Ajker Patrika

কলকাতায় বহুতল ভবন ধসে নিহত ২ 

কলকাতা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪, ১৬: ০৮
Thumbnail image

কলকাতার বন্দর এলাকা গার্ডেনরিচে এক ভয়াবহ ভবনধসের ঘটনায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার কিছু পরে গার্ডেনরিচ এলাকার হাজারি মোল্লা বাগান এলাকায় ৫১৩/৩ ব্যানার্জিপাড়া লেনে একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবন ধসে পড়লে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, সর্বশেষ খবর অনুসারে, এখন পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। নিহতরা হলেন সামা বেগম (৪৭) ও হাসিনা খাতুন (৫৫)। আহতদের স্থানীয় নার্সিংহোম ও কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্মাণাধীন বাড়িটিতে কোনো ব্যক্তি না থাকায় সেখানে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু বহুতল ভবনটি পাশের ঝুপড়িতে ভেঙে পড়ায় সেখানে বসবাসকারী বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু হলেও তা ছিল ধীর গতিতে। তবে কিছুক্ষণ পরেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েন। তিনি যাওয়ার পর রাত ৩টার দিকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। এ ছাড়া দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর রাস্তা বেশ সংকীর্ণ হওয়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও দমকল বাহিনীর পৌঁছতে বেশ কিছুটা সময়ও লেগে যায়।

স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতে এলাকাবাসী বিকট শব্দ শুনতে পান। নিকটস্থ এলাকায় যেন ভূমিকম্প ঘটে যায়। নিমেষের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বহুতলের একাংশ। বালি-সিমেন্টের ধুলোর ঝড় বইতে থাকে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। কংক্রিটের চাঁই ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। সেই ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ আটকে আছেন কি না তার খোঁজ চলছে এখনো। ভবনটির পাশে থাকা ঝুপড়ি ঘরগুলোতে মোট কতজন ছিলেন তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কলকাতার বন্দর এলাকার এই গার্ডেনরিচের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন ধরেই বেআইনি নির্মাণকাজ চলছে। গতকালের ভেঙে পড়া এই বহুতল ভবন তৈরির কাজ শুরুর পরপরই আশপাশের ঝুপড়ির বাসিন্দারা কাজ বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সেই অনুরোধে কর্ণপাত করেননি ভবনমালিক।

এদিকে এই দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন কলকাতার মেয়র ও ওই এলাকার বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম। তিনি মৃতদের প্রতি পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১ লাখ রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।

গত রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। আজ সোমবার সকালে মেয়র জানান, ধ্বংসাবশেষে এখনো চাপা পড়ে আছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে ৭ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন উদ্ধারকারীরা। তাঁদের পানি ও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

কলকাতার মেয়র আরও জানিয়েছেন, বহুতল ভবনটি বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হচ্ছিল ও এই ভবন নির্মাণের ঠিকাদারকেও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত