Ajker Patrika

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আরও স্পষ্ট বিরোধী ঐক্যের ফাটল 

কলকাতা প্রতিনিধি
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আরও স্পষ্ট বিরোধী ঐক্যের ফাটল 

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর ঐক্যে বড় ধরনের ফাটল ধরাতে সক্ষম হয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গণনার পর ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিরোধী শিবিরের অন্তত ১৭ জন সাংসদ এবং ১২৫ জন বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ৬ আগস্ট উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও বিরোধী শিবিরের তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীদের সম্মিলিত প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে ভোট না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। 

তৃণমূলের এমন ঘোষণায় দলটির সঙ্গে কংগ্রেসসহ অন্য দলগুলোর সমঝোতার পথ আরও জটিল হয়ে উঠছে। এমনকি, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে বিরোধীদের জোট গঠনের সম্ভাবনার আশায়ও পানি ঢেলে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেছে, ‘লোকসভা নির্বাচনের পর জোট গঠনের কথা ভাববে তাঁর দল।’ তবে কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো নির্বাচনের আগেই জোট গঠনে আগ্রহী। 

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু ৬৪ শতাংশ ভোট পেয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। বিরোধীদের প্রার্থী যশোবন্ত সিং পান ৩৬ শতাংশ ভোট। কিন্তু বিরোধী দলগুলোর ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যশোবন্তের আরও ভোট পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ক্রস ভোটের পাশাপাশি অনেক দলই কথা রাখেনি। 

এদিকে, এমন কথা না রাখা এবং ক্রস ভোট দেওয়ায় ফলাফল প্রকাশের পর শুরু হয়েছে দোষারোপের রাজনীতি। শুক্রবার কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস সুবিধাবাদী রাজনীতি করছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাত রয়েছে তৃণমূলের।’ 

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কংগ্রেসের বহু জনপ্রতিনিধি দলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে দ্রৌপদীকে ভোট দিয়েছেন। এ জন্য মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং আসামের হিমন্ত বিশ্বশর্মা তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। 

তৃণমূলের প্রতি অভিযোগের তীর দাগলেও দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিরোধীদের অনৈক্যের জন্য দায়ী করেছেন কংগ্রেসকেই। তাঁর অভিযোগ, ‘উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূলের মতামত না নিয়েই প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। তাই তাঁরা কাউকেই সমর্থন করবেন না।’ 

বিরোধীদের অনৈক্যের মধ্যেই শুক্রবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘দ্রৌপদী মুর্মুর জয়ে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়েছে।’ আগামী ২৫ জুলাই ভারতের প্রথম আদিবাসী নারী হিসেবে শপথ নেবেন দ্রৌপদী। আর ৬ আগস্ট জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন নতুন উপরাষ্ট্রপতি। তৃণমূল ভোটদানে বিরত থাকবে বলে মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করায় বিজেপি প্রার্থী জগদীপ ধনকরের জয় প্রায় নিশ্চিত। 

কংগ্রেসের অভিযোগ, জগদীপের জয় নিশ্চিত করতেই তৃণমূল ভোট না দেওয়ার নাটক করছে। তৃণমূল অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে কোনো প্রার্থীকেই ভোট দেবে না বলে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই ঘোষণার ফলে বিরোধী ঐক্যে ফাটল আরও চওড়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে এর সুবিধা পেতে পারে বিজেপি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত