Ajker Patrika

এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন: পাখির আঘাত নয়, কারণ অন্য

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ১৫: ৪৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ২৪১ জন যাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি)। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় একজন মাত্র যাত্রী বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়েছিলেন। উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরের কাছে একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। এতে মোট ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা এটি।

গত ১২ জুন, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১ আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। কিন্তু বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে মাত্র দশমিক ৯ নটিক্যাল মাইল দূরে একটি মেডিকেল হোস্টেল ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে। এতে উড়োজাহাজের প্রায় সব আরোহী এবং ভূমিতে থাকা ১৯ জন নিহত হন।

এই দুর্ঘটনা নিয়ে ১৫ পৃষ্ঠার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এএআইবি। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। নিচে তদন্তে উঠে আসা প্রধান কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:

ইঞ্জিন বন্ধ: উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই উড়োজাহাজের উভয় ইঞ্জিন মাঝ আকাশে বন্ধ হয়ে যায়। ফুয়েল কাটঅফ সুইচগুলো মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’ অবস্থানে চলে গিয়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ককপিট অডিও: ককপিটের অডিও রেকর্ডিংয়ে শোনা গেছে, একজন পাইলট জিজ্ঞেস করছেন, ‘কেন বন্ধ করলে?’ অপরজন উত্তর দেন, ‘আমি করিনি।’

রাম এয়ার টারবাইন (আরএটি) স্থাপন: ইঞ্জিন জ্বালানি হারানোর পর, রাম এয়ার টারবাইন (একটি ছোট প্রপেলারের মতো যন্ত্র) স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরুরি হাইড্রোলিক জ্বালানি সরবরাহ করার জন্য সক্রিয় হয়। প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজে আরএটি সক্রিয় হতে দেখা গেছে। উড়োজাহাজ উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পরই আরএটি সক্রিয় হতে দেখা যায়।

ইঞ্জিন পুনরায় চালুর চেষ্টা: পাইলটরা ইঞ্জিন পুনরায় চালু করার চেষ্টা করেছিলেন। ইঞ্জিন ১ (এন১) আংশিকভাবে পুনরুদ্ধার হয়েছিল, কিন্তু ইঞ্জিন ২ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পুনরুদ্ধার হতে ব্যর্থ হয়। উড়োজাহাজটি মাত্র ৩২ সেকেন্ডের জন্য বাতাসে ভেসে ছিল।

থ্রাস্ট লিভার ও ব্ল্যাক বক্স: থ্রাস্ট লিভারগুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাওয়া গেছে। কিন্তু ব্ল্যাক বক্সের তথ্য অনুযায়ী, টেকঅফ থ্রাস্ট তখনো সক্রিয় ছিল। এটি একটি সংযোগ বিচ্ছিন্নতা বা ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়।

জ্বালানির মান: জ্বালানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেটি পরিষ্কার ছিল এবং জ্বালানি সরবরাহের উৎস থেকে কোনো দূষণ ছিল না।

অন্যান্য বিষয়: টেকঅফের জন্য ফ্ল্যাপ সেটিং (৫ ডিগ্রি) এবং গিয়ার (ডাউন) স্বাভাবিক ছিল। কোনো পাখির আঘাত বা আবহাওয়ার সমস্যা ছিল না। আকাশ পরিষ্কার, দৃশ্যমানতা বেশ ভালো এবং হালকা বাতাস ছিল।

পাইলটদের যোগ্যতা: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাইলটদের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ নেই। উভয়ই শারীরিকভাবে সুস্থ ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তাঁদের এই ধরনের উড়োজাহাজে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতাও ছিল।

নাশকতার ও এফএএ সতর্কতা: তাৎক্ষণিকভাবে কোনো নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, ফুয়েল সুইচে সম্ভাব্য ত্রুটি সম্পর্কে একটি পরিচিত এফএএ (ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) সতর্কতা আগে থেকেই ছিল, কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়া সেই অনুযায়ী কোনো ইনস্পেকশন করেনি। উড়োজাহাজটি ওজন এবং ভারসাম্যের সীমার মধ্যেই ছিল এবং এতে কোনো বিপজ্জনক পণ্য ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাসিনাকে হটানো র‍্যাপ-মিম বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি

বিদেশ ভ্রমণে ভিসা পাওয়া কঠিন হচ্ছে

সিরিয়াস ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিএনপির ওপর দায় চাপানো অপরাজনীতি: সালাহউদ্দিন

বিমানের কাঠমান্ডু ফ্লাইটে বোমাতঙ্ক: ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন মা, জানাল র‍্যাব

দিনাজপুর-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ২৫

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত