অনলাইন ডেস্ক
স্থানীয় সময় ভোর ৪টা। তখনো আজান দেওয়ার সময় হয়নি। তার পরও ঘুমানোর মতো অবকাশ নেই ৫২ বছরের জাফরানচাষি বশির আহমেদের। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার পামপুরের বাসিন্দা তিনি। ঘুটঘুটে অন্ধকারে টর্চলাইট হাতে পাহারা দিচ্ছেন ফসল।
বিরক্তি আর হতাশা নিয়ে তিনি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ‘এ যেন এক যুদ্ধ। জলবায়ু পরিবর্তন, দামের নিম্নগতি সব মোকাবিলা করেছি। কিন্তু শজারুদের সঙ্গেও লড়তে হবে, তা কে ভেবেছিল?’
সম্প্রতি শজারুর উপদ্রবে ধ্বংসের মুখে পামপুরের জাফরানশিল্প। শজারু (ইন্ডিয়ান ক্রেস্টেড পর্কিউপাইন) রাতের অন্ধকারে এসে খেয়ে যায় জাফরানের কন্দ বা আলুর মতো একধরনের মূল, যা চাষিদের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
ভারতের জাফরানশিল্পের কেন্দ্র কাশ্মীরের এই অঞ্চল। ইরান আর আফগানিস্তানের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জাফরান উৎপাদনকারী এলাকা এটি। পামপুরে উৎপাদিত জাফরানে ক্রোসিনের (জাফরান ফুলের কেশরের রং ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মান নির্ধারণ করে এই উপাদান। ক্রোসিনের পরিমাণ যত বেশি, গুণমান তত ভালো) পরিমাণ ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। গাঢ় লালচে রং ও তীব্র সুবাসের কারণে বিখ্যাত কাশ্মীরি জাফরান।
আগে শজারুগুলো জঙ্গলে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তারা জাফরানের খেতেও হানা দিচ্ছে। বন ধ্বংস, আবাসস্থল হারানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাণীগুলো বন ছেড়ে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এই নিশাচর প্রাণীরা মাটির গভীরে খুঁড়ে জাফরানের কন্দ খেয়ে ফেলে।
নানা কারণে আগে থেকেই ধুঁকছে কাশ্মীরের জাফরান উৎপাদন। অনিয়মিত বৃষ্টি, পানির ঘাটতি ও কৃষিজমির দখলের কারণে ক্রমশ কমছিল উৎপাদন। ২০২১-২২ অর্থবছরে অঞ্চলটির জাফরানের কেশর উৎপাদন রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৪৮ টন। ২০২৪ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ২ দশমিক ৬ টনে। অথচ ১৯৯৭-৯৮ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৯৭ টন।
আলজাজিরার হিসাব অনুসারে প্রতিবছর প্রায় ৩০ শতাংশ করে উৎপাদন কমছে অঞ্চলটিতে। কেশরচাষি বশির আহমেদের হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে শুধু শজারুর কারণে সাড়ে ৩ হাজার ডলার সমমূল্যের উৎপাদন কমেছে। তিনি বলেন, ‘৪৫ মিলিয়ন ডলারের (৩৮৫ কোটি রুপির বেশি) শিল্প এটি। কেশর উৎপাদনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কাশ্মীরের ৩২ হাজার পরিবারের জীবিকা, যা শজারুর কারণে ধ্বংসের মুখে।’
বশির আহমেদ আরও বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম ছাগল বা ভেড়া হয়তো খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু যখন মাঠজুড়ে শজারুর কাঁটা দেখতে পেলাম, তখন বুঝলাম সমস্যা অনেক বড়।’
সমস্যা প্রকট হওয়ার পর স্থানীয় বন বিভাগ গত বছর একধরনের জৈব প্রতিরোধক স্প্রে দেয় কৃষকদের। কিন্তু প্রথম কদিন ওই স্প্রেতে কাজ হলেও পরে আবার ফিরে আসে নিশাচর প্রাণীগুলো। ঝোপজঙ্গল দিয়ে মাঠ ঘেরাও করা, রাত জেগে পাহারা দেওয়ার মতো পুরোনো পদ্ধতি অবলম্বন করেও দেখেছেন কৃষকেরা। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ নিয়ে আব্দুর রশিদ নামের এক কৃষক বলেন, ‘বন বিভাগের স্প্রেতে তেমন কোনো কাজই হয়নি। এখন আরও গভীরে খুঁড়ে খায় শজারুরা। এভাবে চললে কাশ্মীরি (জাফরানের) কেশর হারিয়ে যাবে।’
এই বুনো শজারুর সমস্যা শুধু স্থানীয় বিষয় নয়। কাশ্মীরি কেশর একটি আন্তর্জাতিক পণ্য এবং এর উৎপাদন ব্যাহত হলে বৈশ্বিক বাজারেও প্রভাব পড়বে। বিশ্বের ৮৫ শতাংশ কেশর উৎপাদন করে ইরান, কিন্তু তাদের কেশরের ক্রোসিন মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা কাশ্মীরি কেশরের তুলনায় অনেক কম। কাশ্মীরের ফলন কমে যাওয়ায় জাফরানের বাজারে ইরানের দখল আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কাশ্মীরি ব্যবসায়ীরা। কেশর ব্যবসায়ী বিলাল আহমেদ বলেন, ‘শুধু ৫ শতাংশ ফসল হারালেই ২৯ লাখ রুপি (৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার) ক্ষতি। এমন হতে থাকলে দাম অনেক বাড়বে এবং কাশ্মীরি কেশর বিলাসদ্রব্যে পরিণত হবে, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে এটি।’
কাশ্মীর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মীর মুসকান উন-নিসা বলেন, বন ধ্বংসের কারণে শজারুরা প্রাকৃতিক বাসস্থান ও খাবারের সুযোগ হারিয়েছে। কেশরের কন্দ এখন তাদের জন্য সহজলভ্য ও পুষ্টিকর খাবার হয়ে উঠেছে।
মুসকান আরও বলেন, ‘শজারুদের মাটি খোঁড়াখুঁড়ি ও খাওয়ার পদ্ধতি কেবল ফলনই কমায় না, মাটির গুণগত মানও নষ্ট করে, যা ভবিষ্যতের কৃষিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।’ তাঁর মতে, এ সমস্যা এড়াতে গভীরভাবে তারের বেষ্টনী বসানো যেতে পারে, যা মাটির অন্তত ৫ ফুট নিচ থেকে শুরু হবে। তাহলে গর্ত খুঁড়ে ভেতরে ঢুকতে পারবে না শজারু।
তিনি বলেন, এ ছাড়া প্রাকৃতিক প্রতিরোধক যেমন—আলো বা শব্দের সেনসর ব্যবহার করে প্রাণী তাড়ানোর ব্যবস্থাও কার্যকর হতে পারে। শজারুদের নিরাপদ বাসস্থান তৈরি করা ‘ফসল এবং প্রাণী’ উভয়ের জন্যই জরুরি বলে মনে করেন মুসকান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনও এই সমস্যার অন্যতম একটি কারণ। আবহাওয়ার চক্র বদলে যাওয়ায় শজারুর প্রাকৃতিক খাদ্য হ্রাস পেয়েছে। আগে শীতে তারা ঘুমিয়ে থাকত, কিন্তু এখন তেমন শীত না পড়ায় শীতনিদ্রায় যায় না, বরং সক্রিয় থাকে। ফলে তারা ক্ষতিও বেশি করছে। আর একসময় যেসব বন্য প্রাণী—চিতা, বন্য কুকুর—শজারুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখত, বন ধ্বংস আর মানুষে হস্তক্ষেপের কারণে এখন তাদের সংখ্যাও কমে গেছে।
তাহলে শজারুর হুমকি ঠেকানোর কি আর কোনো উপায় নেই? আছে! স্থানীয় কৃষি ও বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা এই হুমকি ঠেকাতে নানা উপায় খোঁজার চেষ্টা করছেন। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ জহির আহমেদ বলেন, ‘বন্য কুকুরের মতো প্রাকৃতিক শিকারি প্রাণী নিধন বন্ধ করে তাদের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতে গৃহপালিত পশু ও মানুষের জন্যও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, যা এড়ানোর উপায় তেমন নেই। অনেকে বেড়া ও ফাঁদ পাতার কথা বলছেন। কিন্তু ইলেকট্রিক বেড়া ছাড়া অন্য কোনো বেড়া এখানে তেমন কার্যকর হবে না। আবার ইলেকট্রিক বেড়া অনেকের জন্য ব্যয়বহুল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান হতে পারে, শজারুগুলোকে ধরে অন্যত্র তাদের বাসস্থান তৈরি কের দেওয়া।’
জহির আহমেদ আরও বলেন, ‘মাঠের চারপাশে আফিম গাছ বা করলা জাতীয় উদ্ভিদ লাগানো যেতে পারে, যার গন্ধ শজারুরা সহ্য করতে পারে না। এ ছাড়া, গোলমরিচের জলীয় দ্রবণ স্প্রে করাও সাহায্য করতে পারে, যদি তা ফসলে ক্ষতি না করে।’
স্থানীয় সময় ভোর ৪টা। তখনো আজান দেওয়ার সময় হয়নি। তার পরও ঘুমানোর মতো অবকাশ নেই ৫২ বছরের জাফরানচাষি বশির আহমেদের। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার পামপুরের বাসিন্দা তিনি। ঘুটঘুটে অন্ধকারে টর্চলাইট হাতে পাহারা দিচ্ছেন ফসল।
বিরক্তি আর হতাশা নিয়ে তিনি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ‘এ যেন এক যুদ্ধ। জলবায়ু পরিবর্তন, দামের নিম্নগতি সব মোকাবিলা করেছি। কিন্তু শজারুদের সঙ্গেও লড়তে হবে, তা কে ভেবেছিল?’
সম্প্রতি শজারুর উপদ্রবে ধ্বংসের মুখে পামপুরের জাফরানশিল্প। শজারু (ইন্ডিয়ান ক্রেস্টেড পর্কিউপাইন) রাতের অন্ধকারে এসে খেয়ে যায় জাফরানের কন্দ বা আলুর মতো একধরনের মূল, যা চাষিদের নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
ভারতের জাফরানশিল্পের কেন্দ্র কাশ্মীরের এই অঞ্চল। ইরান আর আফগানিস্তানের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জাফরান উৎপাদনকারী এলাকা এটি। পামপুরে উৎপাদিত জাফরানে ক্রোসিনের (জাফরান ফুলের কেশরের রং ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মান নির্ধারণ করে এই উপাদান। ক্রোসিনের পরিমাণ যত বেশি, গুণমান তত ভালো) পরিমাণ ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। গাঢ় লালচে রং ও তীব্র সুবাসের কারণে বিখ্যাত কাশ্মীরি জাফরান।
আগে শজারুগুলো জঙ্গলে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তারা জাফরানের খেতেও হানা দিচ্ছে। বন ধ্বংস, আবাসস্থল হারানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাণীগুলো বন ছেড়ে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এই নিশাচর প্রাণীরা মাটির গভীরে খুঁড়ে জাফরানের কন্দ খেয়ে ফেলে।
নানা কারণে আগে থেকেই ধুঁকছে কাশ্মীরের জাফরান উৎপাদন। অনিয়মিত বৃষ্টি, পানির ঘাটতি ও কৃষিজমির দখলের কারণে ক্রমশ কমছিল উৎপাদন। ২০২১-২২ অর্থবছরে অঞ্চলটির জাফরানের কেশর উৎপাদন রেকর্ড করা হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৪৮ টন। ২০২৪ সালে তা আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ২ দশমিক ৬ টনে। অথচ ১৯৯৭-৯৮ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৯৭ টন।
আলজাজিরার হিসাব অনুসারে প্রতিবছর প্রায় ৩০ শতাংশ করে উৎপাদন কমছে অঞ্চলটিতে। কেশরচাষি বশির আহমেদের হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে শুধু শজারুর কারণে সাড়ে ৩ হাজার ডলার সমমূল্যের উৎপাদন কমেছে। তিনি বলেন, ‘৪৫ মিলিয়ন ডলারের (৩৮৫ কোটি রুপির বেশি) শিল্প এটি। কেশর উৎপাদনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কাশ্মীরের ৩২ হাজার পরিবারের জীবিকা, যা শজারুর কারণে ধ্বংসের মুখে।’
বশির আহমেদ আরও বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম ছাগল বা ভেড়া হয়তো খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু যখন মাঠজুড়ে শজারুর কাঁটা দেখতে পেলাম, তখন বুঝলাম সমস্যা অনেক বড়।’
সমস্যা প্রকট হওয়ার পর স্থানীয় বন বিভাগ গত বছর একধরনের জৈব প্রতিরোধক স্প্রে দেয় কৃষকদের। কিন্তু প্রথম কদিন ওই স্প্রেতে কাজ হলেও পরে আবার ফিরে আসে নিশাচর প্রাণীগুলো। ঝোপজঙ্গল দিয়ে মাঠ ঘেরাও করা, রাত জেগে পাহারা দেওয়ার মতো পুরোনো পদ্ধতি অবলম্বন করেও দেখেছেন কৃষকেরা। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।
কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ নিয়ে আব্দুর রশিদ নামের এক কৃষক বলেন, ‘বন বিভাগের স্প্রেতে তেমন কোনো কাজই হয়নি। এখন আরও গভীরে খুঁড়ে খায় শজারুরা। এভাবে চললে কাশ্মীরি (জাফরানের) কেশর হারিয়ে যাবে।’
এই বুনো শজারুর সমস্যা শুধু স্থানীয় বিষয় নয়। কাশ্মীরি কেশর একটি আন্তর্জাতিক পণ্য এবং এর উৎপাদন ব্যাহত হলে বৈশ্বিক বাজারেও প্রভাব পড়বে। বিশ্বের ৮৫ শতাংশ কেশর উৎপাদন করে ইরান, কিন্তু তাদের কেশরের ক্রোসিন মাত্র ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা কাশ্মীরি কেশরের তুলনায় অনেক কম। কাশ্মীরের ফলন কমে যাওয়ায় জাফরানের বাজারে ইরানের দখল আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কাশ্মীরি ব্যবসায়ীরা। কেশর ব্যবসায়ী বিলাল আহমেদ বলেন, ‘শুধু ৫ শতাংশ ফসল হারালেই ২৯ লাখ রুপি (৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার) ক্ষতি। এমন হতে থাকলে দাম অনেক বাড়বে এবং কাশ্মীরি কেশর বিলাসদ্রব্যে পরিণত হবে, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে এটি।’
কাশ্মীর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মীর মুসকান উন-নিসা বলেন, বন ধ্বংসের কারণে শজারুরা প্রাকৃতিক বাসস্থান ও খাবারের সুযোগ হারিয়েছে। কেশরের কন্দ এখন তাদের জন্য সহজলভ্য ও পুষ্টিকর খাবার হয়ে উঠেছে।
মুসকান আরও বলেন, ‘শজারুদের মাটি খোঁড়াখুঁড়ি ও খাওয়ার পদ্ধতি কেবল ফলনই কমায় না, মাটির গুণগত মানও নষ্ট করে, যা ভবিষ্যতের কৃষিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।’ তাঁর মতে, এ সমস্যা এড়াতে গভীরভাবে তারের বেষ্টনী বসানো যেতে পারে, যা মাটির অন্তত ৫ ফুট নিচ থেকে শুরু হবে। তাহলে গর্ত খুঁড়ে ভেতরে ঢুকতে পারবে না শজারু।
তিনি বলেন, এ ছাড়া প্রাকৃতিক প্রতিরোধক যেমন—আলো বা শব্দের সেনসর ব্যবহার করে প্রাণী তাড়ানোর ব্যবস্থাও কার্যকর হতে পারে। শজারুদের নিরাপদ বাসস্থান তৈরি করা ‘ফসল এবং প্রাণী’ উভয়ের জন্যই জরুরি বলে মনে করেন মুসকান।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনও এই সমস্যার অন্যতম একটি কারণ। আবহাওয়ার চক্র বদলে যাওয়ায় শজারুর প্রাকৃতিক খাদ্য হ্রাস পেয়েছে। আগে শীতে তারা ঘুমিয়ে থাকত, কিন্তু এখন তেমন শীত না পড়ায় শীতনিদ্রায় যায় না, বরং সক্রিয় থাকে। ফলে তারা ক্ষতিও বেশি করছে। আর একসময় যেসব বন্য প্রাণী—চিতা, বন্য কুকুর—শজারুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখত, বন ধ্বংস আর মানুষে হস্তক্ষেপের কারণে এখন তাদের সংখ্যাও কমে গেছে।
তাহলে শজারুর হুমকি ঠেকানোর কি আর কোনো উপায় নেই? আছে! স্থানীয় কৃষি ও বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা এই হুমকি ঠেকাতে নানা উপায় খোঁজার চেষ্টা করছেন। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ জহির আহমেদ বলেন, ‘বন্য কুকুরের মতো প্রাকৃতিক শিকারি প্রাণী নিধন বন্ধ করে তাদের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতে গৃহপালিত পশু ও মানুষের জন্যও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, যা এড়ানোর উপায় তেমন নেই। অনেকে বেড়া ও ফাঁদ পাতার কথা বলছেন। কিন্তু ইলেকট্রিক বেড়া ছাড়া অন্য কোনো বেড়া এখানে তেমন কার্যকর হবে না। আবার ইলেকট্রিক বেড়া অনেকের জন্য ব্যয়বহুল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত সমাধান হতে পারে, শজারুগুলোকে ধরে অন্যত্র তাদের বাসস্থান তৈরি কের দেওয়া।’
জহির আহমেদ আরও বলেন, ‘মাঠের চারপাশে আফিম গাছ বা করলা জাতীয় উদ্ভিদ লাগানো যেতে পারে, যার গন্ধ শজারুরা সহ্য করতে পারে না। এ ছাড়া, গোলমরিচের জলীয় দ্রবণ স্প্রে করাও সাহায্য করতে পারে, যদি তা ফসলে ক্ষতি না করে।’
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির ওপর চাপ বাড়ছে। এরই মধ্যে এই দাবিতে দেশটির ৯টি রাজনৈতিক দলের ২২০ জন এমপি প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
২ মিনিট আগেইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দাদের জন্য আরবি ভাষা ও ইসলামিক জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মূলত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গোয়েন্দা ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গোয়েন্দা শাখার সব সৈনিক ও কর্মকর্তার জন্য আরবি ভাষা এবং ইসলামিক স্টাডিজ প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছে।
২০ মিনিট আগেঘরে-বাইরে চাপের মুখে থাকলেও লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো ইসরায়েলে ‘এক টনও’ কয়লা রপ্তানি না করা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অটল। গত বৃহস্পতিবার তিনি এই অবস্থান ব্যক্ত করেন। তিনি এমন এক সময়ে এই নির্দেশ দিলেন, যখন ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় লাখো মানুষ দিনের পর দিন না খেয়ে আছে।
১ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল আরোপিত দুর্ভিক্ষের ছবি যখন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করছে, তখন ভারত ও ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা সম্পর্ক আরও গভীর ও জোরদার করার অঙ্গীকার করেছেন। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে ৫৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অনেক আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থা...
১ ঘণ্টা আগে