Ajker Patrika

কর্ণাটকে বিপজ্জনক গুহায় বাস, দুই শিশুকন্যাসহ রুশ নারীকে উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১২: ৫৭
গহিন বনে বিপজ্জনক গুহায় বসবাস করছিলেন রুশ নারী। ছবি: সংগৃহীত
গহিন বনে বিপজ্জনক গুহায় বসবাস করছিলেন রুশ নারী। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের এক গুহায় দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে বসবাস করছিলেন এক রুশ নারী। টহল পুলিশের নজরে পড়ার পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোকর্ণার রামতীর্থ পাহাড়ের একটি প্রত্যন্ত ও বিপজ্জনক গুহায় বাস করছিলেন ওই নারী। গোকর্ণা পুলিশের একটি টহল দল জঙ্গলের গভীরে একটি অস্থায়ী আবাসে তাঁদের আবিষ্কার করে।

ঘটনাটি প্রকাশ পায় ৯ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে, যখন গোকর্ণা পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর শ্রীধর এসআর এবং তাঁর দল রামতীর্থ পাহাড় এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল দিচ্ছিলেন। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে তল্লাশির সময় তাঁরা একটি ভূমিধসপ্রবণ বিপজ্জনক এলাকায় অবস্থিত গুহার কাছে কিছু নড়াচড়া লক্ষ করেন। পরে তাঁরা গুহার ভেতরে ৪০ বছর বয়সী রাশিয়ার নারী নিনা কুতিনা এবং তাঁর দুই কন্যা প্রেমা (৬ বছর ৭ মাস) এবং আমা (৪ বছর)-কে দেখেন।

জিজ্ঞাসাবাদে নিনা জানান, তিনি গোয়া থেকে গোকর্ণায় আধ্যাত্মিক নির্জনতার খোঁজে এসেছেন। তিনি শহুরে জীবনের বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে ধ্যান ও প্রার্থনার জন্য জঙ্গলের গুহায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও তাঁর উদ্দেশ্য ছিল আধ্যাত্মিক, তবে কর্তৃপক্ষ শিশুদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে থাকার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

গুহাটি অবস্থিত রামতীর্থ পাহাড়ে। সেখানে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে একটি বড় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছিল। এটি বিষধর সাপসহ বিপজ্জনক বন্য প্রাণীদের আবাসস্থল।

নিনাকে এই বিপদ সম্পর্কে সচেতন করার পর পুলিশ দল তাদের উদ্ধার করে পাহাড় থেকে নামিয়ে আনে। নিনার অনুরোধেই, তাঁকে কুমটা তালুকের বানকিকোদলা গ্রামে ৮০ বছর বয়সী সন্ন্যাসী স্বামী যোগরত্ন সরস্বতী পরিচালিত একটি আশ্রমে স্থানান্তর করা হয়।

পুলিশ তদন্তের সূত্রে জানা যায়, নিনা পাসপোর্ট ও ভিসার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশ, কল্যাণ কর্মকর্তা এবং আশ্রম প্রধানের ক্রমাগত প্রশ্নের পর তিনি জানান, তাঁর নথিপত্র সম্ভবত গুহায় হারিয়ে গেছে।

পরে গোকর্ণা পুলিশ এবং বন বিভাগের যৌথ অভিযানে নিনার পাসপোর্ট এবং ভিসার নথি উদ্ধার করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, নিনা ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল বৈধ একটি বিজনেস ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেন। ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল গোয়ার এফআরআরও পানাজি থেকে একটি এক্সিট পারমিট জারি করা হয়েছিল। রেকর্ডে দেখা যায়, তিনি নেপালে গিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আবার ভারতে প্রবেশ করেন। ফলে তিনি অনুমোদিত সময়ের বেশি ভারতে অবস্থান করছিলেন।

ভিসার সময়সীমা লঙ্ঘনের কারণে নিনা এবং তাঁর দুই কন্যাকে কারওয়ারের নারী ও শিশু উন্নয়ন বিভাগ পরিচালিত নারী অভ্যর্থনা কেন্দ্রে প্রতিরক্ষামূলক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

উত্তর কন্নড়ের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট বেঙ্গালুরুর ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও)-এর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরু করেছেন। নিনা এবং তাঁর দুই কন্যাকে রাশিয়ায় প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত