Ajker Patrika

ঠান্ডায় শিশুকন্যার মৃত্যু, আটকে আছে গাজার যুদ্ধবিরতির চুক্তি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৫৫
Thumbnail image
মৃত শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে আছেন বাবা মাহমুদ আল-ফাসিহ।

গাজার একটি শরণার্থীশিবিরে তীব্র ঠান্ডায় ২০ দিন বয়সী এক শিশুকন্যা মারা গেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে শরণার্থীশিবিরে ঠান্ডাজনিত কারণে এটি তৃতীয় শিশুর মৃত্যু।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাওয়াসি এলাকার শরণার্থীশিবিরে নবজাতক শিশুটি তার পরিবারের সঙ্গে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছিল। শিশুটির বাবা মাহমুদ আল-ফাসিহ জানান, তিনি তাঁর শিশুকে একটি কম্বলে জড়িয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডা থেকে তাকে রক্ষা করতে পারেননি।

গত মঙ্গলবার ওই এলাকার রাতের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। মাহমুদ বলেন, ‘রাতে এত ঠান্ডা ছিল যে, আমরা বড়রাও সহ্য করতে পারছিলাম না। সে রাতে তিনবার কেঁদে উঠে। কিন্তু সকালে উঠে দেখি সে কাঠের মতো শক্ত হয়ে গেছে।’

পরদিন সকালে পরিবারটি শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, তার ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের শিশু বিভাগের পরিচালক আহমেদ আল-ফাররাহ নিশ্চিত করেছেন, শিশুটি হাইপোথার্মিয়ায় (তীব্র ঠান্ডাজনিত জটিলতা) মারা গেছে।

শরণার্থীশিবিরে ২০ দিন বয়সী শিশুটির করুন মৃত্যু, গাজার বেঁচে থাকা মানুষের দুঃসহ জীবনযাত্রা ও মানবিক সংকটকে আরও গভীরভাবে প্রকাশ করে।

ইসরায়েলি হামলা ও শীতল আবহাওয়ার কারণে গাজার পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। প্রায় ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশই তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে তাঁবুতে বসবাস করছে। শরণার্থীশিবিরগুলোতে ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন—কম্বল, উষ্ণ পোশাকের তীব্র অভাব রয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ত্রাণ সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা ও শরণার্থীশিবিরে চুরি-ডাকাতির কারণে সহায়তা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইসরায়েল গড়ে প্রতিদিন ১৩০টি ত্রাণের ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৩৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪৪ শতাংশই শিশু।

আজ বৃহস্পতিবার ভোরেও গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে আল-আওদা হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের একটি গাড়িতে হামলায় পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দোষারোপ করছে। সম্প্রতি উভয় পক্ষই আলোচনায় অগ্রগতির আশা প্রকাশ করেছে, তবে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

ইসরায়েল বলছে, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে। অন্যদিকে হামাস বলছে, ইসরায়েল নতুন শর্ত আরোপ করে চুক্তি বিলম্বিত করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় হামাস প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করেছিল। এরপর নভেম্বর ২০২৩-এর একটি যুদ্ধবিরতিতে ১০০-এর বেশি জিম্মি মুক্তি পায়। তবে এখনো গাজায় প্রায় ১০০ জন জিম্মি রয়েছেন বলে দাবি করছে ইসরায়েল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত