Ajker Patrika

হিমাচলে বন্যা-ভূমিধসে নিহত ৫১, নিখোঁজ ২২

কলকাতা প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৮: ৫৪
ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চলছে। ছবি: এনডিটিভি
ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চলছে। ছবি: এনডিটিভি

ভারতের হিমাচল প্রদেশে চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রবল বৃষ্টি, হঠাৎ বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ২২ জন নিখোঁজ হয়েছে বলেও জানা গেছে। রাজ্যের স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এসইওসি) প্রকাশিত সর্বশেষ ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২০ জুন থেকে ১ জুলাই তারিখ পর্যন্ত এই দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজ্যের ১২টি জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই দুর্যোগে ব্যক্তিগত সম্পত্তি, গবাদি পশু এবং সরকারি অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হলো মান্ডি। সেখানে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩৪ জন নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে, যার বেশির ভাগই হঠাৎ বন্যা ও ব্যাপক বৃষ্টির কারণে।

রাজ্যজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা সম্পর্কিত ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০৩ জন আহত হয়েছে। এসইওসি জানিয়েছে, ‘বিভিন্ন কারণে এ পর্যন্ত মোট ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হঠাৎ বন্যা, ডুবে যাওয়া, ভূমিধস, বজ্রপাত এবং সড়ক দুর্ঘটনা। নিখোঁজের সংখ্যা ২২।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই দুর্যোগে মোট ২০৪টি ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে ২২টি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৪টি দোকান, গোয়ালঘর ও শ্রমিকদের কুঁড়েঘর। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮৮ দশমিক ০৩ লাখ রুপি।

তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে সরকারি অবকাঠামোর, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২৮৩ দশমিক ৩৯ কোটি রুপি। ক্ষতিগ্রস্ত সেক্টরের মধ্যে রয়েছে সরকারি নির্মাণ বিভাগ (পিডব্লিউডি), জলশক্তি বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গ্রামীণ ও নগর উন্নয়ন, মৎস্য এবং পশুপালন বিভাগ।

এসইওসির এক মুখপাত্র বলেন, ‘এই পরিসংখ্যান আপাতত প্রাথমিক। মাঠ পর্যায় থেকে আরও রিপোর্ট এলে তা হালনাগাদ করা হবে। সব জেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

মৃত্যুর দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাংড়া জেলা, যেখানে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর মান্ডি ও চাম্বা জেলায় ছয়জন করে, কুল্লু জেলায় চারজন, কিন্নৌর, শিমলা ও উনা জেলায় দুই থেকে চারজন এবং সিরমোর ও সোলান জেলায় কমসংখ্যক প্রাণহানি হয়েছে।

জুলাইয়ের ১ তারিখে নতুন করে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বিলাসপুর ও মান্ডিতে একজন করে, কুল্লুতে তিনজন এবং চাম্বায় দুজন। এই পাঁচজনের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনার কারণে হয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগে ৮৪টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে, যা কৃষি ও গবাদি পশু পালনের ওপর নির্ভরশীল গ্রামীণ পরিবারগুলোর জন্য বড় ধরনের ক্ষতি। শুধু জুন মাসেই ১৩২ জনের মৃত্যু, ২৭০ জন আহত এবং ৮৩০টি পশুর প্রাণহানি ঘটেছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমাচল প্রদেশ সরকার জরুরি প্রটোকল চালু করেছে এবং স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। যে কেউ জরুরি পরিস্থিতি জানাতে ১০৭০ হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জেলার প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত