Ajker Patrika

ইরানে এখনো হামলা চালাতে আগ্রহী ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
ইরানের একটি ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র মজুত কেন্দ্র। ছবি: এএফপি
ইরানের একটি ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র মজুত কেন্দ্র। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের কর্মকর্তারা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার অঙ্গীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো আলোচনায় তাদের ‘পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলতে হবে।’ আর এ জন্য প্রয়োজনে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক সীমিত পরিসরে হামলাও চালাতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি সূত্র এবং এই বিষয়ে অবগত আরও দুটি সূত্র জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের নেতানিয়াহুকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আপাতত এই ধরনের পদক্ষেপে সমর্থন দিতে রাজি নয়। এরপরও ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে ইসরায়েল ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ইরানের স্থাপনায় হামলার জন্য বেশ কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে কিছু হামলার সময়সীমা বসন্তের শেষ বা গ্রীষ্মকাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযানের মিশ্রণ। বাস্তবতা ভেদে যার তীব্রতা ভিন্ন হতে পারে। এতে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অস্ত্র বানানোর সক্ষমতাকে কয়েক মাস বা এক বছর বা তার বেশি সময় পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বুধবার জানিয়েছে, ট্রাম্প চলতি মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, ওয়াশিংটন তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনাকে অগ্রাধিকার দিতে চায় এবং স্বল্প মেয়াদে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাকে সমর্থন রাজি নন।

কিন্তু ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এখন মনে করছেন, তাদের সেনাবাহিনী ইরানের ওপর একটি সীমিত হামলা চালাতে পারে যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কম সমর্থনের প্রয়োজন হবে। এ ধরনের হামলা ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে যে প্রস্তাব দিয়েছিল তার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট আকারের হবে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল কখন বা আদৌ এ ধরনের হামলা চালাবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। এ ধরনের পদক্ষেপে ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হতে পারেন এবং ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

রয়টার্সকে বাইডেন প্রশাসনের সাবেক দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গত বছর বাইডেন প্রশাসনের কাছে এই পরিকল্পনার কিছু অংশ উপস্থাপন করা হয়েছিল। প্রায় সব বিকল্পের ক্ষেত্রেই ইরানে ইসরায়েলের সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ বা গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য সমর্থনের প্রয়োজন ছিল। ইসরায়েল ওয়াশিংটনের কাছে এই অনুরোধও করেছে যে, ইরান যদি পাল্টা হামলা চালায় তবে যুক্তরাষ্ট্র যেন ইসরায়েলকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করে।

জানতে চাওয়া হলে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল রয়টার্সকে ট্রাম্পের বৃহস্পতিবারের মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে। সেদিন ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি ইসরায়েলকে হামলা থেকে বিরত রাখেননি, তবে তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করার জন্য তিনি ‘তাড়াহুড়ো করছেন না।’

ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, ইরানের একটি মহান দেশ হওয়ার এবং প্রাণহানি (যুদ্ধ) ছাড়াই সুখে থাকার সুযোগ রয়েছে। এটাই আমার প্রথম বিকল্প। যদি দ্বিতীয় বিকল্প থাকে, আমি মনে করি এটি ইরানের জন্য খুবই খারাপ হবে এবং আমি মনে করি ইরান আলোচনা করতে চাইছে।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। এক ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইরানের ওপর হামলা চালানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এক ঊর্ধ্বতন ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, তেহরান ইসরায়েলের পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত এবং যেকোনো হামলা ইরানের পক্ষ থেকে ‘কঠোর ও অটল জবাব’ দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছে। এটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক টিকে থাকার উপায় হিসেবে সংঘাতের জন্য নেতানিয়াহুর (রাজনৈতিক) প্রয়োজন থেকে উদ্ভূত।’

নেতানিয়াহু যখন এই পরিকল্পনার একটি পূর্বতন সংস্করণ বাইডেন প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করেছিলেন, তখন তিনি প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিলেন। নেতানিয়াহু চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলার নেতৃত্ব দিক, কিন্তু বাইডেন ইসরায়েলকে বলেছিলেন, তেহরান যদি তাদের পারমাণবিক উপাদানের সমৃদ্ধি বাড়াতে বা দেশ থেকে পরিদর্শকদের বহিষ্কার না করে তবে হামলা চালানো বিচক্ষণ হবে না।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল যে সীমিত সামরিক হামলার কথা বিবেচনা করছে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহায়তার প্রয়োজন কম। তবে তেহরান যদি পরবর্তী সময়ে হামলা চালায় তবে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলে আত্মরক্ষায় সহায়তার প্রতিশ্রুতি ইসরায়েলের প্রয়োজন হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত