Ajker Patrika

ভারত–মার্কিন বাণিজ্য রুটের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট ইসরায়েল: ট্রাম্প

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪: ৩১
মার্কিন-ভারত বাণিজ্যে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থাকবে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন-ভারত বাণিজ্যে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থাকবে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বৃহত্তম বাণিজ্য রুট গড়তে চান। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই বাণিজ্য রুটের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ভারত থেকে ইউরোপ এবং এর বাইরের দেশগুলোর দিকে প্রসারিত হবে এই বাণিজ্য পথ। ট্রাম্পের মতে, মার্কিন-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার এই পথের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট হলো ইসরায়েল।

ট্রাম্পের প্রস্তাবিত এই রুটের মধ্যে বন্দর, রেলপথ ও সাবমেরিন ক্যাবলে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য এবং নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করবে।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বৈঠক করেন ট্রাম্প-মোদি। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বাড়ানোর চুক্তি সই হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা আমাদের অনেক তেল ও গ্যাস কিনবে। তাদের এটি প্রয়োজন, আর আমাদের এটি আছে।’ অন্যদিকে মোদি বলেন, ‘ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা তেল ও গ্যাসের বাণিজ্যের ওপর গুরুত্ব দেব।’

পাশাপাশি পারমাণবিক শক্তির ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

প্রথম চার বিশ্ব নেতার মধ্যে তৃতীয় স্থানে থাকা মোদি ট্রাম্পকে ‘বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ প্রতি তিনি সম্মান প্রদর্শন করছেন। ট্রাম্প বলেন, মোদি এবং ভারতের সঙ্গে একটি ‘বিশেষ বন্ধন’ অনুভব করেন তিনি। মোদির প্রশংসা করে বলেন, “তিনি আমার চেয়ে অনেক কঠিন ‘ব্যবসায়ী’। ”

চীনের উত্থান রুখতে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ সামরিক সরঞ্জাম—এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে কয়েক মিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে দিল্লিকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করা হবে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যের পথ আরও প্রশস্ত করছি, যাতে অবশেষে ভারতকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেওয়া সম্ভব হয়। এফ-৩৫ কিনতে পারলে ভারত ন্যাটোর মিত্র দেশগুলো, ইসরায়েল ও জাপানের সঙ্গে একটি অভিজাত শ্রেণিতে চলে যাবে।

যদিও মোদির সঙ্গে বৈঠকের আগেই ট্রাম্প নির্দেশ দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের প্রতিদানমূলক শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে—অর্থাৎ মার্কিন রপ্তানি পণ্যের ওপর যেসব দেশ ইতিমধ্যে শুল্ক আরোপ করেছে, যুক্তরাষ্ট্রও তাদের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করবে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমদানির শুল্কের ক্ষেত্রে আমাদের মিত্ররা আমাদের শত্রুদের চেয়েও খারাপ। আমাদের জন্য এটি ছিল খুবই অন্যায্য। সবাই যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধা নিয়েছে।’

ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত মার্কিন মোটরসাইকেলের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, অথচ আমরা ভারতীয় মোটরসাইকেলের ওপর মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ শুল্ক নিই।’

অবশ্য ভারত ইতিমধ্যে ট্রাম্পের অভিবাসন কড়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে ১০০ বন্দী অভিবাসী নিয়ে একটি মার্কিন সামরিক উড়োজাহাজ গ্রহণ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে তারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন। তিনি দাবি করেন, মানব পাচারকারীরা অবৈধ অভিবাসী ভারতীয়দের প্রলুব্ধ করছে।

অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে তৈরি কোয়াডের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে এই বছর ভারত সফরে আসতে পারেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাণিজ্য রুট গড়তে এই সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত