Ajker Patrika

মার্কিন-চীন বাণিজ্যিক সম্পর্ককে জটিল করে তুলছে মারাত্মক এক মাদক

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৩২
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর অভিযোগ ছিল, চীনারা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রাণঘাতী ফেন্টানিল প্রবাহে সহায়তা করছে।

আজ রোববার সিএনএন জানিয়েছে, ফেন্টালিন নিয়ে মার্কিন অভিযোগের বিষয়ে চীনের অবস্থান স্পষ্ট। চীনা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ফেন্টানিল সমস্যাটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব সংকট এবং চীন ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা সমতা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। তবে হুমকি, চাপ ও ব্ল্যাকমেল করা মেনে নেওয়া হবে না।’

সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ পর্যালোচনা করেও ধারণা করা হচ্ছে, বেইজিং হয়তো এ বিষয়ে আরও কিছু করতে আগ্রহী। গত মাসে দেশটি ফেন্টানিল তৈরির জন্য দুটি প্রয়োজনীয় উপাদানকে কালো তালিকাভুক্ত করে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এ ছাড়া ‘নিটাজিন’ নামে পরিচিত একধরনের ভয়ংকর কৃত্রিম ওপিওয়েডের ওপরও কঠোর নজরদারি জারি করেছে। চীনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং শিয়াওহং সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জানিয়েছিলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহারিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য চীন প্রস্তুত।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ফেন্টালিন তৈরির জন্য চীন থেকে উৎপাদিত রাসায়নিক উপাদানগুলো মেক্সিকোর মাফিয়াদের ল্যাবে পৌঁছে যাচ্ছে এবং সেখান থেকে প্রস্তুত হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসছে।

তবে চীনের দাবি, ইতিমধ্যে তারা ফেন্টালিনের বিপুল উপাদান আটক করেছে। ২০২৪ সালে ১ হাজার ৪০০ টন প্রিকার্সার রাসায়নিক জব্দ ছাড়াও এ-সংক্রান্ত ১৫১টি অপরাধের তদন্ত শেষ করেছে। চীনা কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে সহানুভূতিশীল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র চীনের নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে স্বীকৃতি না দিলে সহযোগিতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির (ডিইএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ফেন্টানিলের বিশুদ্ধতা হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে এটাই বোঝা যায় যে, ফেন্টালিন প্রস্তুতকারকদের জন্য চীনভিত্তিক প্রিকার্সার পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে ফেন্টালিনের উপাদানে চীনের নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিষয়টি টের পাওয়া গেলেও মার্কিন প্রশাসন খোলাখুলিভাবে বিষয়টি এখনো স্বীকার করেনি।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রিকার্সারে চীনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক চাপে নেওয়া পদক্ষেপ, অন্যদিকে এটি চীনের কৌশলগত কূটনীতির অংশ। বিশেষ করে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের মুখে একটি সমঝোতা চাওয়ার কৌশল।

চীন ইতিমধ্যে ট্রাম্পের ২০ শতাংশ শুল্ককে ‘অসহযোগিতার নজির’ বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিকার সহযোগিতা চায়, তবে বাস্তবতা মেনে নিয়ে সংলাপের পথে ফিরে আসতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকট সমাধানে শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে মাদকের চাহিদা কমানোও জরুরি। চীনের বিজ্ঞানী হুয়া ঝেনডং বলেন, শুধু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। মূল সমস্যা চাহিদা।

এই সংকট শুধু দুই দেশের স্বাস্থ্য ও আইনশৃঙ্খলাব্যবস্থা নয়, বরং বৈশ্বিক বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। এখন দেখার বিষয়—চীন ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে এই ‘মরণনেশা’ মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপে কত দূর যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা মামলার আসামি দুই ভাই নেত্রকোনায় গ্রেপ্তার

‘নৌকা আউট, শাপলা ইন’, সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির চাওয়া

পারটেক্স এমডি রুবেল আজিজের ১১৬ কোটি টাকার সম্পত্তি নিলামে তুলছে ব্যাংক এশিয়া

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, প্রস্তাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

যশোরে কেন্দ্রের ভুলে বিজ্ঞানের ৪৮ জন ফেল, সংশোধনে জিপিএ-৫ পেল সবাই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত