Ajker Patrika

পাঁচ মাসেই বাইডেনের চার বছরের সমান বিমান হামলা চালিয়েছেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ১২: ২১
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

শান্তির বার্তা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা মাতিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ও প্রাণের ক্ষয়ক্ষতির কথা বারবার উল্লেখ করে পূর্ববর্তী সরকারগুলোকে খোঁচা দিয়েছেন। ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন, গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার স্থায়ী সমাধান একমাত্র তাঁর পক্ষেই করা সম্ভব বলে জোর দিয়ে বলে এসেছেন।

কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে কথা বলছে না। গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেছেন তিনি। প্রায় সাত মাসে বলতে গেলে কোনো প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারেননি।

এর মধ্যে এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম পাঁচ মাসেই জো বাইডেনের পুরো মেয়াদে চালানো বিমান হামলার প্রায় সমানসংখ্যক হামলা চালিয়েছেন। সংঘাতের তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থা ‘একলেড’ (Acled)-এর তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচারণায় সামরিক সংঘাত থেকে আমেরিকানদের দূরে রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও ট্রাম্প মার্কিন বিমান হামলা নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছেন।

যুক্তরাজ্যের দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে একলেডের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্প এ পর্যন্ত ৫২৯টি বিমান হামলার নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে পূর্ববর্তী প্রশাসনের (বাইডেন) পুরো চার বছরে ৫৫৫টি হামলা চালানো হয়েছিল। ইয়েমেনে হুতি গোষ্ঠী এবং সোমালিয়ায় জিহাদিদের ওপর ট্রাম্পের হামলা বাইডেনের সময়ের চেয়েও অনেক তীব্র। এ ছাড়া তিনি ইরাক, সিরিয়া এবং সম্প্রতি ইরানের ওপরও হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।

একলেডের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক ক্লিয়োনাড র‍্যালেঘ বিমান হামলাগুলোর তীব্রতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘মার্কিন সামরিক বাহিনী দ্রুতগতিতে আরও কঠোরভাবে এবং কম বাধানিষেধের মধ্যে হামলা চালাচ্ছে।’ ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর এই কঠোর নীতি ‘শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি’ নিশ্চিত করে। এটি ছিল প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের একটি বিখ্যাত উক্তি।

তবে, এই নতুন তথ্য প্রকাশের পর ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (MAGA) সমর্থকগোষ্ঠীর মধ্যে বিদেশে সামরিক হস্তক্ষেপের বিষয়ে বিভেদ দেখা দিয়েছে। যদিও জরিপে দেখা গেছে, মাগা সমর্থকদের ৮৪ শতাংশই ট্রাম্পের হামলায় সমর্থন জানিয়েছেন।

অধ্যাপক র‍্যালেঘ আরও জানান, নতুন তথ্য প্রমাণ করে, ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকা ‘পিছু হটছে না’। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘ট্রাম্পের এই সম্পৃক্ততা কি আমেরিকার যুদ্ধে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী—নাকি বিদেশের মাটিতে হামলাগুলোই তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার উপায়?’

গত পাঁচ মাস ট্রাম্পের বেশির ভাগ হামলা ইয়েমেনে কেন্দ্রীভূত ছিল। তিনি মধ্য মার্চে লোহিতসাগরে বাণিজ্য জাহাজে চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারী ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিমান হামলা তীব্র করেন। এরপর ইরাক, সিরিয়া, সোমালিয়াতেও আইসিস কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। জুনে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঘটনাকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলছে, ট্রাম্প ‘শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি’ নীতি অনুসরণ করছেন। তবে অধ্যাপক র‍্যালেঘ সতর্ক করে দিয়েছেন, এই কৌশলের একটি দাম চোকাতে হয়, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন মিত্র এবং আইন প্রণেতাদের এটি মূল্য দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট যে: যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটছে না। আগ্রাসী সামরিক নীতি নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, আক্রান্ত হওয়ার আগেই হামলা চালাচ্ছে এবং পরে আলোচনার জন্য দরজা খোলা রাখছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস: এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মুকিতুলের বিরুদ্ধে এবার মামলা

রক্ত কেনা যায় না—ইয়েমেনে নিমিশাকে ক্ষমা করতে অস্বীকৃতি মাহদির পরিবারের

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহত ৪ জনের ময়নাতদন্ত হলো না, প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ডিআইজি

বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল: সাবেক এমপিসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ওরে তোমরা কেন মাইরা ফেলাইলা, ও তো কোনো দল করত না— নিহত সোহেলের মায়ের বিলাপ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত