Ajker Patrika

‘নিজের ডুবে যাওয়ার নাটক’ সাজিয়ে ইউরোপে পালালেন এক মার্কিন কায়াকার

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
মার্কিন কায়াকার রায়ান বর্গওয়ার্ট। ছবি: সিএনএন

যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের বাসিন্দা রায়ান বর্গওয়ার্ট। সম্প্রতি এই কায়াকার নিজের ডুবে যাওয়ার নাটক সাজিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, রায়ান বর্তমানে পূর্ব ইউরোপের কোথাও জীবিত আছেন। তদন্তকারীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগও হয়েছে। তবে তিনি তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তানের কাছে ফিরে আসবেন কি না, সেই বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন।

এ বিষয়ে উইসকনসিনের গ্রিন লেক কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ের চিফ ডেপুটি ভ্যান্ডে কোল্ক বলেছেন, ‘ভালো খবর হলো, আমরা জানি তিনি জীবিত এবং সুস্থ আছেন। তবে খারাপ খবর হলো, আমরা জানি না ঠিক কোথায় তিনি আছেন এবং তিনি এখনো দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেননি।’

৪৪ বছর বয়সী রায়ান গত ১২ আগস্ট নিখোঁজ হন। সে দিন তিনি গ্রিন লেকে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। তাঁর বাড়ি থেকে গ্রিন লেক প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে। এরপর থেকেই তাঁকে উদ্ধারের জন্য অনেক বড় ধরনের উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু সাত সপ্তাহ ধরে লেকের তলদেশ চষে ফেললেও উদ্ধারকারীরা তাঁর হদিস পায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের একপর্যায়ে কর্মকর্তারা তথ্য পেতে শুরু করেন—রায়ান কানাডা হয়ে ইউরোপে পালিয়ে গেছেন।

গত ১১ নভেম্বর তদন্তকারীরা রায়ানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হন। তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন কথা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ভ্যান্ডে কোল্ক। তবে রায়ান এখনো তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

তদন্তকারীদের রায়ান জানিয়েছেন, পরিকল্পনা করে তিনি কায়াক ও শিশুদের একটি বহনযোগ্য নৌকা নিয়ে পানিতে নেমেছিলেন। পরে কায়াক উল্টে দিয়ে এবং নিজের ফোনটি পানিতে ফেলে দিয়ে সঙ্গে রাখা বাতাসের নৌকাটি নিয়ে তীরে ফিরে আসেন। পরে তিনি সারা রাত ধরে একটি সাইকেলে করে প্রায় ৮০ মাইল দূরে ম্যাডিসনে যান। সেখান থেকেই বাসে করে ডেট্রয়েটে পৌঁছান। পরে কানাডা হয়ে ইউরোপে পালিয়ে যান।

গ্রিন লেক শেরিফ মার্ক পোডল জানিয়েছেন, পালানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গিয়ে রায়ান তাঁর বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করেন। ইমেইল ঠিকানাও বদলে ফেলেন। আর উজবেকিস্তানের এক নারীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন।

তদন্তকারীরা শেষ পর্যন্ত এক রুশ ভাষাভাষী নারীর মাধ্যমেই রায়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। তবে এই নারী উজবেকিস্তানের সেই নারী কি না, বা রায়ান এখন তাঁর সঙ্গেই আছেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রায়ানের বিষয়ে আরও অনুসন্ধান করতে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পৌনে চার লাখ ডলারের একটি জীবনবিমা করেছিলেন তিনি। তাঁর কিছু হয়ে গেলে এই টাকা পরিবার পাবে, এমন শর্তেই বিমাটি করা হয়েছিল।

তবে কেন তিনি তাঁর পরিবার ও পরিচিত জীবন ত্যাগ করে পালিয়ে গেছেন, সেই রহস্য এখনো উদ্‌ঘাটন হয়নি। তদন্তকারীরা রায়ানের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত করার অভিযোগ আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর কারণে অন্তত ৪০ হাজার ডলার খরচ হয়েছে কর্তৃপক্ষের।

রায়ান অবশ্য আশা করেছিলেন, তাঁর জন্য কর্তৃপক্ষ এত কিছু করবে না। কয়েক দিনের মধ্যেই অনুসন্ধান কার্যক্রম থেমে যাবে। কিন্তু এই বিষয়ে গ্রিন লেক কাউন্টির ডেপুটি চিফ ভ্যান্ডে কোল্ক বলেন, ‘তিনি (রায়ান) ভুল শেরিফ এবং ভুল বিভাগ বেছে নিয়েছেন।’

ভ্যান্ডে কোল্ক বলেন, ‘ক্রিসমাস প্রায় চলে এসেছে। তাঁর সন্তানদের জন্য এর চেয়ে ভালো উপহার আর কিছুই হতে পারে না, যদি তিনি তাদের সঙ্গে ক্রিসমাস উদ্‌যাপন করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত