Ajker Patrika

কী আছে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড়’ সৌদি-মার্কিন অস্ত্র চুক্তিতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: এএফপি
মঙ্গলবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রায় ১৪২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অস্ত্র চুক্তি।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, খনিজসম্পদ এবং অন্যান্য খাতে বিনিয়োগকে ঘিরে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের তথ্যমতে, সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে বিশাল ওই অস্ত্র চুক্তিটিকে দুই মিত্র দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা বিক্রয় চুক্তি হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, এই অস্ত্র চুক্তির মাধ্যমে এক ডজনেরও বেশি মার্কিন প্রতিরক্ষা কোম্পানি সৌদি আরবকে সর্বাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও সামরিক সেবা দেবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলো—সৌদি আরবের বিমানবাহিনীকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে এবং মহাকাশ সক্ষমতা বাড়ানো হবে। বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে আরও উন্নত করা হবে। সামুদ্রিক ও উপকূলীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সামরিক উপকরণ সরবরাহ করা হবে। সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থল সেনাবাহিনীকেও আরও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করা হবে। এ ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটানো হবে।

চুক্তির অংশ হিসেবে সৌদি সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ব্যাপক প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে সামরিক একাডেমি এবং সামরিক চিকিৎসা সেবার উন্নয়ন।

যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি, আমরা একে অপরকে খুব পছন্দ করি।’

ট্রাম্পের সঙ্গে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা, যার মধ্যে রয়েছেন বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক। রিয়াদ সফরের পর বুধবার কাতার ও বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাবেন ট্রাম্প।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুন খুন: ডিবি পুলিশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিখোঁজ কর্মকর্তাকে মাদারীপুরে হোটেল থেকে উদ্ধার, যা বললেন তিনি

ঋণের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

আজকের রাশিফল: শুভ ফল পেতে স্ত্রীকে সময় দিন, গোপন আনন্দযোগ

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজা যুদ্ধের ট্রমা: আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন অনেক ইসরায়েলি সেনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অনেক ইসরায়েলি সেনার স্মৃতিতে যুদ্ধের সময়গুলো যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল
অনেক ইসরায়েলি সেনার স্মৃতিতে যুদ্ধের সময়গুলো যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল

দুই হাতে শক্ত করে জড়িয়ে আছে একটি সাপ। সরীসৃপটির শীতল স্পর্শ যেন এক মুহূর্তের জন্য শান্তি দিল। তবে চোখ বন্ধ করলেই ফিরে আসে যুদ্ধের শব্দ। আতঙ্কে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। গাজায় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে সেনাবাহিনী ছাড়ার ১৮ মাস পার হয়ে গেলেও এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলছে না। এ অবস্থা হামাসের হামলায় আহত ২৭ বছর বয়সী এক সার্জেন্ট মেজরের। যুদ্ধের ট্রমা থেকে বের হয়ে আসতে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলের এক খামারে নিচ্ছিলেন প্রাণীর সংস্পর্শে থাকার থেরাপি।

সাবেক এক ইসরায়েলি সেনা জানান তাঁর দুই সহযোদ্ধা আত্মহত্যা করেছেন। দুজনের বয়সই ছিল কুড়ির ঘরে। থেরাপি নেওয়ার পরের অবস্থার বোঝাতে এই ইসরায়েলি সেনা বলেন, ‘এখন পাশ দিয়ে যদি কোনো বিমান বা ড্রোন উড়ে যায় কিংবা কেউ চিৎকার করতে থাকে, তাতে কিছু যায় আসে না। কারণ আমি এখন এই সাপের সঙ্গে আছি।’

মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায়, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সঙ্গে কথা বলা এই সেনা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চালিয়ে যাওয়া গাজাযুদ্ধে চলছে ভঙ্গুর এক বিরতি। এই বিরতির চুক্তি অনেকবারই ভঙ্গ করছে ইসরায়েল। তবে গাজা ছেড়ে যাওয়া অনেক সেনার স্মৃতিতে যুদ্ধের সময়গুলো যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকে। বাড়ছে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি), বিষণ্নতা এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যা। পাশাপাশি আত্মহননের ঘটনাও ঘটছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে প্রায় ১১ হাজার সেনা ‘মানসিক আঘাত’ জনিত সমস্যায় ভুগছেন। এই সংখ্যা ইসরায়েলের ৮০ বছরের ইতিহাসে সব যুদ্ধ মিলিয়ে এমন আঘাতে আক্রান্ত মোট সেনার এক–তৃতীয়াংশেরও বেশি।

মন্ত্রণালয় ‘মানসিক আঘাত’ বলতে পিটিএসডি, উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও অন্যান্য মানসিক সমস্যাকে বুঝিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলি সেনাদের আত্মহত্যার হারও বেড়েছে। যুদ্ধ শুরুর আগে এক দশক ধরে প্রতি বছর গড়ে ১৩ জন সেনা আত্মহত্যা করতেন। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর এই সংখ্যা বেড়ে গেছে। সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২১ জন সেনা আত্মহত্যা করেছেন।

তবে এই হিসাবের মধ্যে দায়িত্বরত সেনা ও রিজার্ভ সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত। সেনাবাহিনী ছাড়ার পর যারা আত্মহত্যা করেছেন, তারা এই পরিসংখ্যানে নেই।

গত মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট জানায়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত আরও ২৭৯ জন সেনা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তবে তারা বেঁচে গেছেন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগের প্রধান ও উপমহাপরিচালক লিমোর লুরিয়া বলেন, ‘মানসিক আঘাতের প্রভাব কতটা গভীর সেটা এখন সবাই উপলব্ধি করছে। এর চিকিৎসা প্রয়োজন এবং সম্ভবও।’

লুরিয়া আরও বলেন, ‘আমরা এখন প্রজন্মগত পার্থক্য দেখছি। আগের যুদ্ধের বহু আহত সেনা কখনো সাহায্য নেননি, কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের আহতরা একেবারে ভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।’

এই সংকট মোকাবিলায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। শত শত মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের সহায়তার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পাঠানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সহায়তা হটলাইন চালু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি অবসরের পর যৌথ থেরাপি সেশন আয়োজন করা হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ইসরায়েল এখনো এত বড় পরিসরের মানসিক সংকট সামলানোর মতো প্রস্তুত নয়। বিষয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগও স্বীকার করেছে। তাদের মতে, এই সংকট পুরো জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থাকেই প্রভাবিত করছে।

ট্রমা থেরাপি স্পেশালিস্ট টুলি ফ্লিন্ট বলেন, এই যুদ্ধের দীর্ঘ মেয়াদ ও তীব্রতা, পাশাপাশি বারবার মোতায়েন করা সেনাদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এতে সেনারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। এটি ভবিষ্যতে দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধের মানসিক ভুক্তভোগীদের যদি যথাযথ চিকিৎসা না দেওয়া হয়, তারা নিজেদের, পরিবারের এবং সমাজের জন্য একপ্রকার বোঝা হয়ে উঠতে পারেন।’

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সঙ্গে কথা বলা ইসরায়েলি সেনা ও তাঁদের চিকিৎসায় নিযুক্ত মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন, যুদ্ধ শেষে অনেকেই জীবনের উদ্দেশ্য হারিয়ে ফেলছেন। তাদের মনোযোগ ধরে রাখা, সম্পর্ক গড়া বা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসহায়ত্ব ও হতাশার অনুভূতি আরও গভীর হয়েছে।

ট্রমা থেরাপিস্ট টুলি ফ্লিন্ট জানান, কিছু সেনা ‘নৈতিকভাবে আহত’ হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষে অনেক সেনা নিজেদের প্রশ্ন করেন—যা দেখেছি, যা করেছি, তার পর আমি আসলে কে? আমি কী ধরনের মানুষ?’

যুদ্ধের শুরুতে প্রায় ছয় মাস রেডিও টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করা ২৭ বছর বয়সী এক সাবেক সেনা জানান, এ বছরের শুরুতে তিনি এই খামারে আসেন, কারণ তখন নিজেকে পুরোপুরি হারিয়ে ফেলা মনে হচ্ছিল।

গাজার সীমান্তে তাঁর ঘাঁটিতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, তাতে তাঁর পিঠে গুরুতর আঘাত লাগে। এরপর থেকে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, শব্দে আতঙ্কিত ও সবসময় টানটান উত্তেজিত মানসিক অবস্থায় থাকতেন।

তিনি বলেন, ‘সবকিছু আরও বেড়ে যেতে থাকল। আমার রাগ, আমার চিৎকার, আমার অনুভূতি। যেন কেউ ভলিউম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

তিনি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তবে এই খামার তাঁকে এক ভিন্নভাবে সুস্থ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। একই অভিজ্ঞতার মানুষদের সঙ্গে থাকা এবং প্রাণীদের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে তিনি মনকে শান্ত রাখতে পারছেন, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছেন।

সদোট ইয়াম কিবুতজে অবস্থিত ‘ব্যাক টু লাইফ’ খামারটি সেনাদের সহায়তার জন্য নেওয়া অনেক ছোট ছোট উদ্যোগের একটি।

২০১৪ সালে গাজায় যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন আমির ইয়ারদিনাই (দানি)। সেখান থেকে ফিরে বছরের পর বছর তীব্র পিটিএসডিতে বা মানসিক সমস্যায় ভুগে গত বছর আত্মহত্যা করেন। তাঁকে উৎসর্গ করে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু আসি নাভে এই খামারটি প্রতিষ্ঠা করেন।

আসি নাভে বলেন, ‘দানির মৃত্যু আমাকে অনুভব করিয়েছিল—সে-ই শেষ নয়।’

এই খামার এখন দশকের পর দশক যুদ্ধফেরত সেনাদের জন্য এক প্রশান্ত আশ্রয়স্থল। এখানে তারা প্রচলিত কাউন্সেলিংয়ের পাশাপাশি কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণীর মাধ্যমে থেরাপি নেন। চারদিকে পাখির ডাক আর মুরগির ডাকের প্রাকৃতিক পরিবেশে সাবেক সেনারা উদ্ধারকৃত প্রাণীদের সঙ্গে কাজ করেন—যেখানে মানুষ ও প্রাণী দুজনেই একে অপরকে সুস্থ হতে সাহায্য করে।

এই খামারের থেরাপি কার্যক্রমে পরামর্শদাতা মনোবিজ্ঞানী গাই ফ্লুম্যান বলেন, সেনাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নাগরিক জীবনে ফিরে খাপ খাওয়ানো। প্রাণীদের সঙ্গে থাকা তাঁদের মনকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে।

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের অতীতের স্মৃতিগুলো সামলাতে সাহায্য করতে হবে, যাতে তারা যা ঘটেছে তার সঙ্গে শান্তিতে থাকতে শিখে... এবং পাশাপাশি আবার জীবনের সঙ্গে সংযোগ খুঁজে পায়।’

গাজা ও পশ্চিম তীরে এক বছর মোতায়েন থাকা ৩১ বছর বয়সী এক সেনা বাড়ি ফিরে আরেক লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েছে। ভেঙে গেছে যত্নে গড়া সম্পর্কগুলো। পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রাখাও কঠিন হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘মনে হতো আমি এখনো সেখানেই আছি। আমার শরীর এখানে, কিন্তু মন এখনো যুদ্ধক্ষেত্রে রয়ে গেছে।’

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগের পরিচালক লিমোর লুরিয়া স্বীকার করেছেন, সেনাদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার বিষয়টি সামাজিক কলঙ্কতে পরিণত হয়েছে। এই কলঙ্ক দূর করতে কাজ চলছে।

লুরিয়া জানান, জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান, গণমাধ্যমে প্রচার এবং তরুণ যুদ্ধফেরতদের যুক্ত করতে পুনর্বাসন খামার ও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের মতো কর্মসূচি রয়েছে।

৩২ বছর বয়সী এক রিজার্ভ সেনা বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর দক্ষিণ ইসরায়েলে নিহতদের মরদেহ সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ওই হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন জিম্মা হন।

তিনি জানান, তার ফ্ল্যাশব্যাকগুলো মৃতদেহের দৃশ্য নয়, বরং গন্ধের সঙ্গে বেশি যুক্ত। এই সেনা বলেন, ‘আমি যেন সবসময় মৃতদেহের গন্ধ পাই। এমনকি নিজের সন্তানের ডায়াপার বদলানোর সময়ও সেই গন্ধ মনে পড়ে যায়।’

তিনি নিজেও একজন থেরাপিস্ট। তাই দ্রুতই বুঝতে পারেন, এটি পিটিএসডির (PTSD) লক্ষণ। এরপর চিকিৎসা নেন তিনি। এখন অন্য সেনাদেরও সহায়তা করছেন।

তাঁর মতে, সেনাদের চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো মাঠপর্যায়ের কমান্ডারদের ভূমিকা।

ওই সেনা বলেন, ‘যখন কোনো কমান্ডার নিজেই বলেন, ‘তুমি সাহায্য নিতে পারো’। তখন বিষয়টা অনেক সহজ হয়। এতে ভয় বা সামাজিক কলঙ্ক কমে যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুন খুন: ডিবি পুলিশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিখোঁজ কর্মকর্তাকে মাদারীপুরে হোটেল থেকে উদ্ধার, যা বললেন তিনি

ঋণের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

আজকের রাশিফল: শুভ ফল পেতে স্ত্রীকে সময় দিন, গোপন আনন্দযোগ

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিভাবান মানুষ নেই, তাই বিদেশি টানতে আগ্রহী ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দেশে প্রচুর পরিমাণে প্রতিভাবান মানুষ নেই। আর তাই তিনি বিদেশি প্রতিভাদের টানতে আগ্রহী। গতকাল মঙ্গলবার সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, দেশটির প্রয়োজনীয় চাকরির শূন্যতা পূরণে পর্যাপ্ত যোগ্য কর্মী নেই। তাই তিনি এইচ১–বি ভিসার মাধ্যমে দক্ষ কর্মী নেওয়ার পক্ষে।

ফক্স নিউজের সাংবাদিক লরা ইনগ্রাহাম ট্রাম্পের কাছে জানতে চান যে, তাঁর প্রশাসন এইচ১–বি ভিসা কমাবে কি না? কারণ, এর ফলে আমেরিকান শ্রমিকদের বেতন কমতে পারে। ট্রাম্প বলেন, বেতন কমার বিষয়ে ‘আমি একমত, তবে প্রতিভাও আনতে হবে।’

এ সময় ইনগ্রাহাম বলেন, ‘এখানে প্রচুর প্রতিভাবান মানুষ আছে।’ ট্রাম্প জবাব দেন, ‘না, নেই, নেই…কিছু নির্দিষ্ট প্রতিভা নেই, মানুষকে শেখাতে হয়। আপনি কাউকে বেকার লাইন থেকে নিয়ে এসে বলতে পারেন না যে, আমি তোমাকে এমন একটি কারখানায় রাখব যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হবে।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেপ্টেম্বরে জর্জিয়ায় হুন্দাই কারখানায় আইসিই-এর রেইডের উদাহরণ দেন। সেখানে কর্তৃপক্ষ শত শত দক্ষিণ কোরিয়ান ঠিকাদারকে তাদের অভিবাসন পরিস্থিতি নিয়ে গ্রেপ্তার ও দেশত্যাগ করেছিল। ট্রাম্প বলেন, ‘জর্জিয়ায় তারা রেইড করেছিল কারণ তারা অবৈধ অভিবাসীদের বের করতে চেয়েছিল—সেখানে এমন মানুষ ছিল যারা সারা জীবন ব্যাটারি তৈরি করেছে। ব্যাটারি তৈরি করা খুব জটিল। সহজ কাজ নয়। বিপজ্জনক, বিস্ফোরণ অনেক। তারা প্রায় ৫০০-৬০০ জন মানুষ নিয়ে ব্যাটারি বানাচ্ছিল এবং অন্যদের শেখাচ্ছিল। তাদের দেশ থেকে বের করতে চেয়েছিল। লরা, তোমার এ ধরনের দক্ষতা লাগবে।’

এর আগে, গত সেপ্টেম্বরেই ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসার জন্য ১ লাখ ডলারের আবেদন ফি আরোপের নির্বাহী নির্দেশে স্বাক্ষর করেন। এটি ছিল অভিবাসী দমন এবং বিদেশিদের দেশে প্রবেশে নতুন সীমাবদ্ধতা আরোপের একটি ধারাবাহিক পদক্ষেপ। এইচ১–বি ভিসা একটি কাজের ভিসা, যা তিন বছর বৈধ থাকে এবং আরও তিন বছর নবায়ন করা যায়। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই প্রোগ্রামটি মার্কিন কোম্পানিগুলোকে প্রতিযোগিতায় রাখে এবং ব্যবসা বাড়ায়, ফলে দেশে আরও চাকরি তৈরি হয়।

সাক্ষাৎকারের প্রথম অংশে, ট্রাম্প ফ্রান্সের সমালোচনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাজায় রাখার পক্ষে বলেন। তিনি বলেন, যেসব দেশ থেকে লোকজন এসে চলে যায় সেসব ‘বহির্গামী দেশের লোকজন থাকা ভালো।’

ইনগ্রাহাম এ সময় বলেন, ‘তারা ফরাসি নয়, তারা চীনা। তারা আমাদের ওপর গুপ্তচর কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমাদের বৌদ্ধিক সম্পত্তি চুরি করে।’ ট্রাম্প বলেন, ‘তুমি কি মনে করো ফরাসিরা ভালো?’ ইনগ্রাহাম বলেন, ‘হ্যাঁ।’ ট্রাম্প উত্তর দেন, ‘আমি এতটা নিশ্চিত নই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুন খুন: ডিবি পুলিশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিখোঁজ কর্মকর্তাকে মাদারীপুরে হোটেল থেকে উদ্ধার, যা বললেন তিনি

ঋণের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

আজকের রাশিফল: শুভ ফল পেতে স্ত্রীকে সময় দিন, গোপন আনন্দযোগ

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বের উচ্চতম হোটেল ‘সিয়েল দুবাই মেরিনা’, কক্ষ ভাড়া কত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিশ্বের উচ্চতম হোটেল ‘সিয়েল দুবাই মেরিনা’, কক্ষ ভাড়া কত

আরব আমিরাতের দুবাইয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু হোটেল সিয়েল দুবাই মেরিনা। আগামী ১৫ নভেম্বর ৩৭৭ মিটার উচ্চতার এই হোটেলটির উদ্বোধন হবে। আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

উদ্বোধনের পর এটিই হবে বিশ্বের সর্বোচ্চ হোটেল, যা নতুন রেকর্ড তৈরি করবে। হোটেলটির নির্মাণকাজ পরিচালনা করেছে দ্য ফার্স্ট গ্রুপ এবং এটি পরিচালনা করবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপের ভিগনেট কালেকশন। ৮২ তলা বিশিষ্ট এই টাওয়ারটি আরব আমিরাতেরই শেখ জায়েদ রোডের জেভোরা হোটেলকে ছাড়িয়ে যাবে। হোটেলটি দুবাইয়ের আতিথেয়তা কেন্দ্রগুলোর তালিকায় নতুন সংযোজন এবং শহরের বড় পর্যটন বিনিয়োগকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত করছে।

হোটেলটিতে মোট ১ হাজার ৪টি রুম ও সুইট রয়েছে। প্রতিটি তলা থেকে দুবাইয়ের দৃষ্টিনন্দন পাম জুমেইরা এবং মেরিনার মনোরম দৃশ্য দেখা যাবে। প্রতি রুমের ন্যূনতম ভাড়া রাত প্রতি ১ হাজার ৩১০ দিরহাম বা সাড়ে ৪৫ হাজার টাকা। আর প্রিমিয়াম স্যুইটগুলো প্রায় ২ হাজার ৪০০ দিরহাম মূল্যে ভাড়া পাওয়া যাবে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত স্থাপত্য সংস্থা এনওআরআর ৮২ তলা এই ভবনের নকশা করেছে। এই কাচের টাওয়ারটি এমনভাবে তৈরি যেখানে চারপাশ থেকেই আলো ভবনের ভেতরে প্রবেশ করবে। অতিথিরা ওপরের রুফটপ অবজারভেশন ডেকে বসে ৩৬০ ডিগ্রির দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। এখান থেকে দেখা যাবে দুবাইয়ের বিখ্যাত স্থানগুলো, যেমন বুর্জ আল–আরব এবং আইন দুবাই।

হোটেলটি আরও নতুন দুটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে। একটি হলো—বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিতি ইনফিনিটি পুল এবং সর্বোচ্চ ক্লাব। ৭৬ তলা উচ্চতায় অবস্থিত ট্যাটু স্কাই পুল অ্যাড্রেস বিচ রিসোর্টের ২৯৪ মিটারের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। আর ৮১ তলায় অবস্থিত ট্যাটু স্কাই লাউঞ্জ হবে বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত ক্লাব।

হোটেলের মূল আকর্ষণ হলো ট্যাটু দুবাই, যা পুরস্কারপ্রাপ্ত এশীয় খাবারের রেস্তোরাঁ, যা টাওয়ারের তিনটি ওপরের তলা নিয়ে গঠিত। হোটেলের অন্যান্য আন্তর্জাতিক রেস্তোরাঁর মধ্যে রয়েছে—রাইজেন কফি অ্যান্ড আর্টিসানাল বেকারি, এখানে সারা দিন সেবা দেওয়া হয়। ওয়েস্ট–১৩ রেস্তোরাঁয় ভূমধ্যসাগরের অঞ্চলের খাবার পাওয়া যায়। ইস্ট–১৪ রেস্তোরাঁয় থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম এবং ভারতের স্বাদের বুফে খাবার পাওয়া যাবে। এখানে রামেন, সুশি এবং কারি স্টেশনও আছে।

হোটেলটি এরই মধ্যে বুকিং শুরু করে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুন খুন: ডিবি পুলিশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিখোঁজ কর্মকর্তাকে মাদারীপুরে হোটেল থেকে উদ্ধার, যা বললেন তিনি

ঋণের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

আজকের রাশিফল: শুভ ফল পেতে স্ত্রীকে সময় দিন, গোপন আনন্দযোগ

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপোরিঝিয়ায় রুশ আক্রমণে পিছু হটছে ইউক্রেনীয়রা, রণক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি মস্কোর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ০১
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান স্বীকার করেছেন, জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে রুশ বাহিনী বেশ খানিকা অগ্রগতি লাভ করেছে। ছবি: আল–জাজিরা
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান স্বীকার করেছেন, জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে রুশ বাহিনী বেশ খানিকা অগ্রগতি লাভ করেছে। ছবি: আল–জাজিরা

ইউক্রেন যুদ্ধে রণক্ষেত্র দীর্ঘদিন ধরে প্রায় জমাট অবস্থায় ছিল। কোনো পক্ষই খুব বেশি অগ্রগতি অর্জন করতে পারছিল না। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, রুশ বাহিনী অচলাবস্থা ভেঙে ইউক্রেনকে পিছু হটতে বাধ্য করতে পারছে কিছু কিছু অঞ্চলে। কিছুদিন আগে রুশ সেনারা কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল পোকরভস্কে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলে। আর এখন আরেক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল জাপোরিঝিয়ায় রুশ আক্রমণের মুখে পিছু হটছে ইউক্রেনীয় সেনারা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের শীর্ষ সেনাপ্রধান স্বীকার করেছেন, দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিঝিয়া এলাকায় সেনাবাহিনীর অবস্থা ‘আশঙ্কাজনকভাবে খারাপ হয়েছে।’ তীব্র যুদ্ধের পর ইউক্রেনীয় বাহিনী ওই অঞ্চলের পাঁচটি গ্রাম থেকে সরে এসেছে।

দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে এই পশ্চাৎপসারণের খবর এমন এক সময়ে এল, যখন রাশিয়া দাবি করেছে তাদের সেনারা পূর্বাঞ্চলের পোকরভস্ক ও কুপিয়ানস্ক শহরের ভেতরে আরও কিছুটা অগ্রসর হয়েছে।

রুশ সামরিক ব্লগারদের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, রুশ সেনারা মোটরসাইকেল ও ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িতে করে শহরে প্রবেশ করছে। কেউ কেউ সামরিক যানবাহনের ওপর বসে আছে। রুশ গণমাধ্যম পোকরভস্ককে বলছে ‘দোনেৎস্কের প্রবেশদ্বার’ এবং এ কারণেই এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

ইউক্রেনের সেনাপ্রধান ওলেক্সান্দর সিরস্কি মঙ্গলবার বলেন, ‘লোকবল ও অস্ত্রশস্ত্রে সংখ্যাগত শ্রেষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে শত্রুপক্ষ তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে তিনটি বসতি দখল করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওলেক্সান্দ্রিভকা ও হুলিয়াপোলের দিকের পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে।’

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানায়, রুশ বাহিনীর ভয়াবহ গোলাবর্ষণে ‘প্রায় সব আশ্রয়কেন্দ্র ও প্রতিরক্ষা কাঠামো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার’ পর পাঁচটি গ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। ইউক্রেনীয় অবস্থানগুলোর ওপর প্রায় ২ হাজার গোলা নিক্ষেপ করা হয়। জাপোরিঝিয়ার হুলিয়াপোল শহরের উত্তর-পূর্বে তিনটি গ্রাম নিয়ে এখনো তীব্র লড়াই চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে।

সিরস্কি জানান, রুশ বাহিনী ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে ইউক্রেনীয় অবস্থানের মাঝখান দিয়ে ঢুকে পড়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, রুশ সেনাদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মাটির প্রতিটি মিটার রাশিয়ার শত শত সৈন্যের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।’

মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলের রুশ দখলমুক্ত এলাকায় সফর করেন। সেখানে তিনি বলেন, পোকরভস্ক ও জাপোরিঝিয়ার পরিস্থিতি ‘কঠিন, আংশিকভাবে এমন আবহাওয়ার কারণে যা শত্রুর হামলার পক্ষে কাজ করছে।’ তিনি আরও জানান, কুপিয়ানস্কে যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থা ‘কিছুটা ভালো’ এবং সেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনী ‘কিছু সাফল্য অর্জন করেছে।’

রাশিয়া এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পোকরভস্ক ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে, দুই দিক থেকে অগ্রসর হয়ে শহরটিকে বিচ্ছিন্ন করার কৌশল নিচ্ছে। সিরস্কি মার্কিন গণমাধ্যমকে বলেন, পোকরভস্ক দখলে রাশিয়া সেখানে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে।

সম্প্রতি পোকরভস্ক ঘিরে যুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে পরস্পরবিরোধী দাবি শোনা যাচ্ছে। রাশিয়া কয়েক দিন ধরে দাবি করছে তারা শহরটিকে ঘিরে ফেলেছে, কিন্তু কিয়েভ বলছে এখনো শহরটির সঙ্গে মিরনোহ্রাদ পর্যন্ত সরবরাহ লাইন খোলা আছে। রাশিয়া আরও জানায়, তারা ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ এলাকার কুপিয়ানস্ক শহরের পূর্বাংশ পুরোপুরি দখল করেছে।

হান্টার ছদ্ম নামের এক রুশ কমান্ডার বলেন, তাঁর বাহিনী কুপিয়ানস্কের পূর্ব প্রান্তের একটি তেল ডিপো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, কুপিয়ানস্কের দক্ষিণে একাধিক রেলস্টেশনও এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।

সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সারিতে এখন মারাত্মক জনবল সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার ড্রোন-শক্তির আধিপত্যের কারণে ফ্রন্টলাইনের নানা স্থানে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর ফলে তিন বছর ছয় মাসের বেশি সময়ের এই যুদ্ধে রুশ বাহিনী একাধিক জায়গায় অগ্রগতি অর্জন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্বে ২ লাখ টাকার চুক্তিতে সন্ত্রাসী মামুন খুন: ডিবি পুলিশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিখোঁজ কর্মকর্তাকে মাদারীপুরে হোটেল থেকে উদ্ধার, যা বললেন তিনি

ঋণের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে যে দোয়া পড়বেন

আজকের রাশিফল: শুভ ফল পেতে স্ত্রীকে সময় দিন, গোপন আনন্দযোগ

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত