Ajker Patrika

দিনাজপুর-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ২৫

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৫, ১২: ০৭
খানসামায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়। এ সময় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খানসামায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়। এ সময় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুর-৪ (চিরিরবন্দর-খানসামা) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ঘিরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। এরই জেরে শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কাচিনীয়া বাজারে কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অনুসারীদের ওপর প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হন এবং ভাঙচুর করা হয় ৫০টির বেশি মোটরসাইকেল।

ঘটনার পর পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন সেনাবাহিনী ও থানার পুলিশ সদস্যরা।

উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী জানান, কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অনুসারী ও ভাবকী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পরিচয়ে আব্দুল জলিল শাহ একটি বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি স্থানে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা প্রচারের জন্য সভার আয়োজনের ঘোষণা দেন। তবে এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়ার অনুসারীদের সঙ্গে।

তাদের দাবি, আব্দুল জলিল শাহ আগে সভাপতি ছিলেন, বর্তমানে তিনি উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্য। ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্বে আছেন মিয়া গ্রুপের অনুসারী নাসির উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম শাহ, মিজানুর রহমান ও তহিদুল ইসলাম তহি।

বিরোধের জেরে শুক্রবার দুপুরে আব্দুল জলিল শাহ ও ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আশরাফ আলী প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন এবং পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।

ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় কাচিনীয়া বাজারে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তাঁর সমর্থকেরা। এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শাহরিয়ার জামান শাহ নিপুণসহ অনেকে।

সভা শেষে মিয়া গ্রুপের নেতা-কর্মীরা কর্নেল গ্রুপের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ। এতে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সদস্য মহসিন আলী শাহ, ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মানিকসহ অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হন এবং ভাঙচুর করা হয় প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল। সংঘর্ষ চলাকালে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের উদ্ধার করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার পর কাচিনীয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে থমথমে পরিবেশ, ভাঙচুর হওয়া মোটরসাইকেল পড়ে আছে এবং অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। আতঙ্কে এলাকাবাসী ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

এ বিষয়ে কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘তারেক রহমানের ৩১ দফা প্রচার ও তৃণমূল বিএনপিকে সংগঠিত করতে গিয়ে আমরা রাজনৈতিক হামলার শিকার হয়েছি। এটা শুধু আমার ওপর নয়, রাজনৈতিক কাজের ওপর আঘাত। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’

অন্যদিকে, মিয়া গ্রুপের অনুসারী জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক ও ভাবকী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁর গ্রুপের কেউ জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমুল হক বলেন, ঘটনার সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আজ বুঝলাম, সময়ের কাছে মানুষ কত অসহায়’—মৃত্যুর আগে স্ট্যাটাস স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার

পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার

হাসিনাকে হটানো র‍্যাপ-মিম বদলে দিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি

চিকিৎসককে হেনস্তা বিএনপি নেতার, প্রতিবাদ করলে নারীকে মারধর

সিরিয়াস ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিএনপির ওপর দায় চাপানো অপরাজনীতি: সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত