অনলাইন ডেস্ক
‘একটা উইল লেখার কথা ভাবছি। মৃত্যুকে এত কাছে অনুভব করব বলে ভাবিনি কখনো। আমি সব সময় বলতাম, মৃত্যু হঠাৎ করেই আসে, কিন্তু কথাটা সেই অর্থে অনুভব করিনি কখনো। এই যুদ্ধে আমি সেটি অনুধাবন করেছি।’
কথাগুলো বলছিলেন দক্ষিণ গাজার বাসিন্দা রুওয়াইদা আমির। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের রাগ-ক্ষোভ আর হতাশা ঝাড়েন তিনি। জানান দুঃখের কথা।
রুওয়াইদা বলেন, ‘এমনকি খারাপ কিছু হওয়ার আগেই আমরা তার ফল ভোগ করছি। যেমন—ধরুন, গাজায় এখনো হয়তো ভাগ্যবশত আপনার বাড়িটি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু যেকোনো সময় তা ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে—এই আতঙ্ক আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই আতঙ্ক আমি আর নিতে পারছি না। যুদ্ধের শুরু থেকে, ইসরায়েলি সেনাদের আমাদের এত কাছে চলে আসার বিষয়টি আমি মেনেই নিতে পারছি না। যখন নেতজারিম করিডর থেকে ট্যাংকগুলো উপত্যকায় ঢুকল, আমার মনে পড়ে, আমি স্তম্ভিত হয়ে আমার সব বন্ধুকে মেসেজ পাঠিয়েছিলাম, “ওরা কীভাবে গাজায় ঢুকল? আমি কি কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছি!”’
রুওয়াইদা জানান, এবারের মতো ভয়াবহতা আগে কখনো দেখেননি। বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা সরে গিয়ে গাজা কবে আবার আগের মতো হবে, সেই অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু তারা আমার আরও কাছে চলে এসেছে। আমি খান ইউনিসের পূর্বে এবং রাফাহর উত্তরে আল ফুখারিতে থাকি। মূলত এখানে খান ইউনিস শেষ হয়ে রাফাহ শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা আমার বাড়ির খুব কাছে অবস্থান করছে। সব সময় ভয়ংকর বিস্ফোরণের শব্দে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমার আগের সব অভিজ্ঞতাকে হার মানাচ্ছে এবারের যুদ্ধের ভয়াবহতা।’
আতঙ্ক প্রকাশ করে রুওয়াইদা জানান, তিনি শুধু একটি সংখ্যা হিসেবে পরিগণিত হতে চান না। বলেন, ‘আমি শুধু একটা নম্বর হতে চাই না। যখনই কোনো শহীদকে “অজ্ঞাত ব্যক্তি” বলে সম্বোধন করা হয়, আমার হৃদয় কেঁদে ওঠে! কারও কারও এত বীভৎস মৃত্যু হয়েছে যে, তাদের চেহারাও চেনা যায় না, কারও তো চেহারা পাওয়াও যায় না, শুধু হাত বা পা কিংবা অন্য কোনো অঙ্গ ছাড়া। আমার সঙ্গেও কি তেমন কিছু হবে! মৃত্যুর পর কি আমাকে কেবল “কালো অথবা নীল জামা পরা এক তরুণী” বলে সম্বোধন করা হবে! আমি শুধুই একটা সংখ্যা হিসেবে পরিচিত হব!’
রুওয়াইদা আরও বলেন, ‘আমি চাই, আমার আশপাশের সবাই আমার গল্প মনে রাখুক। আমি শুধু একটি সংখ্যা নই। আমি সেই মেয়ে, যে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতেও পড়াশোনা শেষ করেছে। গাজা তখন অত্যন্ত কঠোর অবরোধের মধ্যে ছিল। ওই পরিস্থিতিতেই পড়া শেষ করে চারবার চাকরি হারানো অসহায় বাবাকে সাহায্য করতে মরিয়া এক মেয়ে আমি। আমি আমার পরিবারের বড় মেয়ে এবং আমার পরিবার যাতে একটা ভালো ও সুন্দর ঘরে থাকতে পারে, তার জন্য আমি উপার্জন করার চেষ্টা করছিলাম। এসবের কোনো কিছু কেউ ভুলুক, আমি চাই না।’
অতীত স্মরণ করে গাজার এই বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন শরণার্থী। আমার পরদাদাও শরণার্থী ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের দখলদারত্বে ভিটে-মাটিছাড়া হয়েছিলেন তিনি। গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে এক শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। আমি সেখানেই জন্মেছি। কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা সেখানে আমাকে থাকতে দেয়নি। ২০০০ সালে আমাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয় তারা। দুই বছর আমাদের মাথার ওপর কোনো ছাদ ছিল না। এক শরণার্থীশিবির থেকে আরেকটিতে ঘুরে বেড়িয়েছি।’
পরে, ২০০৩ সালে আল ফুখারিতে রুওয়াইদদের একটি বাড়ি দেয় ইউএনআরডব্লিউএ। ইউরোপীয় হাসপাতালের পাশে ইউরোপীয় আবাসন নামে পরিচিত একটা এলাকায় চারপাশে কৃষিজমি ঘেরা একটি বাড়ি পান তাঁরা। পাঁচ সদস্যের পরিবার হওয়ায় তাঁদের প্রয়োজন হয় আরও একটি অতিরিক্ত ঘর, একটি বসার ঘর, রান্নাঘরটারও মেরামত প্রয়োজন পড়ে; যা তাঁর বাবার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। ২০১৫ সালে বাবাকে সাহায্য করার জন্য উপার্জন শুরু করেন রুওয়াইদা। ২০২৩ সালে শেষ হয় তাঁদের বাড়ির সংস্কারকাজ।
এর ঠিক তিন মাস পর অক্টোবরের ৭ তারিখে উপত্যকায় তাণ্ডব শুরু করে ইসরায়েল। রুওয়াইদা বলেন, ‘১০ বছর ধরে তিলে তিলে যে বাড়িটা আমরা তৈরি করেছি, আমাদের সেই স্বপ্নের বাড়িটা এখন যেকোনো সময় ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। এটা ভাবলেই প্রচণ্ড রাগ-ক্ষোভ-কষ্ট হয়। যুদ্ধের পর থেকে একের পর এক লড়াই করে যেতে হচ্ছে আমাদের। বেঁচে থাকার জন্য লড়াই, ক্ষুধা-তৃষ্ণায় টিকে থাকার লড়াই, যা দেখতে-সইতে হচ্ছে, প্রতিদিন সেই ভয়াবহতায় নিজেকে প্রকৃতিস্থ রাখার লড়াই। এত কিছুর পর আমি কেবল একটি সংখ্যা হয়ে যেতে চাই না। আমি গাজার একজন সত্যিকারের মানুষ। আমাকে সবার মনে রাখতে হবে।’
‘একটা উইল লেখার কথা ভাবছি। মৃত্যুকে এত কাছে অনুভব করব বলে ভাবিনি কখনো। আমি সব সময় বলতাম, মৃত্যু হঠাৎ করেই আসে, কিন্তু কথাটা সেই অর্থে অনুভব করিনি কখনো। এই যুদ্ধে আমি সেটি অনুধাবন করেছি।’
কথাগুলো বলছিলেন দক্ষিণ গাজার বাসিন্দা রুওয়াইদা আমির। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের রাগ-ক্ষোভ আর হতাশা ঝাড়েন তিনি। জানান দুঃখের কথা।
রুওয়াইদা বলেন, ‘এমনকি খারাপ কিছু হওয়ার আগেই আমরা তার ফল ভোগ করছি। যেমন—ধরুন, গাজায় এখনো হয়তো ভাগ্যবশত আপনার বাড়িটি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু যেকোনো সময় তা ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে—এই আতঙ্ক আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই আতঙ্ক আমি আর নিতে পারছি না। যুদ্ধের শুরু থেকে, ইসরায়েলি সেনাদের আমাদের এত কাছে চলে আসার বিষয়টি আমি মেনেই নিতে পারছি না। যখন নেতজারিম করিডর থেকে ট্যাংকগুলো উপত্যকায় ঢুকল, আমার মনে পড়ে, আমি স্তম্ভিত হয়ে আমার সব বন্ধুকে মেসেজ পাঠিয়েছিলাম, “ওরা কীভাবে গাজায় ঢুকল? আমি কি কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছি!”’
রুওয়াইদা জানান, এবারের মতো ভয়াবহতা আগে কখনো দেখেননি। বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনারা সরে গিয়ে গাজা কবে আবার আগের মতো হবে, সেই অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু তারা আমার আরও কাছে চলে এসেছে। আমি খান ইউনিসের পূর্বে এবং রাফাহর উত্তরে আল ফুখারিতে থাকি। মূলত এখানে খান ইউনিস শেষ হয়ে রাফাহ শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা আমার বাড়ির খুব কাছে অবস্থান করছে। সব সময় ভয়ংকর বিস্ফোরণের শব্দে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমার আগের সব অভিজ্ঞতাকে হার মানাচ্ছে এবারের যুদ্ধের ভয়াবহতা।’
আতঙ্ক প্রকাশ করে রুওয়াইদা জানান, তিনি শুধু একটি সংখ্যা হিসেবে পরিগণিত হতে চান না। বলেন, ‘আমি শুধু একটা নম্বর হতে চাই না। যখনই কোনো শহীদকে “অজ্ঞাত ব্যক্তি” বলে সম্বোধন করা হয়, আমার হৃদয় কেঁদে ওঠে! কারও কারও এত বীভৎস মৃত্যু হয়েছে যে, তাদের চেহারাও চেনা যায় না, কারও তো চেহারা পাওয়াও যায় না, শুধু হাত বা পা কিংবা অন্য কোনো অঙ্গ ছাড়া। আমার সঙ্গেও কি তেমন কিছু হবে! মৃত্যুর পর কি আমাকে কেবল “কালো অথবা নীল জামা পরা এক তরুণী” বলে সম্বোধন করা হবে! আমি শুধুই একটা সংখ্যা হিসেবে পরিচিত হব!’
রুওয়াইদা আরও বলেন, ‘আমি চাই, আমার আশপাশের সবাই আমার গল্প মনে রাখুক। আমি শুধু একটি সংখ্যা নই। আমি সেই মেয়ে, যে খুবই কঠিন পরিস্থিতিতেও পড়াশোনা শেষ করেছে। গাজা তখন অত্যন্ত কঠোর অবরোধের মধ্যে ছিল। ওই পরিস্থিতিতেই পড়া শেষ করে চারবার চাকরি হারানো অসহায় বাবাকে সাহায্য করতে মরিয়া এক মেয়ে আমি। আমি আমার পরিবারের বড় মেয়ে এবং আমার পরিবার যাতে একটা ভালো ও সুন্দর ঘরে থাকতে পারে, তার জন্য আমি উপার্জন করার চেষ্টা করছিলাম। এসবের কোনো কিছু কেউ ভুলুক, আমি চাই না।’
অতীত স্মরণ করে গাজার এই বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন শরণার্থী। আমার পরদাদাও শরণার্থী ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের দখলদারত্বে ভিটে-মাটিছাড়া হয়েছিলেন তিনি। গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে এক শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। আমি সেখানেই জন্মেছি। কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা সেখানে আমাকে থাকতে দেয়নি। ২০০০ সালে আমাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয় তারা। দুই বছর আমাদের মাথার ওপর কোনো ছাদ ছিল না। এক শরণার্থীশিবির থেকে আরেকটিতে ঘুরে বেড়িয়েছি।’
পরে, ২০০৩ সালে আল ফুখারিতে রুওয়াইদদের একটি বাড়ি দেয় ইউএনআরডব্লিউএ। ইউরোপীয় হাসপাতালের পাশে ইউরোপীয় আবাসন নামে পরিচিত একটা এলাকায় চারপাশে কৃষিজমি ঘেরা একটি বাড়ি পান তাঁরা। পাঁচ সদস্যের পরিবার হওয়ায় তাঁদের প্রয়োজন হয় আরও একটি অতিরিক্ত ঘর, একটি বসার ঘর, রান্নাঘরটারও মেরামত প্রয়োজন পড়ে; যা তাঁর বাবার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। ২০১৫ সালে বাবাকে সাহায্য করার জন্য উপার্জন শুরু করেন রুওয়াইদা। ২০২৩ সালে শেষ হয় তাঁদের বাড়ির সংস্কারকাজ।
এর ঠিক তিন মাস পর অক্টোবরের ৭ তারিখে উপত্যকায় তাণ্ডব শুরু করে ইসরায়েল। রুওয়াইদা বলেন, ‘১০ বছর ধরে তিলে তিলে যে বাড়িটা আমরা তৈরি করেছি, আমাদের সেই স্বপ্নের বাড়িটা এখন যেকোনো সময় ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। এটা ভাবলেই প্রচণ্ড রাগ-ক্ষোভ-কষ্ট হয়। যুদ্ধের পর থেকে একের পর এক লড়াই করে যেতে হচ্ছে আমাদের। বেঁচে থাকার জন্য লড়াই, ক্ষুধা-তৃষ্ণায় টিকে থাকার লড়াই, যা দেখতে-সইতে হচ্ছে, প্রতিদিন সেই ভয়াবহতায় নিজেকে প্রকৃতিস্থ রাখার লড়াই। এত কিছুর পর আমি কেবল একটি সংখ্যা হয়ে যেতে চাই না। আমি গাজার একজন সত্যিকারের মানুষ। আমাকে সবার মনে রাখতে হবে।’
ভূমিকম্পের পর ত্রাণ কার্যক্রম সহজ করতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। গত ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের পর থেকে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩ হাজারের বে
১ ঘণ্টা আগেযুদ্ধবিরতি নিয়ে তোড়জোড়ের মধ্যে আবারও ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালাল রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শহর ক্রিভি রিহতে চালানো হয়েছে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। এ হামলায় ৯ শিশুসহ ১৯ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও অন্তত ৭২ জন। আহতদের মধ্যেও রয়েছে এক নবজাতক।
৭ ঘণ্টা আগেইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থী-অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের দমন-পীড়নের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রাস্তায় নেমেছে হাজারো মানুষ। শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশে অংশ নেয় তিন শতাধিক সংগঠন। এতে প্যালেস্টাইন ইয়ুথ মুভমেন্ট, দ্য পিপলস ফোরাম, জিউস ফর পিস এবং...
৭ ঘণ্টা আগেগাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ১০ ব্রিটিশ নাগরিকের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাজ্যের অন্যতম শীর্ষ মানবাধিকার আইনজীবীরা লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
১১ ঘণ্টা আগে