ফয়সাল হাসান
ভারতে নতুন বছর শুরু হয়েছিল দেশটির মুসলিমদের ওপর বিকৃত আক্রমণের মধ্য দিয়ে। জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনই ‘দাসী হিসেবে বিক্রির জন্য’ শতাধিক ভারতীয় মুসলিম নারীর ছবি আপলোড করা হয় ‘বুল্লি বাই’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে। সেখানে টার্গেট করা হয়েছিল বিশিষ্ট সাংবাদিক, অভিনেত্রী ও মানবাধিকার কর্মীদেরও।
রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সক্রিয় মুসলিম নারীদের মুখ বন্ধ করার এমন ঘৃণ্য প্রচেষ্টা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ করেছে ভারতের ২০ কোটি জনসংখ্যার শক্তিশালী মুসলিম সম্প্রদায়কে। যদিও এ ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সরিয়ে নেওয়া হয় বিতর্কিত ওই অ্যাপ। গ্রেপ্তারও করা হয় ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে।
কিন্তু এটি ছিল ভারতে ইসলামোফোবিয়ার সর্বশেষ একটি উদাহরণ মাত্র। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং কলামিস্ট অপূর্বানন্দ জানান, ২০২১ সালের শেষ দিনে; অর্থাৎ, গত ৩১ ডিসেম্বর ইসলামোফোবিক একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করে ভারতের শীর্ষস্থানীয় এক জাতীয় দৈনিক, যার অর্থায়ন করেছিল ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের সরকার। এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে, উত্তর ভারতের হরিদ্বার শহরে অনুষ্ঠিত তিন দিনের এক ধর্মীয় সম্মেলনে প্রকাশ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন উগ্র ডানপন্থী হিন্দু নেতারা।
আল-জাজিরায় প্রকাশিত এক কলামে অপূর্বানন্দ লিখেছেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুটি জনসভায় অংশ নিয়ে দেশটির অতীত এবং বর্তমান সময়ে ‘সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় চরমপন্থার’ সঙ্গে মুসলিমদের জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে ভাষণ দেন। এ সময় মুসলমানদের তাদের ‘পূর্বপুরুষদের’ দ্বারা সংঘটিত কথিত অপরাধের জন্য দায়ী করা এবং শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে উত্তর প্রদেশের (ইউপি) মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিবিদ যোগী আদিত্যনাথ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ‘৮০ বনাম ২০ শতাংশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রাজ্যটির ৮০ শতাংশ মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং ২০ শতাংশ মুসলিম। তবে নির্বাচনে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিমদের লড়াইয়ের কথা সরাসরি উল্লেখ করেননি ইউপির মুখ্যমন্ত্রী।
অধ্যাপক অপূর্বানন্দের মতে, গত বছর ভারতে নির্বাচিত এবং অনির্বাচিত অনেক নেতার মুসলিমবিরোধী প্রচারকে সমর্থন দিয়েছে দেশটির ইসলামোফোবিক অনেক মিডিয়া। সেই সঙ্গে অনেক রাজ্যে পাস বা প্রস্তাবিত হয়েছে মুসলিমবিরোধী বিভিন্ন আইন ও নীতি।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হুমকির মুখে রয়েছেন ভারতের মুসলমানেরা। কিন্তু গত এক বছরে এই সম্প্রদায়ের প্রতি বৈরিতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। উগ্র ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমর্থন এবং উৎসাহ পেয়ে মুসলিমদের কাছে এটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, নিজ দেশেই তাঁদের আর সমান নাগরিক হিসেবে দেখা হয় না। মুসলিমদের খাদ্যাভ্যাসের বিরোধিতা এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেও আক্রমণ করা হচ্ছে। মুসলিম নারীরা শুধু মুসলিম বলেই অপমানিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হুমকির মুখে তাঁদের জীবন-জীবিকাও।
আক্রমণের সম্মুখীন খ্রিষ্টানরাও
অপূর্বানন্দ তাঁর কলামে লিখেছেন, মুসলিমরাই একমাত্র ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, যারা ভারতে ক্রমবর্ধমান উগ্র ডানপন্থীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। ভারতজুড়ে একই রকম ঘৃণা ও সহিংসতার সম্মুখীন হচ্ছেন খ্রিষ্টানরাও। একের পর এক রাজ্যে ধর্মান্তর নিষিদ্ধ করার আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। দরিদ্র হিন্দু ও আদিবাসীদের ‘জোর করে’ ধর্মান্তরিত করার জন্য খ্রিষ্টানদের দায়ী করা হচ্ছে, যা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে। ফলে চার্চে হামলা এবং যাজকদের মারধর করার ঘটনাও বাড়ছে।
প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক জন দয়াল সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, গত মাসে ভারতের অন্তত ১৬টি শহরে বড় দিনের উৎসবে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি থেকে শুরু করে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ঘটেছে এমন ঘটনা।
বিজেপির নেতৃত্বে ভারত বিশ্বের মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের জন্য সবচেয়ে ‘বিপজ্জনক’ দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মনে করেন অপূর্বানন্দ। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, ভারতে প্রতিনিয়ত শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। ২০২১ সাল ছিল ভারতের মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের জন্য ভয়, সহিংসতা ও হয়রানির একটি বছর। এবং ‘বুল্লি বাই’ কাণ্ডের পর আশঙ্কা রয়েছে, নতুন বছরেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হিন্দু উগ্র ডানপন্থীদের আক্রমণ অব্যাহত থাকার।
তবে ভারতের পরিচয় ও আত্মার লড়াই এখনো শেষ হয়নি। দেশটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠের সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধও গড়ে উঠছে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী অনেকেই ভারতের জাতীয় ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয় রক্ষার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন।
সামনের পথ
ভারতের মুসলিমরা এখন আর তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না জানিয়ে অপূর্বানন্দ বলেন, ইতিমধ্যে মুসলিম অনেক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সারা দেশে ইসলামফোবিক নানা ঘটনা, হামলা নথিভুক্ত করা শুরু করেছেন এবং রাষ্ট্রের কাছে জবাবদিহি দাবি করছেন। তাঁদের এ প্রচেষ্টার কারণেই, ক্রমবর্ধমানভাবে মুসলিমরা যে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন, তা আর উপেক্ষা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া ভারতের নেতৃস্থানীয় কিছু প্রতিষ্ঠান, যারা এখনো দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান সমুন্নত রেখেছে, তারা সংখ্যালঘুদের ওপর সংখ্যাগরিষ্ঠের নিপীড়ন ও সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, হরিদ্বারে মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিংসা এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানো ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের জন্য একটি আবেদনের দ্রুত শুনানি করা হবে। এ এমনকি গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ত্রিপুরায় মুসলিমবিরোধী সহিংসতার ঘটনা সম্পর্কে কথা বলেছেন বা লিখেছেন—এমন মুসলিমদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় অতীতে দীর্ঘ সময় ধরে ভারতে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করেছে এবং সব পক্ষের সমর্থন পেলে আবারও আগের সেই জায়গায় ফিরে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক ও কলামিস্ট অপূর্বানন্দ।
ভারতে নতুন বছর শুরু হয়েছিল দেশটির মুসলিমদের ওপর বিকৃত আক্রমণের মধ্য দিয়ে। জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনই ‘দাসী হিসেবে বিক্রির জন্য’ শতাধিক ভারতীয় মুসলিম নারীর ছবি আপলোড করা হয় ‘বুল্লি বাই’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে। সেখানে টার্গেট করা হয়েছিল বিশিষ্ট সাংবাদিক, অভিনেত্রী ও মানবাধিকার কর্মীদেরও।
রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে সক্রিয় মুসলিম নারীদের মুখ বন্ধ করার এমন ঘৃণ্য প্রচেষ্টা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ করেছে ভারতের ২০ কোটি জনসংখ্যার শক্তিশালী মুসলিম সম্প্রদায়কে। যদিও এ ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সরিয়ে নেওয়া হয় বিতর্কিত ওই অ্যাপ। গ্রেপ্তারও করা হয় ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে।
কিন্তু এটি ছিল ভারতে ইসলামোফোবিয়ার সর্বশেষ একটি উদাহরণ মাত্র। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং কলামিস্ট অপূর্বানন্দ জানান, ২০২১ সালের শেষ দিনে; অর্থাৎ, গত ৩১ ডিসেম্বর ইসলামোফোবিক একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করে ভারতের শীর্ষস্থানীয় এক জাতীয় দৈনিক, যার অর্থায়ন করেছিল ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের সরকার। এর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে, উত্তর ভারতের হরিদ্বার শহরে অনুষ্ঠিত তিন দিনের এক ধর্মীয় সম্মেলনে প্রকাশ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন উগ্র ডানপন্থী হিন্দু নেতারা।
আল-জাজিরায় প্রকাশিত এক কলামে অপূর্বানন্দ লিখেছেন, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুটি জনসভায় অংশ নিয়ে দেশটির অতীত এবং বর্তমান সময়ে ‘সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় চরমপন্থার’ সঙ্গে মুসলিমদের জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়ে ভাষণ দেন। এ সময় মুসলমানদের তাদের ‘পূর্বপুরুষদের’ দ্বারা সংঘটিত কথিত অপরাধের জন্য দায়ী করা এবং শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে উত্তর প্রদেশের (ইউপি) মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিবিদ যোগী আদিত্যনাথ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ‘৮০ বনাম ২০ শতাংশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রাজ্যটির ৮০ শতাংশ মানুষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং ২০ শতাংশ মুসলিম। তবে নির্বাচনে হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিমদের লড়াইয়ের কথা সরাসরি উল্লেখ করেননি ইউপির মুখ্যমন্ত্রী।
অধ্যাপক অপূর্বানন্দের মতে, গত বছর ভারতে নির্বাচিত এবং অনির্বাচিত অনেক নেতার মুসলিমবিরোধী প্রচারকে সমর্থন দিয়েছে দেশটির ইসলামোফোবিক অনেক মিডিয়া। সেই সঙ্গে অনেক রাজ্যে পাস বা প্রস্তাবিত হয়েছে মুসলিমবিরোধী বিভিন্ন আইন ও নীতি।
অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই হুমকির মুখে রয়েছেন ভারতের মুসলমানেরা। কিন্তু গত এক বছরে এই সম্প্রদায়ের প্রতি বৈরিতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। উগ্র ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সমর্থন এবং উৎসাহ পেয়ে মুসলিমদের কাছে এটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, নিজ দেশেই তাঁদের আর সমান নাগরিক হিসেবে দেখা হয় না। মুসলিমদের খাদ্যাভ্যাসের বিরোধিতা এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেও আক্রমণ করা হচ্ছে। মুসলিম নারীরা শুধু মুসলিম বলেই অপমানিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। হুমকির মুখে তাঁদের জীবন-জীবিকাও।
আক্রমণের সম্মুখীন খ্রিষ্টানরাও
অপূর্বানন্দ তাঁর কলামে লিখেছেন, মুসলিমরাই একমাত্র ধর্মীয় সংখ্যালঘু নয়, যারা ভারতে ক্রমবর্ধমান উগ্র ডানপন্থীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। ভারতজুড়ে একই রকম ঘৃণা ও সহিংসতার সম্মুখীন হচ্ছেন খ্রিষ্টানরাও। একের পর এক রাজ্যে ধর্মান্তর নিষিদ্ধ করার আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। দরিদ্র হিন্দু ও আদিবাসীদের ‘জোর করে’ ধর্মান্তরিত করার জন্য খ্রিষ্টানদের দায়ী করা হচ্ছে, যা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে। ফলে চার্চে হামলা এবং যাজকদের মারধর করার ঘটনাও বাড়ছে।
প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক জন দয়াল সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, গত মাসে ভারতের অন্তত ১৬টি শহরে বড় দিনের উৎসবে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি থেকে শুরু করে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ঘটেছে এমন ঘটনা।
বিজেপির নেতৃত্বে ভারত বিশ্বের মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের জন্য সবচেয়ে ‘বিপজ্জনক’ দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মনে করেন অপূর্বানন্দ। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, ভারতে প্রতিনিয়ত শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন সংখ্যালঘুরা। ২০২১ সাল ছিল ভারতের মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের জন্য ভয়, সহিংসতা ও হয়রানির একটি বছর। এবং ‘বুল্লি বাই’ কাণ্ডের পর আশঙ্কা রয়েছে, নতুন বছরেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হিন্দু উগ্র ডানপন্থীদের আক্রমণ অব্যাহত থাকার।
তবে ভারতের পরিচয় ও আত্মার লড়াই এখনো শেষ হয়নি। দেশটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠের সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে প্রতিরোধও গড়ে উঠছে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী অনেকেই ভারতের জাতীয় ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয় রক্ষার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন।
সামনের পথ
ভারতের মুসলিমরা এখন আর তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না জানিয়ে অপূর্বানন্দ বলেন, ইতিমধ্যে মুসলিম অনেক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সারা দেশে ইসলামফোবিক নানা ঘটনা, হামলা নথিভুক্ত করা শুরু করেছেন এবং রাষ্ট্রের কাছে জবাবদিহি দাবি করছেন। তাঁদের এ প্রচেষ্টার কারণেই, ক্রমবর্ধমানভাবে মুসলিমরা যে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন, তা আর উপেক্ষা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া ভারতের নেতৃস্থানীয় কিছু প্রতিষ্ঠান, যারা এখনো দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান সমুন্নত রেখেছে, তারা সংখ্যালঘুদের ওপর সংখ্যাগরিষ্ঠের নিপীড়ন ও সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, হরিদ্বারে মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিংসা এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানো ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের জন্য একটি আবেদনের দ্রুত শুনানি করা হবে। এ এমনকি গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ত্রিপুরায় মুসলিমবিরোধী সহিংসতার ঘটনা সম্পর্কে কথা বলেছেন বা লিখেছেন—এমন মুসলিমদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় অতীতে দীর্ঘ সময় ধরে ভারতে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করেছে এবং সব পক্ষের সমর্থন পেলে আবারও আগের সেই জায়গায় ফিরে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক ও কলামিস্ট অপূর্বানন্দ।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে কোকা-কোলা বর্জনের ঢেউ উঠেছিল। সেই ঢেউয়ের ধাক্কা লেগেছে এবার ইউরোপের দেশ ডেনমার্কেও। দেশটিতে কোকা-কোলা বাজারজাতকারী কোম্পানি কার্লসবার্গ জানিয়েছে, ডেনিশ ভোক্তারা কোকা-কোলা বর্জন করছেন।
৪ ঘণ্টা আগেগাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে ইহুদি ও ইসলামবিদ্বেষ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত দুটি টাস্কফোর্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এ তথ্য।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রেমিকের ফোনে অন্য নারীর বার্তা দেখার পর তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছেন এক মার্কিন তরুণী। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে। ম্যাডিসন রুকার্ট নামে ২৩ বছরের ওই তরুণী ঘুমের মধ্যেই তাঁর প্রেমিক জোনাথন মিলারকে গুলি করে হত্যা করেন। এই ঘটনায় ম্যাডিসনের ৩৫ বছরের সাজা হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগেভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার বিবদমান কাশ্মীর সীমান্তের (নিয়ন্ত্রণ রেখা—লাইন অব কন্ট্রোল বা এলওসি) কাছে টহল দিচ্ছিল ভারতীয় রাফাল যুদ্ধবিমান। সেই বিমানগুলো ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম পিটিভির এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে