Ajker Patrika

বাইডেনের গাজা পরিকল্পনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, ইসরায়েল-হামাস মানবে কি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৪, ১৪: ০৯
Thumbnail image

গাজায় যুদ্ধ শেষ করা এবং হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করার লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন বাইডেন। এরই মধ্যে ইসরায়েল সরকার জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা খুব একটা ভালো না হলেও বিষয়টি গ্রহণ করেছে। তবে এটি নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে। হামাসও এই পরিকল্পনাকে প্রাথমিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। 

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের একদল সাংবাদিক বাইডেন উত্থাপিত প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখেছেন। তাঁরা বলেছেন, এই প্রস্তাবের সঙ্গে বাইডেনের আগের দেওয়া প্রস্তাবের খুব একটা তফাত নেই। মূলত বাইডেনের এই প্রস্তাবে তিনটি ধাপ আছে। প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতি হবে ছয় সপ্তাহের। 

এই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার জনাকীর্ণ সব এলাকা ছেড়ে চলে যাবে। এই ধাপে হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলি নারী ও বৃদ্ধাদের মুক্তি দেওয়া হবে। বিপরীতে কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। গাজার লোকজন নিজ নিজ আবাসস্থলে ফিরবে। এবং প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক করে ত্রাণ গাজায় সরবরাহ করা হবে। 
 
বাইডেনে তাঁর প্রস্তাবের দ্বিতীয় ধাপ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করার শর্ত নিয়ে আলোচনা করবে। যত দিন আলোচনা অব্যাহত থাকবে, তত দিন যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘তৃতীয় ধাপে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া ৬০ শতাংশ ক্লিনিক, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, ধর্মীয় স্থাপনাসহ গাজা পুনর্গঠনের সুবিধার্থে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি অনুসরণ করা হবে।’ 

হামাস প্রাথমিকভাবে এই প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারও এই প্রস্তাবকে মেনে নিয়ে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারের অন্যতম সঙ্গী বেনি গান্তজও এই প্রস্তাবের ব্যাপারে ইতিবাচক কথা বলেছেন। এ ছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তও বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। বিরোধী দলের প্রধান ইয়ার লাপিদও এই প্রস্তাবে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নিজেও এই প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্র দেশ যুক্তরাজ্য ও জার্মানি এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে। তবে বিদেশি মিত্ররা সমর্থন দিলেও ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে বিষয়টি আটকে যেতে পারে। বিশেষ করে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে সরকারি জোট ও বিরোধী দলের মধ্যকার আসনের হিসাবের ওপর নির্ভর করবে এই প্রস্তাব পাশ হওয়া বা না হওয়া। 

এদিকে, গাজার মানবিক পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ। ইসরায়েলি মারাত্মক হামলার কারণে রাফাহ শহর থেকে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ পালিয়ে গেছে। গাজার বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। জ্বালানি, ওষুধ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ ও সরঞ্জামের ক্রমাগত ঘাটতির মুখে স্বাস্থ্যসেবা স্থবির হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া, গাজা-মিসরের মধ্যকার স্থল সীমান্ত রাফাহ ক্রসিং পুনরায় চালু করার বিষয়ে মিসর ও ইসরায়েলের মধ্যে মতদ্বৈধতা শুরু হয়েছে। বাইডেন প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাস্তবায়িত না হলে এই সংকটের সমাধান না-ও হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত