Ajker Patrika

ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করায় ইসরায়েলের ওপর আক্রমণ শতাধিক এনজিওর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজার একটি ত্রাণকেন্দ্রে ত্রাণপ্রত্যাশীদের ভিড়। ছবি: আনাদোলু
গাজার একটি ত্রাণকেন্দ্রে ত্রাণপ্রত্যাশীদের ভিড়। ছবি: আনাদোলু

গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের নতুন বিধিনিষেধের কারণে জীবন ধারণের অতি প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তা গাজায় ঢুকতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলেছে শতাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন। সংস্থাগুলোর দাবি, এসব বিধিনিষেধের ফলে জর্ডান ও মিসরের গুদামঘরে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী আটকে আছে, অন্যদিকে খাবারের অভাবে অপুষ্টিতে ভুগে মারা যাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনগুলো জানায়, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্য, ওষুধ, পানি ও অস্থায়ী আশ্রয়সামগ্রীবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে পারছে না; নতুন নীতিমালার অজুহাতে এসব পণ্য প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে কোনো বাধা নেই ইসরায়েল এমন দাবি করলেও, বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। গত ২ মার্চের পর থেকে অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজায় ত্রাণবাহী একটি ট্রাকও গাজায় পাঠাতে পারেনি। বরং অনুমোদন নেই উল্লেখ করে বহু সংস্থার আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) ও অক্সফামের মতো দীর্ঘদিন ধরে গাজায় কাজ করা সংস্থাগুলোকেও নতুন নিবন্ধন ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের শর্ত দেখিয়ে ‘অননুমোদিত’ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে খাবার তো বটেই, হাসপাতালগুলোতে তৈরি হয়েছে মৌলিক চিকিৎসাসামগ্রীর সংকট।

অক্সফামের পলিসি লিড বুশরা খালিদি জানান, তাদের কাছে এখন প্রায় ২৫ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ত্রাণ সহায়তা রয়েছে, যা ইসরায়েলি বাধার কারণে গাজার মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের জরুরি সমন্বয়ক আইতোর জাবালগোগিয়াজকোয়া বলেন, ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত বিতরণব্যবস্থা খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ভোগান্তি ও দুর্দশাকে পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘায়িত করছে। এই বিতরণকেন্দ্রগুলোতে অমানবিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে ত্রাণ নিতে আসা অভুক্ত মানুষকে। চলতি বছরের মে থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে, যার মধ্যে ৮৫৯ জন নিহত হয়েছে বিতর্কিত সংগঠন জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে।

সংস্থাগুলো ইসরায়েলের ‘ত্রাণ সহায়তাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ ও ‘আমলাতান্ত্রিক বাধা’ অবিলম্বে বন্ধ করে শর্তহীনভাবে গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রবাসীবিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি জানান, যে সংস্থা ইসরায়েলের গণতান্ত্রিক চরিত্র অস্বীকার করে বা তার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়, তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হতে পারে।

এই অভিযোগ এমন সময়ে উঠল, যখন ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটি দখলে নতুন করে অভিযান শুরু করেছে, যা শহরটির প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষকে দক্ষিণের তথাকথিত ‘সংকুলান অঞ্চলে’ ঠেলে দেবে। অভিযানে সম্ভাব্য ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এরই মধ্যে ইসরায়েলের এমন পরিকল্পনার নিন্দা করেছে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত