্যবস্থাপনা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে মার্কিন হাসপাতালগুলোর জন্য। 

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন কোম্পানি প্রিমিয়ারের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ডোনা ক্রস সিএনএনকে বলেন, সাধারণত একটি অক্সিজেন ট্যাংক ৯০ শতাংশ পূর্ণ থাকে। এটি সাধারণ চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশে নেমে আসে। তখন এগুলো রিফিলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু এখন ট্যাংকগুলোয় অক্সিজেন ১০-২০ শতাংশ পর্যন্ত নেমে আসছে মাত্র এক-দুদিনের মাথায়। ফলে সরবরাহকারীরা এগুলো পূর্ণ করতে আগের চেয়ে অনেক কম সময় পাচ্ছেন। এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। 

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, ফ্লোরিডায় গত শনিবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার ছিল সর্বোচ্চ। করোনায় আক্রান্ত হওয়া প্রতি এক লাখ ব্যক্তির মধ্যে ওই দিন হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ৭৫ জনকে। অঙ্গরাজ্যটিতে দিনে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ৬৯০ জনের বেশি লোক করোনা আক্রান্ত হচ্ছে। 

অঙ্গরাজ্যটির চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা এরই মধ্যে করোনায় মানুষের মৃত্যু দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে কাজ করা চিকিৎসক আহমেদ ইলহাদাদ সিএনএনকে বলেন, ‘মৃত্যু দেখে দেখে আমরা এখন ভীষণ ক্লান্ত। এখন যাদের দেখতে হচ্ছে, তা শুধু তাঁরা করোনার টিকা নেননি বলে। ডেলটা ধরন মানুষের ফুসফুস শেষ করে দিচ্ছে। আর এতেই এই ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’ 

এবার যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে কম বয়সীদের সংখ্যাই বেশি। মোটাদাগে ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সীরাই এবার বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আহমেদ ইলহাদাদ বলেন, ‘এই তরুণ বয়সীদের অক্সিজেনের জন্য কষ্ট পেতে দেখাটা খুবই বেদনাদায়ক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তারা কষ্ট পাচ্ছে এবং মারা পড়ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা আগেরবারের চেয়ে দ্রুত মারা পড়ছে।’ 

মার্কিন সরকারের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি সিএনএনকে বলেন, পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ। যুক্তরাষ্ট্রে ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ১ লাখ মানুষ করোনায় মারা পড়তে পারে। এখন যা হচ্ছে, তার সবই অনুমিত; কিন্তু প্রতিরোধ করা যেত।’ 

যুক্তরাষ্ট্রে করোনার টিকাদান কার্যক্রম অনেক আগেই শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো দেশটির সবাই টিকা নেননি। এখন সেসব অঙ্গরাজ্যেই করোনার সংক্রমণ বেশি, যেখানে টিকা নেওয়ার হার কম। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্যমতে, ফ্লোরিডায় এখন পর্যন্ত ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ টিকা নিয়েছে। সাউথ ক্যারোলাইনা, টেক্সাস ও লুইজিয়ানায় এ হার ৫০ শতাংশের নিচে। এই সব অঙ্গরাজ্যই এখন করোনার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে। এসব অঙ্গরাজ্যের হাসপাতালগুলোই অক্সিজেন সংকটে ভুগছে। টিকা নিলে ডেলটা ধরন থেকে কিছুটা হলেও সুরক্ষা পেত এই মানুষেরা। কারণ, কোভিড টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ডেলটা ধরনে আক্রান্ত হওয়ার হার কম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত