Ajker Patrika

ইউক্রেনে অস্ত্রচুক্তির ৪ কোটি ডলার কর্মকর্তাদের পকেটে

আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭: ১৬
ইউক্রেনে অস্ত্রচুক্তির ৪ কোটি ডলার কর্মকর্তাদের পকেটে

কৌশলগত কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে নানাভাবে সামরিক সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের দেশগুলো। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরু করার পর পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তি করেছে ইউক্রেন। তবে শিগগিরই এসব অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে।

সর্বশেষ ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবা (এসবিইউ) বলেছে, তারা প্রায় চার কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সামরিক অস্ত্র ক্রয়ে দুর্নীতি উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৪৩৯ কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঁচজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং একটি অস্ত্র সরবরাহকারী সংস্থার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকারি সংস্থাটি।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষেবার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা ২০২২ সালের আগস্টে ১ লাখ মর্টার শেল কেনার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। এর জন্য অগ্রিম টাকাও দেওয়া হয়েছিল। এর কিছু তহবিল বিদেশে স্থানান্তরিত হয়েছিল। কিন্তু কোনো অস্ত্র আসেনি।

দুর্নীতি ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের পথে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে তাঁর প্রধান অগ্রাধিকার উল্লেখ করেছিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েই বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই ইউক্রেনে অর্থ ও সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছেন। তাঁর মতে, ইউরোপের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ইউক্রেন।

সর্বশেষ এমন সময় সরকারি সংস্থা দুর্নীতি উন্মোচনের খবরটি দিল যখন, রিপাবলিকানরা ইউক্রেনে আরও সাহায্য পাঠানোর জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রচেষ্টাকে পিছিয়ে দিয়েছেন।

গত আগস্টে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সামরিক নিয়োগের দায়িত্বে থাকা সব কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন। এই দুর্নীতি ও অনিয়মের সমাপ্তি ঘটাতে কিছু কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়ার অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। 

বার্লিনভিত্তিক প্রচার ও গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ২০২২ সালের দুর্নীতি সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ইউক্রেনের অবস্থান ছিল ১১৬। 

এসবিইউ বলছে, তদন্তে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং অস্ত্র সরবরাহকারী লভিভ আর্সেনালের ব্যবস্থাপকদের যোগসাজশ উন্মোচন করা হয়েছে। তাঁরা মর্টার শেল কেনার জন্য প্রায় ১৫০ কোটি রিভনিয়ার চুরি করেছিলেন। তদন্ত অনুসারে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক ও বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং অনুমোদিত সংস্থাগুলোর প্রধানেরা এই অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত। 

এসবিইউ আরও বলেছে, রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার ছয় মাস পর শেলগুলো কেনার জন্য চুক্তিতে হলেও, একটি আর্টিলারি শেলও এখনো দেশে আসেনি। 

এদিকে সন্দেহভাজনদের মধ্যে একজন ইউক্রেন ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় আটক হয়েছেন। তিনি বর্তমানে কারা হেফাজতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে এসবিইউ। 

ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল বলেছেন, চুরি করা তহবিল জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিরক্ষা বাজেটে এটি ফেরত দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত