Ajker Patrika

কলকাতায় বাড়ানো হলো বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের নিরাপত্তা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ০৪
কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশন। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার হাইকমিশনের আশপাশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়, বাড়ানো হয় সিসিটিভি নজরদারিও। এ ছাড়া, স্ট্রাইক ইউনিট ও পুলিশ কন্ট্রোলরুমের পেট্রোল ভ্যানও সেখানে পাঠানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রতিবাদ মিছিলে এক পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাদা পোশাকে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের কাছে হঠাৎ করে আর কোনো প্রতিবাদ না হয়। বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে কলকাতায় উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পর নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলো।

বাংলাদেশ সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যদিও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে হচ্ছে, তবু উপ-হাইকমিশনের সব সদস্যের মধ্যে একধরনের নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি আছে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘৃণ্য ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়।’ এতে বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে ভারত সরকারকে বাংলাদেশি মিশনগুলোর কর্মীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধের অনুরোধ জানিয়েছে।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার প্রায় ১৫-২০ জন অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী উপ-হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে উপস্থিত হন। হাইকমিশনের চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা ১৮ থেকে ২২-এ বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। পেট্রোল ভ্যানগুলো অফিসের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত গার্ড রেইলও স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ এবং বিশেষ শাখার সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রতিবাদ বা উদ্‌যাপন কোনোভাবেই ওই এলাকায় অনুষ্ঠিত না হয়।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদ সমাবেশে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার পর পুলিশ ইউনিটগুলোকে বিশেষভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে কোনো আন্দোলনকারী, বিশেষত যারা হঠাৎ প্রতিবাদ করছে, তারা নিরাপত্তা বলয় ভেদ করতে না পারে।

বিশেষ শাখাকে এ ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য বলা হয়েছে। কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় লালবাজারের তথ্য বলছে, ‘এর উদ্দেশ্য হলো—এখানে শান্তি বিঘ্নিত হওয়া রোধ করা এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তা কখনো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে না তা নিশ্চিত করা।’ এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা নিউমার্কেট, পার্ক স্ট্রিট এবং মুকুন্দপুরে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করেছি, যাতে শান্তি বজায় থাকে।’

অন্যদিকে, কলকাতা পুলিশ ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া ও আপত্তিকর ভিডিও সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেক পুরোনো ভিডিওকে নতুন হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। অনেক ভিডিও অন্য স্থানে থেকে আসছে। জুলাই ও আগস্টের মতো এখনো সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি নির্দিষ্ট টিম কাজ করছে।’

সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ এবং বিশেষ প্রসিকিউটর বিভাস চ্যাটার্জি বলেন, ‘গত তিন দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে সংগঠিত মিথ্যা খবর ছড়ানো হয়েছে। আইন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের নৈতিকতা এবং বৈধতা এবং বিভিন্ন মধ্যস্থতাকারীদের দায়িত্ব সম্পর্কে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত