Ajker Patrika

মূল্যস্ফীতি: যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানের পেছনেই ব্যয় ৩ কোটি টাকার বেশি

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ৫০
মূল্যস্ফীতি: যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানের পেছনেই ব্যয় ৩ কোটি টাকার বেশি

ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি সবকিছুকেই ব্যয়বহুল করে তুলেছে। এ মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি খাত সন্তানের লালন-পালন। মূল্যস্ফীতির কারণ সন্তান লালন-পালনের পেছনে ব্যয় বেড়েছে অনেক।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের ২০২১ সালের হিসাব অনুসারে, কনিষ্ঠ সন্তানের জন্ম থেকে হাইস্কুল পর্যন্ত দুই সন্তানসহ মধ্যম আয়ের দম্পতির খরচ হয় ৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৫ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) করা ২০১৭ সালের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই হিসাবটি তৈরি করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়েছিল, মধ্যম আয়ের দম্পতির একজন সন্তানের পেছনে জন্ম থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত ব্যয় হয় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬১০ ডলার।

 ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী একটি শিশুর জন্য খাদ্য, বাসস্থান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যয়ের ওপর ভিত্তি করে এই হিসাব করা হয়েছে। তবে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ অন্তর্ভুক্ত নয়।

ব্রুকিংস দেখেছে যে ২০২২ সালের রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি নাটকীয়ভাবে সেই খরচ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। মূল্যস্ফীতির এই ঊর্ধ্বগতি এখনো অব্যাহত রয়েছে। ফলে সন্তান লালন-পালনের ব্যয় যে ব্রুকিংসের ধারণাকেও অতিক্রম করে গেছে তা বলা বাহুল্য।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন এই হিসাবটি প্রথমে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত হয়।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনে অর্থনীতির সিনিয়র ফেলো ইসাবেল সহিল বলেন, ‘নতুন হিসাবের ভিত্তিতে ধারণা পাওয়া যায় যে যখন আপনি একটি পরিবার শুরু করেন বা পরিবারের সদস্যসংখ্যা বাড়ান, তখন আপনাকে অন্য কিছু খাতে খরচ কমিয়ে আনতে হবে।’ ইসাবেল ব্রুকিংসের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট মরগান ওয়েলশের সঙ্গে গবেষণাপত্রটি লিখেছেন।

পরিবারের জন্য সবচেয়ে বড় খরচ এবং শিশু লালন-পালনের মোট খরচের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী হচ্ছে আবাসন। ২০২১ সালের জুলাই মাসে বাড়ির গড় দাম এর আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৮০০ ডলার। ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে জুনে যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ শতাংশ মহানগর এলাকায় বাড়ির দাম বেড়েছে দুই অঙ্কে।

শিশুকে লালন-পালনের ক্ষেত্রে যে খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খরচ হয়, তা হলো খাদ্য। ইউএসডিএর হিসাবে, সন্তানকে লালন-পালনের ক্ষেত্রে মোট ব্যয়ের ১৮ শতাংশ হয় শুধু খাদ্যের পেছনে।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে মুদিসামগ্রীর দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ, যা ১৯৭৯ সালের পর এক বছরে সবচেয়ে বেশি মূল্যবৃদ্ধি। মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রায় প্রতিটি মুদিসামগ্রীরই দাম বেড়েছে। ডিমের দাম বেড়েছে ৩৮ শতাংশ, মুরগির মাংসের দাম বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ এবং দুধের দাম বেড়েছে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

ইসাবেল বলেন, সন্তান লালন-পালন ব্যয়ের অনুমানটি করতে গিয়ে মূল্যস্ফীতি ভবিষ্যতে কেমন হবে সে সম্পর্কে আগেই আরেকটি ধারণা তৈরি করতে হয়েছে। অনুমানটি করতে হয়েছে ২০১৫ সালে জন্ম নেওয়া শিশুদের উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে। সুতরাং, ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনকে মূল্যস্ফীতির অনুমান করতে হয়েছে সেই সব শিশুর কথা বিবেচনায় রেখে যাদের বয়স এরই মধ্যে সাত বছর হয়ে গেছে।

ইউএসডিএ ২০১৫ সাল-পরবর্তী ২ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি হিসাব করে। তবে ঐতিহাসিক প্রবণতা বিবেচনায় নিয়ে ইসাবেলের নতুন অনুমানটি ৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ধরে করা হয়েছে। ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পরিস্থিতি পরবর্তী প্রবণতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। ১৯৭৯-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) ওই সময় বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্ক থেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেয়। সেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অন্তত এক দশক সময় লেগেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত