Ajker Patrika

আমি শ্বাস নিতে পারছি না: মার্কিন পুলিশের নির্যাতনে আরেক কৃষ্ণাঙ্গ নিহত

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪: ০১
Thumbnail image

যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের বর্ণবাদী আচরণ নতুন নয়। ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মারা গিয়েছিল পুলিশি নির্যাতনে। সে সময় জর্জ ফ্লয়েড বলেছিলেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’ তাঁর সেই আকুতি বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছিল। এবার একই ধরনের আকুতি জানিয়েও বাঁচতে পারেননি ৫৩ বছরের ফ্র্যাঙ্ক টাইসন। 

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্যান্টনের একটি ক্লাবে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের কাছে থাকা বডি ক্যামেরার ভিডিও থেকে দেখা গেছে, পুলিশ টাইসনকে মাটিতে ঠেসে ধরে তাঁর হাত পিছমোড়া করে বাঁধে। পরে সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে গুরুতর আহত হন টাইসন। সেখান থেকে টাইসনকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তিনি মারা যান। এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যকে বেতনসমেত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। 

গত সপ্তাহের বুধবার প্রকাশিত পুলিশের বডি-ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ক্যান্টন পুলিশের এক কর্মকর্তা একটি সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে অ্যামভেস্ট নামের একটি বারে ফ্র্যাঙ্ক টাইসনকে খুঁজে পান। গত ১৮ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে যায়। 

সেই ঘটনার তদন্তে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাকে বারের বাইরে অবস্থিত এক মোটরসাইকেল আরোহী ইঙ্গিত দেন যে, দুর্ঘটনা ঘটানো ব্যক্তি বারের ভেতরে আছে। বিউ শোয়েনেগ নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার বডি-ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, একজন মহিলা দরজা খুলে বলেন, ‘দয়া করে তাঁকে (ফ্র্যাঙ্ক টাইসন) এখনই এখান থেকে সরিয়ে নিন।’ 

এর পর পুলিশ বারের ভেতরে গিয়ে টাইসনকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে। সে সময় টাইসন বারবার পুলিশকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে একপর্যায়ে পুলিশ তাঁকে বারের মেঝেতে ঠেসে ধরে। এ সময় টাইসন বলতে থাকেন, ‘ওরা (পুলিশ) আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে, কেউ শেরিফকে ডাকো।’ 

পুলিশ সদস্যরা টাইসনকে তাঁর পিঠের ওপর হাঁটু রেখে এবং দুই হাত চেপে ধরে মাটিতে ঠেসে রেখেছিল। এরপরই টাইসন পুলিশকে বলতে থাকেন, তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এপির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সে সময় টাইসন বলেছিলেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’ 

একপর্যায়ে টাইসন অচেতন হয়ে পড়েন। সে সময় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, টাইসন শান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু অপর পুলিশ কর্মকর্তা জবাব দেন, ‘সে সম্ভবত মারা গেছে।’ পরে পুলিশ কর্মকর্তারা দেখতে পান, টাইসন আর নড়াচড়া করছেন না। তখন তাঁরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। 

উল্লেখ্য, চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এপি উল্লেখ করেছে যে, বিগত ১ দশকে পুলিশের নির্যাতন ও অন্যান্য কারণে পুলিশি হেফাজতে যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। যদিও পুলিশের নির্যাতনের কোনো অধিকার মার্কিন আইন দেয় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত