Ajker Patrika

ইসরায়েলকে ঠেকাতে প্রস্তুত হিজবুল্লাহ

আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯: ৫২
ইসরায়েলকে ঠেকাতে প্রস্তুত হিজবুল্লাহ

ইসরায়েল যদি লেবাননে স্থল অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা মোকাবিলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে হিজবুল্লাহ। দলটির উপপ্রধান শেখ নাইম কাশেম গতকাল সোমবার অজ্ঞাত স্থান থেকে দেওয়া এক ভিডিও ভাষণে এ ঘোষণা দিয়েছেন। 

শেখ নাইম কাশেমের ভাষায়, ‘আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। তারা যদি স্থলপথে আক্রমণ করে, তবে আমাদের প্রতিরোধ বাহিনীও লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকবে। ইসরায়েল তার লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে না।’ 

শেখ নাইম কাশেম বলেন, ‘লেবাননজুড়ে গণহত্যা চালাচ্ছে দখলদার বাহিনী। হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধের বদলে তারা গণহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। বেসামরিক নাগরিক, অ্যাম্বুলেন্স, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপরও হামলা চালানো হচ্ছে। ইসরায়েলকে সীমাহীন সামরিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও এই অপকর্মের অংশীদার। তবে ২০০৬ সালের মতো এবারও আমরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিজয়ী হব।’ 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গত কয়েক দিনের হামলায় হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতা আক্রান্ত হয়নি বলেও জানান শেখ নাইম কাশেম। তিনি বলেন, গত শুক্রবার হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পরও তাঁর দলের অভিযান একই গতিতে চলছে, বরং কিছু ক্ষেত্রে গতি বেড়েছে। 

এদিকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলার কারণে দেশজুড়ে ১০ লাখের মতো মানুষ ইতিমধ্যেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈরুতে নাসরুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর রোববারও বিমান হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে আরও রকেট নিক্ষেপ করেছে হিজবুল্লাহ। 

ইসরায়েল জানিয়েছে, লেবাননের পাশাপাশি তারা ইয়েমেনের হুতি যোদ্ধাদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেও ‘বড় ধরনের’ বিমান হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে রোববার তাদের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার আলী কারাকি এবং ধর্মীয় নেতা শেখ নাবিল কাউক ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর (আইডিএফ) চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভি বলেন, ‘হিজবুল্লাহকে আমাদের কঠিনভাবে আঘাত করা দরকার।’ 

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, বিমান হামলার কারণে বৈরুত ও দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। 

আশ্রয়শিবির ও হাসপাতালগুলোয় মানুষের চাপ বাড়ছে। ২৫ বছরের আয়ুব বিবিসিকে জানান, ছয় সদস্যের পরিবারের সঙ্গে তাঁকে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তাহউইতাত আল ঘাদির শহরতলির বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। কেননা, সেখানে অবস্থান করাটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। তাঁর বাড়ির আশপাশে সব ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি এখন বৈরুতের আরেকটি বাড়িতে আরও ১৬ জনের সঙ্গে অবস্থান করছেন। 

আয়ুবের ভাষায়, ‘আমরা শুক্রবার বাড়ি ছেড়ে আসি এবং যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। রাত ২টা পর্যন্ত রাস্তায় ছিলাম। এরপর একদল ব্যক্তি আমাদের একটি নির্মাণাধীন আবাসিক ভবনে নিয়ে আসেন। খাবার ও পানি আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।’ 

৩৪ বছরের সারা তোহমাজ পেশায় সাংবাদিক। বিবিসিকে তিনি বলেন, গত শুক্রবার বৈরুতের কাছে তাঁর বাড়ি থেকে তাঁর মা, দুই সহোদরসহ বেরিয়ে আসতে হয়েছে। তিনি জানান, গাড়িতে সিরিয়া হয়ে জর্ডানে আসতে তাঁদের ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে। 

সারা তোহমাজ বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা ভাগ্যবান যে জর্ডানে আমাদের থাকার মতো জায়গা আছে। সেখানে মায়ের দিকের আত্মীয়রা আছেন। পরে কী হবে জানি না। আবার কখন দেশে ফিরতে পারব, তা-ও জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত