Ajker Patrika

লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন: উত্তেজনা যেভাবে রূপ নিল যুদ্ধে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ২৮
Thumbnail image

লেবাননে কয়েক দিন ধরেই বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর মধ্যেই নতুন করে দেশটিতে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি সেনারা। গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে লেবাননের ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে’ স্থল অভিযান শুরুর কথা জানায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বিবাদের জের ধরেই পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে। 

কিন্তু ঠিক কীভাবে দুই পক্ষের উত্তাপ যুদ্ধে রূপ নিল,  তার একটি ব্যাখ্যা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহ হত্যাকাণ্ডই এ যুদ্ধের একমাত্র কারণ নয়; বরং এর জন্য আরও পেছনে তাকাতে হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবানন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। হামলার মুখে একপর্যায়ে লেবানন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এখন ওই বাসিন্দাদের আবারও সেখানে ফেরাতে চায় তারা।

দৃশ্যত হিজবুল্লাহ অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে পড়লেও ইসরায়েলে তাদের রকেট হামলা এখনো থামেনি। এসব হামলায় ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এই আক্রমণের শিকড় উপড়ে ফেলতে চায় তেল আবিব। অন্যদিকে চাপের মুখে থাকলেও হিজবুল্লাহ বলছে, তারা এখনো ইসরায়েলের যেকোনো আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।

বৈরুতে বিবিসির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদদাতা হুগো বাচেগার মতে, লেবাননে ইসরায়েল যে স্থল অভিযান চালাবে, তা তাদের গত কয়েক দিনের কর্মকাণ্ড থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। এর আগে ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে মাসব্যাপী যুদ্ধ চালিয়েছিল ইসরায়েল। এখন সবার প্রত্যাশা, পরিস্থিতি যেন অন্তত সেই পর্যায়ে না পৌঁছায়।

গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনীর এক বিবৃতিতে লেবাননে ‘হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলার কথা নিশ্চিত করে আইডিএফ। উত্তর ইসরায়েলে বিবিসির সংবাদদাতা লুসি উইলিয়ামসন জানান, রাতভর সীমান্তের দিকে একের পর এক হেলিকপ্টার ও জেট বিমান উড়ে গেছে। সীমান্ত থেকে কয়েক মাইল দূরের মাঠে ট্যাংক রাখা ছিল। কিন্তু সকালের মধ্যে ওই মাঠ খালি হয়ে গেছে।

এর আগে গত সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ নিয়ে কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তিনি বলেন, স্থল অভিযানের বিষয়ে ইসরায়েল আমাদের অবহিত করেছে। সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে ‘ছোট পরিসরে’ অভিযান চালানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার থাকা উচিত। আর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, লেবাননে স্থল অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়েছে। ‘আকাশ, সাগর ও ভূমি’ থেকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত আইডিএফ।

দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযানের বিষয়ে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান ইয়োভ গ্যালান্ট। তিনি বলেন, ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর হামলা ঠেকাতে সীমান্তে তাদের আক্রমণের অবকাঠামো ভেঙে ফেলার গুরুত্বের বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। অভিযানের লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে অবহিত করেছি। ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় ইরান এবং তার প্রক্সিদের দ্বারা সৃষ্ট চলমান হুমকি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার রাতে লেবাননের বৃহত্তম শরণার্থীশিবির আইন আল-হিলওয়েতে হামলা চালায় আইডিএফ। এতে ফাতাহ নেতা মুনির আল-মাকদাহর ছেলেসহ পাঁচজন নিহত হন। তবে বেঁচে গেছেন আল-মাকদাহ। আইডিএফ যখন দক্ষিণ লেবাননে স্থল অভিযানের খবর নিশ্চিত করে, তখন প্রতিবেশী সিরিয়া থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিনজন নিহতের খবর আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত