Ajker Patrika

আলোচনায় হার্ভার্ডে চীনা শিক্ষার্থীর সমাবর্তন বক্তব্য, খেপেছে দুই দেশের মানুষই

অনলাইন ডেস্ক
সমাবর্তনে বক্তব্য রাখছে জিয়াং ইউরং। ছবি: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট
সমাবর্তনে বক্তব্য রাখছে জিয়াং ইউরং। ছবি: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট

একে অন্যকে ভুল প্রমাণ করে নয়, বরং পারস্পরিক সহযোগিতায় এগিয়ে যাই আমরা—হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এভাবেই বিভক্ত বিশ্বের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান চীনা শিক্ষার্থী জিয়াং ইউরং। তাঁর, এই ঐক্যের বার্তা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির এখতিয়ার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার নীতি ঘোষণা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তবে চীনা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে একটু বেশি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন ট্রাম্প। অবশ্য গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের ঘোষণা আটকে দিয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে জিয়াং ইউরংয়ের বক্তব্যটি। অনেকেই বলছেন, জিয়াং একটু বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন।

তবে মার্কিন এবং চীনা দুপক্ষই এই সমাবর্তন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করছেন। কেউ কেউ বলছেন, জিয়াংয়ের অভিজাত পারিবারিক পটভূমি চীনা শিক্ষার্থীদের বাস্তব অভিজ্ঞতাকে প্রতিফলিত করে না।

যুক্তরাষ্ট্রে কিছু মহল আবার চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক থাকার অভিযোগ তুলেছে। হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধ করার যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষ একপর্যায়ে হার্ভার্ডের বিরুদ্ধেও সিসিপির সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ তোলে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে’।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন নিয়ে পড়াশোনা করা জিয়াং ইউরং হার্ভার্ডের সমাবর্তনে বক্তব্য দেওয়া প্রথম চীনা নারী। বক্তব্যে তিনি হার্ভার্ডের বৈশ্বিক শ্রেণিকক্ষের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তিনি বলেন, এই ধরনের শ্রেণিকক্ষ তাঁকে এবং তাঁর সহপাঠীদের একে অপরের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে এবং দায়িত্বশীল হতে শিখিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনো যদি একটি বিভাজনে বিশ্বাসী হই, তাহলে ভুলে যাবেন না—যাদের আমরা শত্রু বলে চিহ্নিত করি, তারাও মানুষ। তাদের মানবিক দিকের প্রতি খেয়াল রাখলেই আমরা প্রকৃত অর্থে মানবিক হতে পারি।’

জিয়াং তাঁর স্কুলজীবনের শেষ দুই বছর কাটিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের কার্ডিফ সিক্সথ ফর্ম কলেজে, এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক করেছেন।

তাঁর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ডানপন্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হার্ভার্ডের কড়া সমালোচনা করছেন। অ্যাট দ্য রেট অ্যামিউজ (যার অনুসারীর সংখ্যা ৬ লাখ ৩৯ হাজার) নামের একটি অ্যাকাউন্টের অভিযোগ—জিয়াংকে অর্থায়ন করে সিসিপির পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত একটি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাঁর বাবা একটি এনজিওতে কাজ করেন যা ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কূটনৈতিক সহযোগী’ হিসেবে বিবেচিত।

অন্যদিকে চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, জিয়াংয়ের বাবা যে সংস্থায় কাজ করেন সেটি আসলে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ও ফাউন্ডেশনগুলোর অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যদিও এই দাবিগুলোর কোনোটি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করেনি বিবিসি। চীনা প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবো-তে একজন মন্তব্য করেছেন, বাবার চাকরির সুবাদেই তিনি বৃত্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে পেরেছেন, একই কারণেই তিনি হার্ভার্ডে পৌঁছাতে পেরেছেন।

কেউ কেউ আবার ব্যঙ্গ করে বলেছেন, ‘এমন প্রতিভা যুক্তরাষ্ট্রেই থাকা উচিত। আশা করি, সে বিদেশেই তার আলো ছড়াবে এবং আমাদের থেকে দূরে থাকবে!’

বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়ছেন, যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশেরও বেশি। এদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই চীনা শিক্ষার্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যাংকিংয়ের নামে কারসাজি, ফাঁসছে ফার্স্ট সিকিউরিটি

‘আমার নিরপরাধ ছেলেডারে ডাইক্যা নিয়া ওসি স্যার জেলে ডুকাইয়া দিল’

রাঙামাটির হোটেল থেকে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, ম্যানেজার আটক

চাঁদাবাজদের কথিত তালিকা নিয়ে রাজশাহীতে তোলপাড়, বিএনপি-জামায়াত নেতাদের নাম

দুর্নীতির তদন্ত ঝুলে আছে, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এমডি অবসরে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত