Ajker Patrika

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর দ্বিতীয় বিমান জব্দ করল যুক্তরাষ্ট্র

সান্তো ডমিঙ্গোতে মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতেই বিমানটির দরজায় জব্দ করার নোটিশ লাগানো হয়। ছবি: সিএনএন
সান্তো ডমিঙ্গোতে মার্কো রুবিওর উপস্থিতিতেই বিমানটির দরজায় জব্দ করার নোটিশ লাগানো হয়। ছবি: সিএনএন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের মালিকানাধীন একটি বিমান জব্দ করার ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মাদুরোর বিমান জব্দের এটি দ্বিতীয় ঘটনা।

শুক্রবার সিএনএন জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডমিনিকান রিপাবলিকে অবস্থানকালে ভেনেজুয়েলার প্রথম বিমানটি জব্দ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। জব্দ করা দ্বিতীয় বিমানটিও ডমিনিকান রিপাবলিকেই অবস্থান করছিল।

ডমিনিকান রিপাবলিকে নিযুক্ত মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা এডউইন লোপেজ জানান, উভয় বিমানই ভেনেজুয়েলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হতো। গত সেপ্টেম্বরের ঘটনায় জব্দ করা বিমানটি বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ফ্লোরিডায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার জব্দ হওয়া ড্যাসল্ট ফ্যালকন ২০০ ইএক্স মডেলের দ্বিতীয় বিমানটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল। এটি ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডমিনিকান রিপাবলিকে আটকে ছিল। দেশটির রাজধানী সান্তো ডমিঙ্গোতে মার্কো রুবিও নিজেই বিমানটির দরজায় জব্দ করার নোটিশ লাগানোর মুহূর্তটি প্রত্যক্ষ করেন।

মার্কিন বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালে বিমানটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ কিনেছিল। তবে পরবর্তীতে ওই কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নানা উপায়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করা হয়েছিল। এটি মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও নিষেধাজ্ঞা আইন লঙ্ঘন করেছে।

এডউইন লোপেজ জানিয়েছেন, মার্কিন দূতাবাসের নেতৃত্বে বিমানটি ঠিক করার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল এবং এবার সেটি জব্দ করা হলো। বিমানটি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ফ্লোরিডার মায়ামিতে নিয়ে যাওয়া হবে।

লোপেজ আরও জানান, এই দুটি বিমান জব্দ করার ফলে ভেনেজুয়েলার বিমানবাহিনীর সব সদস্যের তথ্য, তাঁদের পরিচয়, ভ্রমণের রেকর্ড ও অর্থ সংক্রান্ত নথিপত্র যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এসেছে।

তিনি বলেন, ‘এতে থাকা ট্রান্সপন্ডারগুলোর মাধ্যমে আমরা পাইলটদের ব্লক করা তথ্যও পুনরুদ্ধার করতে পারব।’

ভেনেজুয়েলার এই বিমান দুটি গত পাঁচ বছর ধরে মার্কিন তদন্ত সংস্থার নজরদারিতে ছিল। ২০২০ সালে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, জব্দ হওয়া বিমানটি ২০১৯ সালে মাদুরোর ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে ওপেক সম্মেলনে নিয়ে গিয়েছিল।

গত সেপ্টেম্বরে প্রথম বিমানটি জব্দ করার সময় মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড জানিয়েছিলেন, ওই বিমানটি ১৩ মিলিয়ন ডলারে ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছিল এবং মাদুরোর প্রশাসনের ব্যবহারের জন্য চোরাচালান করা হয়েছিল।

ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্তো আলভারেজ জানিয়েছেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ বিমানটি জব্দের পর সেখানে মুদ্রা পাচার, অবৈধ বাণিজ্য ও দুর্নীতির প্রমাণ অনুসন্ধান করেছে।

ভেনেজুয়েলা সরকার গত সেপ্টেম্বরে বিমান জব্দের ঘটনাকে ‘ডাকাতি’ আখ্যা দিয়েছিল এবং ওয়াশিংটনকে মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক আচরণের অভিযোগ করেছিল।

মার্কিন প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে মাদুরোর শাসনের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার তেল ও গ্যাস খাতে নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করে। কারণ মাদুরো সরকার একটি মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

২০২০ সালে মার্কিন বিচার বিভাগ নিকোলাস মাদুরো ও তাঁর ১৪ জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাদক পাচার, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনে। তবে মাদুরো সরকার সব অভিযোগ অস্বীকার এবং মার্কিন হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে।

দ্বিতীয় বিমান জব্দের ঘটনায় সিএনএন ভেনেজুয়েলা সরকারের মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেছে। তবে সেখান থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত