Ajker Patrika

‘আমি মৃত্যুকে দেখেছি’

অনলাইন ডেস্ক
ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলির আঘাতের পর মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরা আল-ইওয়াদি। ছবি: সংগৃহীত
ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলির আঘাতের পর মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফেরা আল-ইওয়াদি। ছবি: সংগৃহীত

মোহাম্মদ আল-ইওয়াদি। গাজার ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ তাঁর চারপাশে কেবল মৃতদেহ আর আহত মানুষ দেখতে পাচ্ছিলেন। গত রোববার সকালে তিনি হাজারো ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনির সঙ্গে গাজা সিটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আল-সুদানিয়া এলাকায় যাচ্ছিলেন। সেখানে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ত্রাণের ট্রাক আসার কথা ছিল। আল-ইওয়াদি ও অন্যান্যদের জন্য দীর্ঘকাল বঞ্চিত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়ার এক বিরল সুযোগ হাজির হয়েছিল সেখানে।

প্রত্যক্ষদর্শী ইওয়াদি জানান, মানুষ যখন ট্রাকের কাছে জড়ো হওয়ার পর, ইসরায়েলি সেনারা তাদের ঘিরে ফেলে সরাসরি তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। লন্ডন থেকে পরিচালিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে তিনি বলেন, ‘তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) ট্যাংক থেকে আমাদের ওপর ব্যাপক গুলি চালিয়েছে।’

ইসরায়েলি সামরিক যানগুলো ভিড়ের মধ্যে দিয়ে কীভাবে সাধারণ মানুষকে চাপা দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছিল—সেই নির্মম অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে আল-ইওয়াদি।

রোববারের এই হামলার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ইহাব আল-জেইন। তিনি বলেন, মানুষ যে তীব্র ক্ষুধা ও পানির অভাবে ভুগছে, তা তাদের তথাকথিত মানবিক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলতে বাধ্য করছে। হতাশ হয়ে তিনি বলেন, তিনি শেষবার আটা পেয়েছিলেন এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে, সম্ভবত দুই সপ্তাহ হয়ে গেছে।

ইহাব আল-জেইন বলেন, ‘আমরা কী করব? এক কেজি আটার জন্য আমরা মৃত্যুর মুখে ছুটে যাচ্ছি এবং এমনকি তারপরও সব সময় কাজ হয় না। কখনো কখনো আমরা কিছুই না নিয়ে ফিরে আসি। আমরা মরি এবং খালি হাতে বাড়ি ফিরি।’ তিনি জানান, তিনি এর আগে একাধিকবার চেষ্টা করলেও ত্রাণকেন্দ্র থেকে কখনো কিছু সংগ্রহ করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘এবার আল্লাহর রহমত ছিল। আমি নিজের চোখে মৃত্যু দেখেছি এবং কোনোভাবে বেঁচে ফিরেছি।’

জেইন তাঁর ২০ সদস্যের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্বে আছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে—তাঁর বাবা-মা, বোন, তাঁর প্রয়াত ভাইয়ের দুই সন্তান, নিজের স্ত্রী এবং সন্তানরা রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তা কেবল আল্লাহই জানেন।’

জেইন জানান, তিনি আর এই বিতরণ কেন্দ্রে ফিরে যাবেন না। তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষুধায় মারা যাব। এ ছাড়া আর কী-ই বা করতে পারি? সেখানে গিয়ে খুন হব? আমি আর ফিরে যাব না। বাচ্চাদের ক্ষুধায় মরতে দাও, এভাবে তাদের মরতে দেখার চেয়ে তা ভালো।’ তিনি বলেন, ‘দেড় ঘণ্টা ধরে আমার মাথার ওপর দিয়ে গুলি উড়েছে। গোলা ও গুলিবর্ষণ হয়েছে। আমি কীভাবে বেঁচে ফিরলাম তা কেবল আল্লাহই জানেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বেনজীরের এক ফ্ল্যাটেই ১৯ ফ্রিজ, আরও বিপুল ব্যবহার সামগ্রী উঠছে নিলামে

ছেলের লাশ পেতে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়েছে

ই-মেইলে একযোগে ৫৪৭ ব্যাংক কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত, পুনর্বহালের দাবি

সচিবালয়ে শিক্ষার্থীদের মারধরের প্রতিবাদে সিপিবি-বাসদের ওয়াকআউট

এইচএসসির স্থগিত ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের পরীক্ষা একই দিনে: শিক্ষা উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত