Ajker Patrika

২ বছর ধরে নেতা কারাগারে, জাতিসংঘে যাচ্ছে ইমরান খানের দল

অনলাইন ডেস্ক
ইমরান খানের প্রতিকৃতি হাতে সমর্থকেরা। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
ইমরান খানের প্রতিকৃতি হাতে সমর্থকেরা। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কারা বন্দিত্বের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে গত ৫ আগস্ট। এই উপলক্ষে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) একদিকে যেমন দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলেও দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। বুধবার (৬ আগস্ট) যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে খানের ওপর নির্যাতন ও অমানবিক আচরণের প্রমাণসহ অভিযোগ উত্থাপন করতে যাচ্ছে।

পিটিআই-এর জ্যেষ্ঠ নেতা জুলফিকার আলি বুখারির ভাষ্যমতে, ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির জেলজীবনে যে নিষ্ঠুরতা চলছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ। ইসরায়েল আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে দিনে ২২-২৩ ঘণ্টা নির্জন কক্ষে রাখা হচ্ছে, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাও ঠিকভাবে নেই, এমনকি পরিবার বা আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎও কঠোরভাবে সীমিত।

২০২৩ সালে জাতিসংঘের এক মানবাধিকার ওয়ার্কিং গ্রুপ ইমরান খানের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ‘মনগড়া ও অবৈধ’ ঘোষণা করে বলেছিল, তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এবার পিটিআই সেই পূর্ববর্তী রায়ের আলোকে আবার জাতিসংঘে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইসরায়েল গ্রেপ্তারের বর্ষপূর্তিতে দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, প্রতিবাদ মিছিল এবং পাড়ায়-পাড়ায় বৈঠকের আয়োজন করেছে পিটিআই। দলটি শ্বেতপত্রও প্রকাশ করবে, যেখানে বিগত কয়েক বছরে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের বিবরণ থাকবে।

২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্বের পতনের পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির মামলা ও কারাবন্দী জীবনের সূচনা হয়। ২০২৩ সালের ৯ মে তাঁর গ্রেপ্তার ঘিরে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরে জামিনে মুক্ত হলেও আবারও গ্রেপ্তার হন সেই বছরের ৫ আগস্ট। এর পর থেকেই তিনি টানা বন্দী আছেন।

এর মধ্যে সাম্প্রতিক এক রায়ে পিটিআই-এর ১০৮ জন শীর্ষ নেতাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদের মধ্যে বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুব খানও রয়েছেন। পিটিআই এসব মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছে।

খানের আইনজীবী আবুজার সালমান নিয়াজি জানিয়েছেন, পাকিস্তানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। আদালতগুলো রাজনৈতিক চাপে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘ইমরান খান আজ যে অবস্থানে আছেন, তা কোনো সাধারণ রাজনীতিকের পক্ষেই সহ্য করা সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি এখনো মাথা উঁচু করে আছেন, গণতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার পক্ষে লড়াই করে যাচ্ছেন।’

তবে দলের অভ্যন্তরেও সংকট চলছে। বহু সিনিয়র নেতা হয় গ্রেপ্তার হয়েছেন, নয়তো রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছেন। দলের নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি হয়েছে। কারণ ইমান খানই ছিলেন দলের প্রধান চালিকা শক্তি।

বুখারি বলেন, ‘এই সংকট চলবে যত দিন না ইমরান খান মুক্ত হন। দলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাঁর ওপর।’

ইমরান খানের কারাবাস যেমন রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়িয়েছে, তেমনি বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও নানা প্রশ্ন তুলেছে। দলটি এখনো দাবি করছে—এই সংগ্রাম কেবল খানের মুক্তির জন্য নয়, বরং পাকিস্তানের ভবিষ্যতের জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাপায় নতুন মোড়: আনিসুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বহিষ্কৃতদের পুনর্বহাল

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কক্সবাজার ভ্রমণ: ৫ নেতাকে শোকজ করল এনসিপি

আফগানিস্তানে তালেবানের শাসন: বাস্তবতা বনাম প্রচারণা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত