Ajker Patrika

গাজায় ৭৫ বছরের মধ্যে বড় হামলা ইসরায়েলের 

আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১৮: ৪২
গাজায় ৭৫ বছরের মধ্যে বড় হামলা ইসরায়েলের 

ইসরায়েল গাজা সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার কথা জানিয়েছে আজ মঙ্গলবার। গাজায় প্রতিটি বাড়িতে হামলার বদলে একজন বন্দীকে হত্যার হুমকি সত্ত্বেও ইসরায়েল ৭৫ বছরের মধ্যে ছিটমহলটিতে সবচেয়ে বড় হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। 

হামাস মুক্তিসেনারা আক্রমণ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল বড় প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। রাস্তার পাশে অসংখ্য লাশ পড়ে আছে। ২৩ লাখ মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণ অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। 

ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৯০০ জনে পৌঁছেছে, এদের মধ্যে বেশির ভাগই বেসামরিক লোক। বাড়িতে, গাড়িতে, রাস্তায় ও নাচ-গানের আসরে এসব বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়, যা ৯/১১ এর সমান। এ ছাড়া অনেক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

গাজার কর্মকর্তাদের মতে, ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৭০০ গাজাবাসী নিহত হয়েছে। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সমগ্র গাজাকে সমতল করে দেওয়া হচ্ছে। 

জাতিসংঘ জানিয়েছে, ১ লাখ ৮০ হাজার গাজাবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অনেকে রাস্তায় বা স্কুলে আটকে আছে। যেখানে-সেখানে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, উদ্ধারকর্মীরা হতাহতদের কাছে যেতে পারছেন না। 

বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় ব্যাপক হতাহত হয়েছে। গাজার খান ইউনিস হাসপাতালের মর্গ থেকে মৃতদেহগুলো স্বজনদের নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কারণ মর্গে লাশ রাখার জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। 

কোথাও আশ্রয়ের জায়গা নেই
ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এ পর্যন্ত গাজায় ছয় সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। একপর্যায়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মিসরে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু মিসরের সীমান্তও এখন আর উন্মুক্ত নেই। 

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ডেনিয়েল হাগারি বলেছেন, হামাস নেতাদের গাজায় লুকিয়ে থাকার কোনো জায়গা নেই। আমরা তাঁদের দ্রুতই ধরে ফেলব।’ 

ভূমিতে আক্রমণ
বিমান হামলা শেষে ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ হতে পারে গাজা উপত্যকায় স্থলপথে আক্রমণ। সর্বশেষ ২০০৫ সালে ইসরায়েল সেনারা গাজা ছেড়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে হামাস সেখানে ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গতকাল সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন এখন থেকে গাজায় খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

শনিবার হামাসের আক্রমণ এতটাই চাতুর্যপূর্ণ ছিল যে বহু বিলিয়ন ডলারে নির্মিত উচ্চ প্রযুক্তির সীমানা প্রাচীর নিমেষেই অতিক্রম করেছিল হামাস সেনারা। সেই সীমানা প্রাচীর পুনর্দখলে নিতে দুই দিনেরও বেশি সময় লেগেছে ইসরায়েলের। 

আজ মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র হাগারি বলেন, আগের দিন (সোমবার) থেকে গাজা থেকে নতুন কোনো হামাস সেনা অনুপ্রবেশ করেনি। 

ইসরায়েলি নেতাদের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে জিম্মিদের রক্ষা করার জন্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ক্ষান্ত দেবে কি না। হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা গতকাল সোমবার সতর্কতা ছাড়া বেসামরিক বাড়িতে হামলা চালালে একজন ইসরায়েলি বন্দীকে হত্যা ও সেই ভিডিও প্রচারে বাধ্য হবে বলে জানান। 

শনিবারের হামলা ও ইসরায়েলের পাল্টা হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে কূটনীতি নতুন মোড় নেবে। সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের চেষ্টাও আর এগোবে না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। 

পশ্চিমা দেশগুলো জোরালোভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করেছে। তবে আরব শহরগুলোতে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখা গেছে। হামাসের পৃষ্ঠপোষক ইরান এ হামলা উদ্‌যাপন করেছে কিন্তু তাঁদের সরাসরি ভূমিকা অস্বীকার করেছে। 

সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি মঙ্গলবার বলেছেন, ইরান হামলার পরিকল্পনাকারীদের হাতে চুম্বন করেছিল, কিন্তু যারা বিশ্বাস করেছিল যে ইরান তাদের পেছনে রয়েছে, তারা ভুল করেছে। তিনি বলেন, এই হামলা ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা বিভাগের পরাজয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত