Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ায় কেন বছরে দুবার বড়দিন উদ্‌যাপন হয়

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৫, ২১: ২৬
জুলাই অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় উৎসবের মাস। ছবি: বিবিসি
জুলাই অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় উৎসবের মাস। ছবি: বিবিসি

অস্ট্রেলিয়ায় বড়দিন উদ্‌যাপিত হয় বছরে দুবার। একবার ডিসেম্বরের প্রচলিত দিনে, আরও একবার দেশটির শীতের মাস জুলাইয়ে। ‘ক্রিসমাস ইন জুলাই’ এখন শুধু একটি ট্রেন্ড নয়, এটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিবিসি জানিয়েছে, বাড়তি একটি বড়দিন উদ্‌যাপনের রীতি অস্ট্রেলিয়ায় সূচনা হয়েছিল ১৯৮০ সালে। সেবার প্রথমবারের মতো দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলসের ব্লু মাউন্টেনস অঞ্চলের একটি হোটেলে এই বড়দিন উদ্‌যাপিত হয়।

শীতার্ত সেই রাতে প্রচুর বরফ ঝরছিল। ঠিক তখনই ‘মাউন্টেন হেরিটেজ’ নামের সেই হোটেলে প্রবেশ করেন ছয় আইরিশ ভ্রমণকারী। তাঁদের দেখে হোটেলের মালিক গ্যারি ক্রকেট ভাবলেন—এই লোকদের জন্য একটি শীতকালীন বড়দিন আয়োজন করলে কেমন হয়!

যেমন ভাবলেন গ্যারি, তেমনই হলো সেই রাতে। সাজানো হলো ক্রিসমাস ট্রি, করা হয় আলোকসজ্জা, রান্না করা হয় বিফ, টার্কি, পর্ক, কুমড়ার স্যুপ আর ব্রিটিশ ঐতিহ্যবাহী প্লাম পুডিং।

রাতটি পরিণত হয় এক দুর্দান্ত পার্টিতে, চলে ভোররাত ৩টা পর্যন্ত। এরপর প্রতিবছর হোটেলটিতে ‘জুলাই বড়দিন’ উদ্‌যাপন শুরু হয় এবং দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় সারা দেশে। এমনকি বিদেশ থেকেও অতিথিরা আসতে শুরু করেন।

আজকের দিনে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি শহরেই জুলাই মাসে মানুষ বড়দিনের মতো করে উৎসব করেন। রেস্তোরাঁগুলোতে পাওয়া যায় বিশেষ ‘ক্রিসমাস মেনু’, ঘরবাড়িও সাজান অসংখ্য মানুষ, কেউ আবার দেন উপহার। সান্তাও হাজির হন যথারীতি!

বিশেষ এই বড়দিন উপলক্ষে নিউক্যাসলের ৩৭ বছর বয়সী জোশুয়া বন্ধুদের জন্য প্রস্তুত করেন ছয় পদের রাতের খাবার। তিনি বলেন, ‘আমি তো চাই বছরে দশবার বড়দিন হোক!’

ফিলিপিনো-অস্ট্রেলিয়ান নিল ফ্যারো বলেন, ‘শীতের বড়দিন অনেক বেশি উৎসবমুখর মনে হয়। আর জুলাই মানেই শীতের মাঝামাঝি।’

শুধু এসবই নয়, বাড়তি বড়দিন উপলক্ষে সিডনির ঐতিহাসিক ‘দ্য রকস’ এলাকায় আয়োজন করা হয় দুই সপ্তাহব্যাপী ক্রিসমাস মার্কেট। ইউরোপীয় কাঠের কটেজ, নকল বরফ, গেজানো ওয়াইন আর গলানো র‍্যাকলেট চিজের গন্ধে ভেসে যায় সেই মার্কেট।

প্রথমে একটি হোটেলে চালু হলেও জুলাইয়ের বড়দিন এখন পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে পালিত হয়। ছবি: বিবিসি
প্রথমে একটি হোটেলে চালু হলেও জুলাইয়ের বড়দিন এখন পুরো অস্ট্রেলিয়া জুড়ে পালিত হয়। ছবি: বিবিসি

এমনকি কেএফসিও ‘ক্রিসমাস ইন জুলাই’-এর প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে আজকাল! তবে এই উৎসব প্রথম যিনি শুরু করেছিলেন, সেই গ্যারি ক্রকেট মনে করেন, আসল বিষয়টি হচ্ছে—বন্ধুত্ব, ভালোবাসা আর আন্তরিক মিলন। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের বড়দিনে থাকে শান্তি, শীতের উষ্ণতা ও প্রিয়জনদের সঙ্গে একান্ত মুহূর্ত কাটানোর সুযোগ। ডিসেম্বরের বড়দিন যেমন দায়বদ্ধতায় জর্জরিত, জুলাইয়েরটা তেমন নয়।’

ব্যতিক্রমী এই উৎসব তাই অনেকের কাছে বাস্তব বড়দিন থেকেও প্রিয় হয়ে উঠেছে। অস্ট্রেলিয়ায় বড়দিন এখন শুধু ডিসেম্বরের নয়, জুলাইয়েরও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পত্রিকায় নিবন্ধ লেখার পর বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাকে ফেরত নেওয়ার অনুরোধ কাতারের

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার অগ্রগতি জানাবে ইউজিসি

বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করল যুক্তরাষ্ট্র

শেখ হাসিনার ‘ফেরার পরিকল্পনা’ ঘিরে গোপন বৈঠক, গ্রেপ্তার ২২ নেতা-কর্মী কারাগারে

পর্যটকদের জন্য দ্বার খুলে দিচ্ছে বিশ্বের অন্যতম নিঃসঙ্গ একটি দেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত