Ajker Patrika

স্কটল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নিকোলা স্টার্জনের আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা

স্কটল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নিকোলা স্টার্জনের আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নিকোলা স্টার্জন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আট বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর আজ বুধবার হঠাৎ করেই তিনি এ ঘোষণা দেন।

এডিনবার্গে এক সংবাদ সম্মেলনে স্কটল্যান্ড ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) প্রধান স্টার্জন এ ঘোষণা দেন। তবে এসএনপির নতুন নেতা নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি স্বপদে বহাল থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্টার্জন বলেন, ‘আমি জানি আমার পদত্যাগ করার সময় এখনই। এটি আমার, দলের এবং দেশের জন্য মঙ্গলকর। যদিও হঠাৎ করেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া কিছুটা সন্দেহজনক। তবে কারও চাপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে স্টার্জনের টানা পোড়ন চলছিল। পাশাপাশি স্কটল্যান্ডে ট্রান্সজেণ্ডারদের (লিঙ্গ রূপান্তরকামী) ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই লিঙ্গ পরিবর্তনের আইন পাশে ওয়েস্টমিনস্টারের বাধা দেওয়া নিয়েও উত্তেজনা চলছিল।

সংবাদ সম্মেলনে স্টার্জন আরও বলেন, ‘পদত্যাগের সিদ্ধান্তটি গভীর এবং দীর্ঘমেয়াদি মূল্যায়ন থেকে এসেছে। আমি দাপ্তরিক কাজে আর সম্পূর্ণ শক্তি দিতে পারছি না। অনেক লড়েছি। যদিও কয়েক সপ্তাহ ধরে দোদুল্যমান অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম।’

‘প্রধানমন্ত্রিত্ব করতে হলে নিজের সবটুকু সময় দিতে হয়। ব্যক্তিগত জীবন বলে আর কিছু থাকে না। বন্ধু–বান্ধবের সঙ্গে একটু কফি খাওয়া বা নিজে একটু হাঁটতে বের হওয়াও যায় না। এত দিন আমি এক কঠিন জীবন যাপন করেছি।’ বলেন স্টার্জন।

স্টার্জনের হঠাৎ করে এ ঘোষণা দেওয়ায় নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু সম্প্রতি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন– পরবর্তী ব্রিটিশ সাধারণ নির্বাচনকে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার গণভোট হিসেবে প্রতিষ্ঠার। 

এমন সময় স্টার্জনের পদত্যাগের ঘোষণা স্কটল্যান্ডের রাজনীতিতে এক বড় ধাক্কা। এতে সামনের নির্বাচনে এসএনপি দলের ভোটারও কমে যাবে। স্বাধীনতা আন্দোলন স্তিমিত হওয়াসহ গণভোটেরও আর কোনো সম্ভাবনা নেই। 

ট্রান্সজেণ্ডারদের লিঙ্গ পরিবর্তনের বিলটি প্রবর্তনের চেষ্টার পর থেকেই স্টার্জন দলে সমর্থন হারান। কিছু জরিপে দেখা গেছে, স্কটল্যান্ডের বেশির ভাগ মানুষ বিলটি বাতিল করতে ব্রিটেন সরকারের ক্ষমতা ব্যবহার করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। এ ছাড়া তাঁর স্বামী গত বছরের শেষের দিকে একটি কেলেঙ্কারিতে ধরা পড়েছিলেন। তখন রিপোর্ট করা হয়েছিল যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ১ লাখ পাউন্ড ঋণ করেছিলেন। 

সংক্ষেপে, আট বছর ধরে স্কটল্যান্ডের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার ও স্বাধীনতা ইস্যু দিয়ে ব্রিটেন সরকারকে চাপে রেখেছিলেন স্টার্জন। তবে শেষমেশ ব্যর্থতার কলঙ্ক গায়ে লাগার আগেই তিনি পদত্যাগের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে পারেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত