Ajker Patrika

নতুন যুগের বার্তা দিয়ে অস্ত্র সমর্পণ শুরু করেছেন পিকেকে যোদ্ধারা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ০০: ২৪
ছবি: এএফপি
ছবি: এএফপি

তুরস্কের রাষ্ট্রবিরোধী লড়াইয়ে চার দশকের বেশি সময় ধরে নিয়োজিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) যোদ্ধারা আজ শুক্রবার উত্তর ইরাকে একটি প্রতীকী অনুষ্ঠানে অস্ত্র সমর্পণ করেছেন। এই পদক্ষেপকে পিকেকের দীর্ঘ সশস্ত্র সংগ্রামের অবসান এবং শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পথে যাত্রার প্রথম দৃশ্যমান পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আমিরাতভিত্তিক দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ইরাকের আধাস্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলের জাসানা গুহায়, যা কুর্দি প্রতিরোধ আন্দোলনের একটি প্রতীক। প্রায় ৩০ জন যোদ্ধা এখানে তাঁদের অস্ত্র পুড়িয়ে ফেলেন। তাঁদের মধ্যে অর্ধেক নারী। তাঁরা ‘পিস অ্যান্ড ডেমোক্রেটিক সোসাইটি গ্রুপ’ নামে নিজেদের পরিচয় দিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক সমন্বয়নীতির ভিত্তিতে স্বেচ্ছায় অস্ত্র ধ্বংস করছি। নিপীড়ন আর থাকবে না; বিজয় হবে স্বাধীনতা ও সংহতির।’

পিকেকের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত এসেছে তাদের কারাবন্দী নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে। ১৯৭০ দশকের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন ১৯৮৪ সালে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে, যা সময়ের ব্যবধানে রূপ নেয় ভয়াবহ সহিংসতায়। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তুরস্ক, ইরাক এবং কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা, তুরস্কের কুর্দিপন্থী ডিইএম পার্টির সিনিয়র নেতারা, যাঁরা পিকেকের নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অনুষ্ঠানে পিকেকের শীর্ষস্থানীয় নেতা বেসে হোজাত তুর্কি ভাষায় সংগঠনটির নিরস্ত্রীকরণের ঘোষণা দেন।

এই বিষয়ে তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ার্লিকায়া এক্স মাধ্যমে লিখেছেন, ‘এখন শব্দ হবে অস্ত্রের চেয়ে শক্তিশালী। সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্ক হবে ভ্রাতৃত্বে বিশ্বাসের বিজয়।’ আর তুরস্কের বিচারমন্ত্রী ইয়িলমাজ টুনস বলেছেন, এই পদক্ষেপ তুরস্ককে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর কাতারে পৌঁছে দেবে।

পিকেকে নেতা ওজালান এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমি রাজনীতি ও সামাজিক শান্তির শক্তিতে বিশ্বাস করি, অস্ত্রে নয়।’ ডিইএম পার্টির কো-চেয়ারদের মতে, এটি কেবল কুর্দি জনগণের সংগ্রামে নয়, বরং পুরো তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও গণতন্ত্রের পথে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

কুর্দি রাজনৈতিক বিশ্লেষক শাহো কারাদাঘি বলেছেন, ‘আজ জাসানা গুহা এই অঞ্চলের একটি নতুন শান্তির সূচনা চিহ্নিত করছে।’

তবে বিষয়টি ঘিরে তুরস্কে সংবেদনশীলতাও রয়েছে। বিশ্লেষক নেবি মিস সতর্ক করে বলেন, এই অনুষ্ঠান যেন পিকেকের প্রচারণা মাধ্যম হয়ে না ওঠে এবং অস্ত্রের প্রকৃত হিসাব রাখা জরুরি। অন্যথায় তা অন্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিমানবন্দরের মতো কৌশলগত স্থাপনায় আগুন নিরাপত্তা ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ: জামায়াত আমির

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন যেসব প্রশ্ন তুলল, সর্বশেষ যা জানা গেল

রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষকদের ‘ভুখা মিছিল’

হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেন জেলেনস্কি

ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, সড়কে লাখো মানুষ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত