Ajker Patrika

ড. ইউনূসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সেভেন সিস্টার্সকে বিমসটেকের কেন্দ্রবিন্দু বলল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০: ৩৯
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে চলমান ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোর দিয়ে বলেছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ‘আন্তঃআঞ্চলিক গোষ্ঠীর’ (বিমসটেক) কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত, যা এই অঞ্চলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর প্রধান্যকেই তুলে ধরে। এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ‘বিমসটেকের জন্য একটি সংযোগ কেন্দ্রে’ পরিণত হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যকে ‘ল্যান্ডলকড’ বা ভূবেষ্টিত আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ভারতের এই রাজ্যগুলোর সমুদ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।

মোদি এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করেন, যার ঠিক এক দিন পর আজ শুক্রবার সম্ভবত ব্যাংককে তাঁর ও ড. ইউনূসের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। এদিকে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রার আয়োজিত নৈশভোজে মোদি ও ইউনূস প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হন।

নৈশভোজে নরেন্দ্র মোদি ড. ইউনূস ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির মাঝে বসেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় সরকারি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা অনুরোধ করায় বৈঠকটি ‘আলোচনার পর্যায়ে’ রয়েছে। ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, এ দুই নেতা আজ শুক্রবার বিকেলে শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই বৈঠক করবেন। বৈঠকটি যদি হয়, তবে ২০২৪ সালের আগস্টে ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ দুই নেতার মধ্যে এটি প্রথম সাক্ষাৎ হবে।

অপরদিকে, বিমসটেকের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিমসটেকের জন্য একটি সংযোগ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এবং ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়কের সমাপ্তি এই অঞ্চলকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত সংযুক্ত করবে। তিনি বলেন, ‘এটি একটি সত্যিকারের গেম-চেঞ্জার হবে।’

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় গত বুধবার স্পষ্ট করে জানায় যে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য ‘সৎ উদ্দেশ্য’ নিয়ে করা হয়েছিল, তবে তা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি যখন বেইজিংকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের সুবিধা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চীনে কথা বলছিলেন, তখন ভারত তা নিয়ে ভ্রু কুঁচকেছিল।

মোদি গত সপ্তাহে বাংলাদেশ জাতীয় দিবসে ইউনূসকে চিঠি লিখে অভিনন্দন জানান এবং একে অপরের স্বার্থ ও উদ্বেগের প্রতি পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে একসঙ্গে কাজ করার তাৎপর্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশ সরকারের সূত্র অনুযায়ী, ভারত বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং দেশে ক্রমবর্ধমান উগ্রবাদের মধ্যে সংখ্যালঘুদের হুমকির বিষয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে।

সরকারি সূত্র অনুসারে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এবং মিয়ানমার জান্তার প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গেও মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। বিদায়ী ভাষণে মোদি বলেন, বিমসটেক বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের আঞ্চলিক উন্নয়ন, সংযোগ এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। মোদি বলেন, ‘আমি বিমসটেক দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে দেখা করার এবং আমাদের জনগণের স্বার্থে আমাদের সহযোগিতা আরও জোরদারের জন্য ফলপ্রসূ আলোচনার অপেক্ষায় রয়েছি।’

এর আগে, ২০২২ সালে কলম্বোয় অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা বিমসটেক সনদ গ্রহণ করেন। এই সনদ এটিকে একটি গোষ্ঠী থেকে একটি আঞ্চলিক সংস্থায় রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। সার্ক এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা না থাকায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে, ভারতীয় সরকার আঞ্চলিক বাণিজ্য, সংযোগ ও নিরাপত্তার বিকল্প হিসেবে বিমসটেককে উৎসাহিত করছে। কলম্বো শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় মোদি পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি বিমসটেক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)-এর জন্য চলমান আলোচনা দ্রুত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একসঙ্গে দুই চাকরি: যুক্তরাষ্ট্রে ৪৯ লাখ রুপি আয়ের পর ধরা খেলেন ভারতীয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মেহুল গোস্বামী। ছবি: এনডিটিভি
মেহুল গোস্বামী। ছবি: এনডিটিভি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গোপনে ঠিকাদার হিসেবে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিযোগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩৯ বছর বয়সী মেহুল গোস্বামী নামের ওই নাগরিকের বিরুদ্ধে করদাতাদের অর্থ অপচয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের পুলিশের মহাপরিদর্শকের কার্যালয় এবং সারাটোগা কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ের যৌথ তদন্তে জানা গেছে, মেহুলের এই অবৈধ কার্যকলাপের ফলে করদাতাদের ৫০ হাজার ডলার (প্রায় ৪০ লাখ রুপি) অপব্যবহার হয়েছে।

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্ভিসেসের জন্য দূর থেকে কাজ করতেন মেহুল। এটিই ছিল তাঁর মূল চাকরি। কিন্তু পাশাপাশি ২০২২ সালের মার্চ থেকে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি গ্লোবালফাউন্ড্রিজে ঠিকাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।

একটি বেনামি ই-মেইল থেকে বিষয়টি ফাঁস হলে মেহুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।

পুলিশের মহাপরিদর্শক লুসি ল্যাং বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সততার সঙ্গে জনগণের সেবা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। মেহুল গোস্বামীর এহেন আচরণ সেই আস্থার গুরুতর লঙ্ঘন। সরকারি চাকরিতে থাকার সময় দ্বিতীয় পূর্ণকালীন চাকরি করা সরকারি সম্পদ ও করদাতার অর্থের অপব্যবহার।

১৫ অক্টোবর সারাটোগা কাউন্টি শেরিফ কার্যালয় মেহুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে তাঁর।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দক্ষিণ কোরিয়ায় বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প ও সি চিন পিং

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ায় এক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস।

বিশ্বের বৃহৎ দুই অর্থনীতির দেশের এই দুই নেতার বৈঠকের প্রস্তুতি কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছিল। তবে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় বৈঠক আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।

বৈঠকটি হলে তা হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গতকাল বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বলা হচ্ছে, দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠক হবে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের ফাঁকে, যা ৩১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর গিয়ংজুতে অনুষ্ঠিত হবে।

ট্রাম্প এরই মধ্যে বলেছেন, ‘আমাদের বেশ দীর্ঘ বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে। আমরা আমাদের অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ মিটিয়ে নিতে পারব এবং একসঙ্গে আমাদের বিশাল সম্ভাবনাগুলো নিয়ে কাজ করতে পারব। আমার মনে হয়, কোনো না কোনো সমাধান পাওয়া যাবে। আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আসন্ন আলোচনাকে ঘিরে আজ শুক্রবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও।

ওয়াং ওয়েনতাও বলেন, আগের আলোচনাগুলোর অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, দুই পক্ষের উদ্বেগের সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্পূর্ণ সম্ভব এবং এতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের সুস্থ, স্থিতিশীল ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তোমরা মরুভূমিতে উটের পিঠে চড়েই থাকো—সৌদি আরবকে ইসরায়েলি মন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের কট্টর ইহুদীবাদী নেতা ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের কট্টর ইহুদীবাদী নেতা ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শর্তে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের কোনো চুক্তি তিনি মেনে নেবেন না। এ সময় তিনি অবমাননাকর ভঙ্গিতে বলেন, সৌদিরা যেন ‘মরুভূমিতে উটের পিঠে চড়েই থাকে।’

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, ‘হালাখা ইন দ্য টেকনোলজিক্যাল এরা’—নামের এক সম্মেলনে স্মতরিচ এই কথা বলেন। এই সম্মেলনের আয়োজক ছিল জোমেট ইনস্টিটিউট ও মাকোর রিশন নামক একটি সংবাদমাধ্যম।

স্মতরিচ বলেন, ‘যদি সৌদি আরব আমাদের বলে যে, “স্বাভাবিকীকরণের বদলে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা”, তবে সেটা হবে না বন্ধুরা। ধন্যবাদ। তোমরা মরুভূমিতে উটের পিঠে চড়তে থাক। আর আমরা আমাদের অর্থনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে থাকি। আমাদের যেসব মহৎ কাজ করতে জানা আছে তা-ই করব।’

তাঁর এই মন্তব্যের পর ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, স্মতরিচ অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন, দেশের ক্ষতি করেছেন, এবং বলেন তিনি ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাঁরা স্মতরিচকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পর কট্টর জায়নবাদী এই চরম-ডানপন্থী নেতা ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব সম্পর্কে আমার মন্তব্য সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত। এর জন্য যে আঘাত লেগেছে তার জন্য আমি দুঃখিত।’ একই সঙ্গে তিনি শর্ত জুড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি আশা করি, সৌদি আরব আমাদের ক্ষতি করবে না। আমাদের ঐতিহ্য, ধর্ম ও ইহুদি জাতির ঐতিহাসিক ভূমিতে—জুডিয়া ও সামারিয়ায় (যা বর্তমানে পশ্চিম তীর)—আমাদের অধিকার অস্বীকার করবে না এবং আমাদের সঙ্গে সত্যিকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে।’

এর আগে, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে গত বুধবার একটি প্রাথমিক বিল পাস হয়। এই বিলে পশ্চিম তীরের বসতিগুলোর ওপর ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব আরোপের কথা বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর লিকুদ পার্টি এর বিরোধিতা করলেও ভোটটি পাস হয়।

নেতানিয়াহুর জোটের অনেক সদস্য সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিম তীর দখলদারিত্বকে বৈধ করার আহ্বান জানাচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বরে স্মতরিচ প্রকাশ্যে পশ্চিম তীরের ৮২ শতাংশ এলাকা দখলের দাবি জানান। তবে আঞ্চলিক দেশগুলো সতর্ক করে দিয়েছে যে, এমন পদক্ষেপ ইসরায়েলের মধ্যপ্রাচ্যে একীভূত হওয়ার পথ বন্ধ করে দেবে।

এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও সংকট তৈরি করতে পারে। ট্রাম্প গত মাসে বলেছেন, তিনি পশ্চিম তীর সংযুক্তির অনুমতি দেবেন না। এ কারণে নেতানিয়াহুর জোটের মিত্ররা প্রধানমন্ত্রীকে ওয়াশিংটনের নির্দেশ উপেক্ষা করতে বলেছেন।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নভেম্বরে হোয়াইট হাউসে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আতিথেয়তা দেবেন। আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে থাকবে ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি এগিয়ে নেওয়া। তবে স্মতরিচের এমন মন্তব্য ও উল্লিখিত বিল পুরো বিষয়টিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

রিয়াদ বরাবরই বলেছে, ইসরায়েল যদি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সুস্পষ্ট ও অপরিবর্তনীয় সময়সীমাসহ পথনকশা ঘোষণা না করে, তবে তারা সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কানাডা ‘বাজে আচরণ’ করায় বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দিলেন ট্রাম্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রতিবেশী কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি কানাডার ‘বাজে আচরণ’কে তুলে ধরেছেন। নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক আলোচনাকে অবিলম্বে বন্ধ করে দিচ্ছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেন, কানাডা এমন একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে যেখানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানকে শুল্কনীতির সমালোচনা করতে শোনা গেছে।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘তাদের চরম বাজে আচরণের কারণে কানাডার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা এখানেই সমাপ্ত।’ বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র সরকার কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র–মেক্সিকো–কানাডা চুক্তি (ইউএসএসসিএ)—এর আওতায় পড়া পণ্যের ক্ষেত্রে ছাড় রাখা হয়েছে। এই চুক্তিটি ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে করেছিলেন।

ট্রাম্প বলেছেন, কানাডার অন্টারিও রাজ্যের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি ওই ভিডিওর উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে প্রভাবিত করা। আগামী নভেম্বরে আদালত বৈশ্বিক শুল্ক আরোপের বৈধতা নিয়ে রায় দেবে। এই রায়কে ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও তাঁর অর্থনৈতিক নীতির সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। আদালত যদি তাঁর বিপক্ষে রায় দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক বাবদ সংগৃহীত কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে হতে পারে।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক মিনিটের ওই বিজ্ঞাপনে রিগ্যানের কণ্ঠ শোনা যায়। যেখানে তিনি ১৯৮৭ সালের এক রেডিও ভাষণে বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছেন। দৃশ্যে দেখা যায় নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পতাকাবাহী ক্রেনসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল। রিগ্যানের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘যখন কেউ বলে ‘বিদেশি পণ্যে শুল্ক আরোপ করছি’—তখন সেটা দেশপ্রেমিক কাজ বলে মনে হয়। আর কিছু সময়ের জন্য হয়তো তা কার্যকরও হয়, কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য। ”

ভিডিও রিগ্যানকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘দীর্ঘমেয়াদে এসব বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা প্রতিটি আমেরিকানকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে—কর্মী ও ভোক্তা উভয়কেই। উচ্চ শুল্কের ফলে বিদেশি দেশগুলো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়, যার পরিণতিতে ভয়াবহ বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়...বাজার সংকুচিত হয়, ব্যবসা ও শিল্প বন্ধ হয়ে যায়, আর কোটি মানুষ চাকরি হারায়।’

রোনাল্ড রিগ্যান ফাউন্ডেশন এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, অন্টারিও সরকার রিগ্যানের বক্তব্যের ‘নির্বাচিত অংশ’ ব্যবহার করেছে এবং ভিডিও-অডিও সম্পাদনা করে বিজ্ঞাপন বানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অন্টারিও সরকার রিগ্যানের বক্তব্য ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়নি এবং সম্পাদনার অনুমতিও পায়নি।’ ফাউন্ডেশন আরও জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনটিতে ‘সাবেক প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।’ ফাউন্ডেশন আইনি পদক্ষেপের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।

অন্টারিও প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী সমতুল্য) ডগ ফোর্ড বিজ্ঞাপনটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমেরিকান শুল্কের বিরুদ্ধে আমরা কখনোই লড়াই থামাব না।’ কানাডার সবচেয়ে জনবহুল ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য অন্টারিও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। বিশেষ করে গাড়ি ও ইস্পাত শিল্পে ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ।

ট্রাম্পের আগের শুল্ক হুমকির পর ফোর্ড পাল্টা বলেন, প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটনের বাণিজ্যনীতি ‘আমাদের পিঠে ছুরি মেরে আবার সেটি ঘুরিয়ে দিয়েছে।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের ট্রাম্পের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর এখনো ফোর্ড বা কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি কোনো মন্তব্য করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রে মূলধারার টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত ওই বিজ্ঞাপন প্রচারণার মোট ব্যয় ৭ কোটি ৫০ লাখ কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড বা ৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা, মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

ভোটের সাত দিন আগেই কেন্দ্রে সেনা চায় বিএনপি

প্রতিবেশীদের ছাড়াই পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষ ভারতের, পারবে কি

সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ: স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঘাড়ে ১ শতাংশ স্বাক্ষরের বোঝা থাকছেই

যমুনা রেলসেতুর পিলারে ফাটল, কর্তৃপক্ষ বলছে গঠনগত কোনো সমস্যা নয়

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত