Ajker Patrika

হামাসের নেতা সিনওয়ারের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণকে’ যৌক্তিক বলছে এআই 

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৪, ১১: ২০
হামাসের নেতা সিনওয়ারের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণকে’ যৌক্তিক বলছে এআই 

কেউ বলেন, যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি হামাসের গাজা অঞ্চলের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার সহজাত। কেউ বলেন, তিনি একজন সাইকোপ্যাথ, যার কোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। আবার কেউ বলেন, হামাসের এই নেতা সাইকোপ্যাথ হলেও তাঁর সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা আছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও স্বীকার করেছে, তাঁর নেওয়া সিদ্ধান্ত যৌক্তিক। 

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠানটি খোদ ইসরায়েলে অবস্থিত। তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত রাইখম্যান ইউনিভার্সিটির কম্পিউটারাইজড ডিসিশন মেকিং ল্যাবের ‘হাহেদলেই’ সফটওয়্যার ব্যবহারের পর এই ফলাফল এসেছে। 

হাহেদলেই সফটওয়্যারটি মূলত বেশ কয়েকটি এআইয়ের সমন্বয়, যা একটি ব্যতিক্রম পদ্ধতিতে মানুষের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণ’ প্রক্রিয়াকে যাচাই করে দেখে। সফটওয়্যারটি থেকে দেখা গেছে, হামাসের প্রধান হিসেবে সংস্থাটির লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে সিনওয়ারের গৃহীত সিদ্ধান্ত যৌক্তিক। মূলত হামাসের আদর্শ ও লক্ষ্য বিবেচনায় রেখে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এখানে পশ্চিমা বিশ্ব বা ইসরায়েলি দৃষ্টিভঙ্গি আমলে নেওয়া হয়নি। 

রাইখম্যান ইউনিভার্সিটির এআই সফটওয়্যার সিনওয়ারের পূর্ববর্তী ১৪টি সিদ্ধান্ত যাচাই করে দেখেছে, যার মধ্যে ২০২১ সালে অপারেশন গার্ডিয়ান অব দ্য ওয়ালসের পর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যাওয়া, হামাস নির্মূলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর অভিযানের পরও গোষ্ঠীটির সদস্যদের ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদে যোগদান থেকে বিরত থাকা, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে বড় আকারে হামলা চালানো, নভেম্বরে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়া, সর্বশেষ ২৯ নভেম্বর সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত উল্লেখযোগ্য। 

হাহেদলেই সফটওয়্যার দেখিয়েছে, এই ১৪টি সিদ্ধান্তের মধ্যে ১২টিকেই হামাসের যে আদর্শ ও লক্ষ্য তার আলোকে অযৌক্তিক বলে বাতিল করার সুযোগ নেই। বিশেষ করে হামাসকে ক্ষমতায় রাখা, গোষ্ঠীটির নেতাদের রক্ষা করা, ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্ত করা ইত্যাদির আলোকে সিনওয়ারের অধিকাংশ সিদ্ধান্তই যৌক্তিক। এআই বলছে, সিনওয়ার এসব ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক বিকল্প মূল্যায়ন করে দেখে তারপরই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে প্রথমে অযৌক্তিক বলে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে হামাস প্রকাশিত নথিতে থাকা সিনওয়ারের বিবৃতি থেকে দেখা গেছে, হামলার আগে ইরান প্রক্সির মাধ্যমে (হিজবুল্লাহ, হুতি ও ইরাকের বিভিন্ন শিয়া গোষ্ঠীর মাধ্যমে) হামাসের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। 

এর ধারাবাহিকতায় হামলার পরবর্তী ঘটনাক্রম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সিনওয়ারের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক ছিল। যদিও এই হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার গভীরতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তেল আবিবকে খাটো করে দেখেছিলেন সিনওয়ার। 

তবে হামাসের সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে প্রভাবশালী মানদণ্ড, তার আলোকে ৭ অক্টোবর ইসরায়েল আক্রমণের ক্ষেত্রে সিনওয়ারের হিসাব সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। সেই আক্রমণের প্রতিক্রিয়া ও সিনওয়ারের যে প্রত্যাশা—হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলবিরোধী যুদ্ধে যোগ দেবে—তার আলোকে সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক বলে রায় দিয়েছে হাহেদলেই এআই। 

এই এআই ব্যবহার করে সিনওয়ারের অনেক সিদ্ধান্ত আগেভাবে অনুমান করা সম্ভব হচ্ছে। যেমন—কয়েক সপ্তাহ আগে রাইখম্যান ইউনিভার্সিটি এক সিমুলেশনের সাহায্যে দেখিয়েছিল যে, ইসরায়েল যদি মানবিক ত্রাণ সহায়তা, রাফাহে অভিযানের বিষয়ে কড়া অবস্থান নেয়, তবে হামাসও জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে। হয়েছেও তাই। 

জেরুসালেম পোস্টে এই নিবন্ধ লিখেছেন রাইখম্যান ইউনিভার্সিটির কম্পিউটারাইজড ডিসিশন মেকিং ল্যাবের পরিচালক অ্যালেক্স মিন্তজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআই দিয়ে ৩ বোনের অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল, ভাইয়ের আত্মহত্যা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ফারিদাবাদের ১৯ বছর তরুণ রাহুল ভারতী। রাহুল স্থানীয় ডিএভি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিন বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন রাহুল। তবে সম্প্রতি তাঁর জীবনে নেমে আসে এক দুর্বিষহ অন্ধকার।

অচেনা এক ব্যক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাহুলের তিন বোনের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও বানান। তারপর সেগুলো রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন রাহুল।

রাহুলের বাবা মনোজ ভারতী এনডিটিভিকে জানান, দুই সপ্তাহ ধরে রাহুল মানসিকভাবে ভীষণ অস্থির ছিলেন। অচেনা এক ব্যক্তি রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর তিন বোনের নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে পাঠাচ্ছিলেন এবং টাকা দাবি করছিলেন। তিনি আরও জানান, রাহুল ঠিকমতো খেতেন না, দিনভর ঘরে চুপচাপ থাকতেন। এসব নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন।

পুলিশের তদন্তে রাহুলের হোয়াটসঅ্যাপে ‘সাহিল’ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথন পাওয়া গেছে। সেখানে রাহুলকে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে ২০ হাজার রুপি দাবি করেছিলেন ওই ব্যক্তি।

হোয়াটঅ্যাপের কথোপকথনে দেখা গেছে, তাঁদের মধ্যে একাধিকবার অডিও ও ভিডিও কলে কথা হয়েছে। একপর্যায়ে সাহিল রাহুলকে লোকেশন পাঠিয়ে লিখেছিলেন, ‘আজা মেরে পাস’ (আমার কাছে চলে আসো)। শেষ কথোপকথনে সাহিল হুমকি দেন, টাকা না দিলে সব ছবি–ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেবেন।

ওই ব্যক্তি রাহুলকে আত্মহত্যা করতেও প্ররোচিত করেন এবং কোন ওষুধ খেলে মৃত্যু হবে, তা-ও বলে দেন।

গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাহুল কিছু ওষুধ খান। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

রাহুলের বাবা মনোজ বলেন, ‘কেউ আমার মেয়েদের অশ্লীল ভিডিও ও ছবি রাহুলের ফোনে পাঠিয়ে হুমকি দিচ্ছিল। তারা হুমকি দিচ্ছিল—টাকা না দিলে এগুলো ভাইরাল করে দেবে। এতে রাহুল ভীষণ মানসিক চাপে ছিল। এই যন্ত্রণায় সে আত্মহত্যা করে।’

রাহুলের মা মীনা দেবী অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভাশুর নীরজ ভারতী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে রাহুলের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। প্রায় ছয় মাস আগে পারিবারিক ঝগড়ার পর থেকে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তিনি দাবি করেন, নীরজ একটি মেয়ের সঙ্গে মিলে পুরো ঘটনা পরিকল্পনা করেছেন।

রাহুলের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা সুনীল কুমার জানান, রাহুল বিষ পান করেছিলেন। পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। রাহুলের মোবাইল ফোনের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এসব তথ্য অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরও ৫৪ ভারতীয় নাগরিককে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেরত পাঠানো নাগরিকদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেরত পাঠানো নাগরিকদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

অবৈধ পথে প্রবেশের অভিযোগে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ৫৪ জন নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩-এ অবতরণ করে তাঁদের বহনকারী ওএই-৪৭৬৭ ফ্লাইটটি।

ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় এসব তরুণ ‘ডানকি রুট’ নামে পরিচিত অবৈধ পথ ব্যবহার করেছিলেন। এই রুটের মাধ্যমে দালাল চক্র ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচার করে।

পুলিশ জানায়, ফেরত আসা ৫৪ জনের মধ্যে ১৬ জন করনাল জেলার, ১৫ জন কাইথালের, পাঁচজন আম্বালার, চারজন যমুনানগরের, চারজন কুরুক্ষেত্রের, তিনজন জিন্দের, দুজন সোনিপাতের এবং একজন করে পঞ্চকুলা, পানিপথ, রোহতক ও ফতেহাবাদ জেলার।

দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেরত পাঠানো নাগরিকদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। করনাল পুলিশ জানিয়েছে, কোনো দালালের বিরুদ্ধে এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ফেরত আসা ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

করনাল জেলার উপপুলিশ সুপার (ডিএসপি) সন্দীপ কুমার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও কয়েকজন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ৫০ জন হরিয়ানার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে করনাল জেলার প্রায় ১৬ জন। এই ব্যক্তিরা ডানকি রুট ব্যবহার করে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। আমরা তাঁদের ফিরিয়ে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। কোনো দালালের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চলছে। কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন কি না, তা তদন্তে জানা যাবে।’

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছরই যুক্তরাষ্ট্র শত শত ভারতীয় নাগরিককে অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে ফেরত পাঠিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুসারে, যাঁরা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দেশটিতে অবস্থান করেন বা অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেন, তাঁদের সবাইকে ফেরত পাঠানো হবে।

২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭৫৬ ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ছিল ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪২ জন এবং ২০২০ সালে ১ হাজার ৮৮৯ জন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীন উপকূলের কাছে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার হারাল যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৩৯
যুক্তরাষ্ট্রের এফএ–১৮ যুদ্ধবিমান। ছবি: এএফপি
যুক্তরাষ্ট্রের এফএ–১৮ যুদ্ধবিমান। ছবি: এএফপি

মাত্র আধঘণ্টার ব্যবধানে দক্ষিণ চীন সাগরে পৃথক ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে একটি হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার নিয়মিত টহলের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর এই হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। তবে সব সদস্যকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর প্যাসিফিক ফ্লিট।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে—কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ জলসীমায় দুই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। অঞ্চলটি বৈশ্বিক সংঘাতের সম্ভাব্য কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ধারাবাহিক দুর্ঘটনাকে ‘খুব অস্বাভাবিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জ্বালানিতে সমস্যা থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। মালয়েশিয়া থেকে জাপানে যাওয়ার পথে এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘ওরা মনে করছে, জ্বালানি খারাপ ছিল। আমরা তা খতিয়ে দেখব। লুকানোর কিছু নেই, স্যার।’

নৌবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা পোস্টে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ইউএসএস নিমিৎজ বিমানবাহী রণতরী থেকে নিয়মিত টহলের সময় একটি এমএইচ-৬০ আর ‘সি–হক’ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। তৎক্ষণাৎ তিন ক্রু সদস্যকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।

এর প্রায় ৩০ মিনিট পর একই রণতরী থেকে উড্ডয়নের পর আরেকটি এফ/এ-১৮ এফ ‘সুপার হর্নেট’ যুদ্ধবিমানও বিধ্বস্ত হয়। দুই পাইলটই প্যারাসুটে অবতরণ করে নিরাপদে উদ্ধার হন বলে জানায় নৌবাহিনী। এ নিয়ে চলতি বছর ৬ কোটি ডলার মূল্যের চতুর্থ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলো।

চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের সীমানা ঘেঁষা দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন অংশে একাধিক দেশ মালিকানা দাবি করলেও বেইজিং কার্যত গোটা জলসীমার ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে। গত দুই দশকে চীন এই অঞ্চলের বিতর্কিত দ্বীপ ও প্রবালপ্রাচীরে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এভাবে চীনের সামরিক সম্প্রসারণ নৌ চলাচলের স্বাধীনতা ও বৈশ্বিক বাণিজ্যের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলে টহল ও উপস্থিতি বজায় রাখছে—চীনের সার্বভৌমত্ব দাবির বিরোধিতা ও মিত্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।

বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এশিয়া সফরে রয়েছেন। সফরে তিনি এ সপ্তাহেই চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় থাকবে বাণিজ্য। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক আবারও টানাপোড়েনের মধ্যে পড়েছিল। পরস্পরের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপসহ বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল দুই দেশ। তবে রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট জানান, চীনের সঙ্গে একটি কাঠামোগত বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ট্রাম্প–সি বৈঠকের আগে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত করেছে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস নিমিৎজ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো সক্রিয় বিমানবাহী রণতরী। আগামী বছর এটি অবসরে যাবে বলে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ১৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জাপানে ভ্রমণে গিয়ে বাজে অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন দুই চীনা পর্যটক। খাবার খেতে গিয়ে এক রেস্তোরাঁ থেকে অপমানিত হয়ে বের হয়ে আসতে হয়েছে তাদের। অপরাধ কী? রেস্তোরাঁর মালিকের চোখে ‘অনেক বেশি খোলামেলা’ পোশাক পরিধান। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

খবরে বলা হয়েছে, জাপানে ভ্রমণে গিয়ে পোশাকের কারণে অপমান করে রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে দুই চীনা পর্যটককে। তাঁরা শুধু স্পোর্টস ভেস্ট ও ঢিলেঢালা প্যান্ট পরেছিলেন। তবে বিষয়টি রেস্তোরাঁর মালিকের চোখে ছিল ‘অনেক বেশি খোলামেলা’ পোশাক।

ঘটনাটি ঘটেছে আগস্টের শেষ দিকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চীনা ব্লগার ও তাঁর এক বন্ধু জাপানের কোবে শহরের জনপ্রিয় থাই রেস্তোরাঁ ‘বান থাই মার্কেটে’ খেতে যান। পরে ওই ব্লগার চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরো অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

ওই ব্লগার জানান, তারা রেস্তোরাঁয় ঢুকতেই মালিক তাদের থেকে তিরস্কার করে বলেন, ‘গ্রীষ্ম তো শেষ হয়ে গেছে, আর নগ্ন হয়ে বেরোতে হবে না।’ ব্লগার আরও বলেন, তাঁদের পোশাক ছিল পুরোপুরি স্বাভাবিক—একটি স্পোর্টস ভেস্ট আর প্যান্ট। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যায়। খাওয়ার মাঝপথে হঠাৎ ম্যানেজার ও কর্মীরা এগিয়ে এসে তাঁদের চপস্টিক ছিনিয়ে নেয়, থালা সরিয়ে নেয় এবং না জিজ্ঞেস করেই পুরো খাবার তুলে ফেলে দেয়।

ব্লগার লিখেছেন, ‘বিল দিতে গিয়ে আমি ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করলাম কত দিতে হবে। সে একদমই কিছু বলল না, শুধু কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ইঙ্গিত করল যেন আমরা নিজেরাই দেখে নিই।’ তিনি আরও জানান, পরে গুগল রিভিউ দেখে বুঝতে পারেন, ওই রেস্তোরাঁর একই ম্যানেজারের হাতে অনেকেই বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, এই রেস্তোরাঁর ব্যাপারে ‘নেতিবাচক রিভিউয়ের সংখ্যা ভয়াবহ।’

গুগল ম্যাপসের রিভিউগুলোও সেই অভিযোগকে সমর্থন করেছে। বহু ব্যবহারকারী সেখানে মালিকের খারাপ আচরণ, বৈষম্যমূলক মনোভাব এবং প্রকাশ্য বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ তুলেছেন। এক রিভিউদাতা লিখেছেন, ‘আমি শুধু পারফিউম ব্যবহার করায় রেস্তোরাঁ থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আমি যখন জাপানি বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলাম, ম্যানেজার ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক; কিন্তু যখন তিনি বুঝলেন আমরা চীনা ভাষায় কথা বলছি, সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আচরণ বদলে গেল।’

চীনা পর্যটকদের কাছে সম্প্রতি জাপান সবচেয়ে জনপ্রিয় বিদেশ ভ্রমণ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এমনকি থাইল্যান্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। এর পেছনে রয়েছে সহজতর ভিসা নীতি, দুর্বল ইয়েন মুদ্রা ও খাদ্যভিত্তিক পর্যটনের প্রতি বাড়তি আগ্রহ। এই ঘটনার পর জাপানি নেটিজেনরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই পর্যটকদের পক্ষ নিয়ে রেস্তোরাঁ মালিকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

একজন লিখেছেন, ‘ওই ম্যানেজার আসলেই রূঢ় মানুষ। তাঁর খারাপ খ্যাতি বহুদিনের।’ আরেকজন বলেন, ‘এটা পোশাকের কারণে নয়। সে মুহূর্তেই মনোভাব বদলে ফেলেছিল, যখন বুঝল তারা চীনা।’ আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘বৈষম্য দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। সে বুঝতে পারে না, তার ব্যবসা মূলত পর্যটকদের ওপরই নির্ভর করে।’

চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ঘটনাটি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘যদি কেউ বলে—“গ্রীষ্ম শেষ, নগ্ন হয়ে ঘুরতে বেরিও না”,—তখন সোজা উঠে চলে আসাই উচিত। যে নিজের টাকায় অপমানিত হচ্ছে, সে নীরব কেন থাকবে?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, আঘাত হানবে কোথায়

হঠাৎ পদত্যাগ করলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার

দুশ্চিন্তা, হতাশা দূর হবে হাদিসে বর্ণিত এই চার দোয়ায়

গায়ে থুতু পড়া নিয়ে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নির্বাচনে যেতে চায় জাপার একাংশ, কৌশল তুলে ধরবে জাতির সামনে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত